• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯, ০৯:০১ পিএম

ডাকাতিয়া নদীতে বিষ ঢেলে অবাধে মাছ শিকার

ডাকাতিয়া নদীতে বিষ ঢেলে অবাধে মাছ শিকার

 

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোটে ডাকাতিয়া নদীতে বিষ ঢেলে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও মাছের পোনা শিকার করা হচ্ছে অবাধে। এতে করে একদিকে মাছের বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে অন্যদিকে জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ছে। প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে বেশ কয়টি চক্র ডাকাতিয়া নদীতে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করে থাকে। এবারও একই কাজে লিপ্ত রয়েছে তারা।

শীত মৌসুমে যখন নদীর পানি কমে যায়। তখন নদীতে ছোট ছোট ঘের করে এতে বিষ ঢেলে তারা মাছ শিকার করে। এতে করে বিষক্রিয়ায় ছোট-বড় আকারের সকল মাছ মারা যাচ্ছে। ডাকাতিয়া নদীর চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোটের অংশে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের আগুনশাইল, মরকটা, চন্দ্রপুর, তারাশাইল, দুর্গাপুর, জঙ্গলপুর, জাগজুর, পন্নারা, চিওড়া ইউনিয়নের শাকতলা ও চিলপাড়া এবং নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট ইউনিয়ের শরিফপুর, রায়কোট, ঘাশিয়াল, পূর্ব ঘাঁ ঘর, পিপডডা, বামপাড়া, নারানদিয়া এলাকায় এক শ্রেণির মানুষ ডাকাতিয়ার বুকে ঘের তৈরি করে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করে। এতে করে মরছে ছোট-বড় সকল মাছ। এর সাথে মরছে বিভিন্ন প্রজাতির কিট-পতঙ্গও। শিকার করা মাছ বিক্রি হচ্ছে কুমিল্লাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন স্থানে। এ নিয়ে চক্রটির ভয়ে স্থানীয়রাও প্রতিবাদ করার সাহস পান না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, শীত মৌসুমে নদীতে পানি কমার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে শুরু হয় বিষ ঢেলে মাছ নিধনের। যার ফলে জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ছে। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে মাছ মারা চক্রটি উত্তেজিত হয়ে হামলাসহ বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখান। যার ফলে স্থানীয়রা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে থাকেন। এক বাক্যে সকলের দাবি নদীতে বিষ ঢেলে মাছ নিধন বন্ধ করে চক্রটির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টরা যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

এ বিষয়ে কনকাপৈত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাফর ইকবাল বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নয়। তবে স্থানীয় প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলে আপনাদের জানাচ্ছি।

রায়কোট ইউনিয়ন উত্তরের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। কারা এর সাথে জড়িত রয়েছে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার শাহেলা শারমিন (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা কর্মকর্তা) বলেন, খোঁজ নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে মৎস্য সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খাদিজা খাতুন বলেন, ডাকাতিয়া নদীতে বিষ প্রয়োগ করে মাছ মারার ঘটনা সত্যি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা নিয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, নদীতে বিষ ঢেলে মাছ শিকার করা অপরাধ। তবে এর সাথে যারা জড়িত রয়েছে অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি বব্যস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানাতে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দাউদ হোসেন চৌধুরীকে আকাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কেটি