• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২১, ১১:৪১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৩, ২০২১, ১১:৪১ এএম

সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে পাইন্ন্যাগুলা

সংরক্ষণের উদ্যোগ না থাকায় হারিয়ে যাচ্ছে পাইন্ন্যাগুলা

লুকলুকি বা পাইন্ন্যাগুলা একটি মিষ্টি ও সুস্বাদু দেশীয় ফল। দেখতে আঙুর ফলের মতো। এ ফলে রয়েছে প্রচুর টসটসে রস। তাই স্থানীয় ভাষায় এর নাম ‘পাইন্ন্যাগুলা’।

ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম Fiacoartia Gargomaj. ইংরেজিতে একে বলে Coffee Plant. পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া ফলটি অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। পাকা পাইন্ন্যাগুলা ফল লাল টুকটুকে। তবে কিছুটা বেগুনি রঙেরও ছোপ রয়েছে। এর বর্ণ ও আকার বড় আঙুর ফলের মতোও বলা যায়। ভেতরে ৫-৬টি খুবই ছোট বীজ থাকে। যিনি একবার এর স্বাদ নিয়েছেন, তিনি বার বার খেতে চাইবেন। পাহাড়ি এলাকার শিশু ও নারীদের কাছে পাইন্ন্যাগুলা খুবই প্রিয় খাবার। তবে সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ না থাকায় পাহাড়ি এলাকা থেখে এ ফল গাছ আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।  

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, পাইন্ন্যাগুলা ফলে রয়েছে শতকরা ৬০ভাগ আয়রন। সালফার ফসফেট ছাড়াও ১০ ভাগ রয়েছে ভিটামিন ‘সি’। অন্যান্য উপাদানও রয়েছে সমভাবে। পাইন্ন্যাগুলা ফল খেলে হজমশক্তি ও লিভারের কার্যকরিতা বৃদ্ধি পায় এবং হৃদরোগীদের জন্য এটি উপকারী ভেষজ ঔষধের কাজ করে। তাছাড়া এর পাতা ও ফল ডায়রিয়া রোগের প্রতিরোধক। শুকনো পাতা ব্রংকাইটিস রোগের জন্য বিশেষ উপকারী। এর শিকড় দাঁতের ব্যাথা নিরাময়ে কাজ করে। 

মূলত পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাড়াছড়ি ছাড়াও চট্টগ্রামের পটিয়া, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশের পাহাড়ি ভূমিতে প্রাকৃতিকভাবে এ ফলের গাছ জন্মায়। বছরের মে মাসের শুরুতে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। জুলাই মাসে পাইন্ন্যাগুলা ফল পাকা শুরু হয়। তখন এখানের বিভিন্ন হাটবাজারে সচরাচর বিক্রি হয়ে থাকে এই ফল। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এই ফল চাষে এখনো কেউ এগিয়ে আসেনি। মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীরা বাগান মালিকদের কাছ থেকে ফলগুলো সংগ্রহ করে দেশের সমতল অঞ্চলে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। তবে কিছু কিছু বাগান মালিক নিজেরাই হাট বাজারে পাইন্ন্যাগুলা বিক্রি করেন। বর্তমানে এ ফল বাজারে প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলতি মৌসুমে সচরাচর বাজারে দেখা যায়। 

পার্বত্য লামা পৌর এলাকার ফুটেরঝিরি, নয়াপাড়া, মধুঝিরি, সাবেক বিলছড়ি ও চেয়ারম্যান পাড়াসহ বিভিন্ন পাহাড় সরেজমিন ঘুরে প্রায় অর্ধশত পাইন্ন্যাগুলা গাছ দেখা যায়। এছাড়া উপজেলার রুপসীপাড়া, গজালিয়া, লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, আজিজনগর ও সরই ইউনিয়নের বিভিন্ন পাহাড়ে সহস্রাধিক পাইন্ন্যাগুলা গাছে রয়েছে। এসব গাছে প্রচুর পাইন্ন্যাগুলা ধরে থাকে। 

লামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সানজিদা বিনতে ছালাম বলেন,  লুকলুকি বা পাইন্ন্যাগুলা পাহাড়ি অঞ্চলেই জন্মে। এটি একটি উৎকৃষ্ট ভেষজ ফল। এর ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে। সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে পতিত পাহাড়গুলোতে বাণিজ্যিকভাবে পাইন্ন্যাগুলা চাষ করা গেলে ভেষজ উদ্ভিদের চাহিদা প‍ূরণের পাশাপাশি দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ’

জাগরণ/এমআর