• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২১, ০২:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৩, ২০২১, ০২:৩০ পিএম

ভালো নেই লালন আবাসনের ভূমিহীনরা

ভালো নেই লালন আবাসনের ভূমিহীনরা

ভালো নেই কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আবাসন প্রকল্পের অধিবাসীরা। নির্মাণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের অভাবে অধিকাংশ ঘরই এখন বসবাসের অযোগ্য। এসব ঘরের টিনের চালা মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। টিন গুলো ছিদ্র হয়ে দেখা যায় আকাশ। আর বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে ভিজে যায় ঘরের সবকিছু। কনকনে শীতে ভাঙা বেড়া দিয়ে হু হু করে প্রবেশ করে বাতাস। এছাড়া আবাসনের বেশির ভাগ টয়লেট ও গোসলখানা ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

জেলার কুমারখালীতে ২০০৭ সালে নির্মিত লালন আবাসন-১ ও ২, পৌর আবাসন, নন্দলালপুর আবাসন মিলে ৪টি আবাসন তৈরি করা হয়। লালন আবাসনে ৬০ টি, পৌর আবাসনে ৬০ টি, নন্দলালপুর আবাসনে ৬০ টি মোটা- ১৮০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল। বসবাসের উপযোগী না থাকায় আবাসন ঘরে বর্তমানে বসবাস করছে মাত্র ৪০টি পরিবার। ঘরগুলো ভেঙে পড়েছে, নেই যাতায়াতের ব্যবস্থা। আবাসনের চার পাশে জঙ্গল। বহিরাগতদের আনাগোনায় আবাসনে থাকা পরিবারগুলো সন্ধ্যার পর থাকে ভয়ে। এর মধ্যে যদুবয়রা আবাসন ১ নদীর ভাঙনে ভেঙে গেছে ৫ বছর পূর্বেই। এদিকে পানির অভাবে বাসিন্দারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা রবি হোসেন (৪০) বলেন, বৃষ্টির দিনে মাঠের চেয়ে আমার ঘরে পানি বেশি ওঠে। পলিথিন টাঙিয়েও বৃষ্টি ঠেকানো যায় না। মুদি দোকানি শরিফুল ইসলাম (৪৫) ৩ নম্বর ব্যারাকের ২০/৫ নম্বর ঘরে পবিবার নিয়ে বসবাস করেন।

তিনি বলেন, ঘর প্রতি তিন বান টিনের প্রয়োজন। এখানকার চা বিক্রেতা নার্গিস (৪০) ২০/৫ নম্বর ঘরে থাকেন। তিনি বলেন, শীত মৌসুমে চালার টিন বদল করা না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে যত জায়গা থেকে পানি পড়বে সেই পানি ধরার জন্য ততটি হাড়ি পাতিলও ঘরে নেই। ২১/৫ নম্বর ঘরে থাকেন নুপুর বেগম। তিনি শহর থেকে শাড়ি/কাপর কিনে এনে আবাসনে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে সংসার চালান। তার ঘরের চালা দিয়ে আকাশ দেখা যায়। তিনি বলেন, গত বর্ষায় অন্য জায়গা গিয়ে থেকেছি। টিনের যে অবস্থা, তার চেয়ে ঘরের বেড়ার অবস্থা আরও খারাপ। যখন তখন ঘরের ভেতর সাপ ঢুকে পড়ে।

বাসিন্দাদের দুর্দশা নিয়ে আবাসন প্রকল্প ২ এর সভাপতি ওহাব (৫০) বলেন, আমরা বিভিন্ন সময় আবাসনের এসব সমস্যার কথা কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনও ব্যবস্থা নেননি। অনেক সময় বিভিন্ন কর্মকর্তা এখানে পরিদর্শনে এসে সংস্কারের কথা বলে চলে যান। জরাজীর্ণ ঘরতো আছেই, এছাড়া এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে নেই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র, নেই গোরস্থান। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আমাদের শহরে গিয়ে উঠতে হয়। এখানে বসবাসরত পরিবারের কোনও সদস্য মারা গেলে দাফনের জন্য নিয়ে যেতে হয় দূরে অন্য কোন গোরস্থানে। সব মিলিয়ে বেশ দুর্দশায় আমরা বাস করছি।

এখানকার বসবাসকারীদের একটাই দাবি যেন প্রতিটি ঘরের চালের টিন পরিবর্তন করে নতুন করে চালা তৈরি এবং টয়লেট ও গোসলখানাগুলো সংস্কার করে ব্যারাকগুলো বসবাসের উপযোগী করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। যত দ্রুত সম্ভব আবাসনের ঘরগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

জাগরণ/এমআর