• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২১, ০১:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩১, ২০২১, ০১:৪৫ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েও উঠতে পারেননি ১২ ভূমিহীন

প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েও উঠতে পারেননি ১২ ভূমিহীন

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) সংবাদদাতা
নেত্রকোনার পূর্বধলায় উদ্বোধনের ছয় মাস পার হলেও স্বপ্নের ঘরে বসবাস শুরু করতে পারেনি উপজেলার বিশকাকুনী ইউনিয়নের ধলা গ্রামে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১২টি ভূমিহীন পরিবার। চলতি বছর ২৩ জানুয়ারি পূর্বধলায় ভূমিহীনদের ৫৩টি ঘর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উচ্ছ্বাস আর নতুন স্বপ্ন নিয়ে ভূমিহীনদের নতুন ঠিকানায় ঠাঁই হলেও ধলা গ্রামে ঘটেছে এর ব্যতিক্রম ঘটনা। এরই মধ্যে কেউ আবার মারাও গেছেন।

গত ৪/৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন সংবাদ ও সামাজিক মাধ্যমে ধলা গ্রামের ঘরগুলোর কাজের নিন্মমান ও ঘরগুলোতে ফাটল দেখা দিলে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ৭ ফেব্রুয়ারি ঘরগুলো পরিদর্শনে আসেন জেলা প্রশাসনক কাজি মো. আব্দুর রহমান। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ঘরগুলো নতুন মাটি দিয়ে ভরাট করার কারণে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দেয়ালের কিছু অংশ ফেটে যাওয়ায় ভোক্তভোগী পরিবারগুলোকে ঘরে না থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বসবাস উপযোগী করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের কোন পরিবারকে ঘরে বসবাস করেন না। উদ্বোধনের পর সুবিধাভোগীরা ঘরগুলোতে উঠলে ফাটল দেখা দেয়। ২ সপ্তাহ পর ঘরেগুলোতে জেলা প্রশাসকের নিষেধাজ্ঞা আসে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসনকে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিলেও ছয় মাস অতিবাহিত হলেও উপকারভোগীরা এখনও ঘরগুলোতে উঠতে পারেনি। বিদ্যুতের খুঁটি থাকলেও ঘরগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট ইউপি ভূমি কর্মকর্তা ঘরের জমি রেজিস্ট্রি করার কথা বলে ১হাজার ২শ করে টাকা নিয়েছেন বলে জানান পরিবারগুলো।

উপকারভোগী দুদু মিয়া, মরিয়ম আক্তার, বিউটি আক্তার, ইদ্রিস মিয়া, মানিক মিয়া বলেন, নায়েব সাব আমরার কাছ থাইক্যা ঘর ঠিক করনের লাইগ্যা চাবি নিছে এহন কবে যে ঘর ঠিক অইবো তা আমরা জানিনা। এইযে ঈদ গেলো পুলাপাইন নিয়া মাইনষের বাড়িত থাইক্যা ঈদ করছি যদি নিজের ঘরে থাকতারতাম তা অইলে খুশিডা আরও বাড়ত। (ইউপি ভূমি কর্মকর্তা আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার ২শ টাকা করে নিয়েছে ঘরের জায়গা রেজিস্ট্রির কথা বলে। ঘর মেরামতের কথা বলে চাবিও নিয়ে নিয়েছে। কবে যে ঘর মেরামত হবে তা আমরা জানি না। এই যে ঈদ গেলো সন্তানদের নিয়ে পরের বাড়িতে কাটাতে হলো। এ যেন নিজেদের ঘর থাকতেও পরবাসী! যদি নিজেদের পাকা বাড়িতে পরিবার নিয়ে ঈদ করতে পারতাম তাহলে ঈদের আনন্দটাও অনেক বেড়ে যেত)।

১নং ঘরের মালিক মৃত সুমন মিয়ার পিতা আলাউদ্দিন বলেন, আমি পরের বাড়িতে থাকি, আমার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর উপহার একটি ঘর পেয়েছে। পরের বাড়িতে থেকেই ঈদের ৩য় দিন (২৪ জুলাই) মৃত্যবরণ করে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে কুলসুম বলেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ঘরগুলোতে বসবাসের উপযোগী করা হবে। বিদ্যুতিক লাইন টানানো রয়েছে গ্রাহকের আবেদন জমা হলে সংযোগ দেয়া হবে। টিউবওয়েলের পাইপ বসানো হয়েছে টিউবওয়েল লাগানো বাকি আছে। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১হাজার ২শ করে টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে।

জাগরণ/এমআর