• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২১, ২০১৯, ০১:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২১, ২০১৯, ০১:৩৩ পিএম

ইয়াবা ব্যবসায় ফেঁসে যাচ্ছেন এসএ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা

ইয়াবা ব্যবসায় ফেঁসে যাচ্ছেন এসএ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা
ইয়াবা- ফাইল ছবি

বাংলাদেশ আনসারের চাকুরির আড়ালে চলছিল মরন নেশা মাদক ইয়াবার ব্যবসা। দীর্ঘদিন এসএ কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং টেকনাফ থেকে ইয়াবার চালান ঢাকায় আনতো আনসার সদস্য মোরশেদ আলী ও মীর কাশেম। এই ইয়াবা পাচারের সঙ্গে এসএ পরিবহনের ৩ কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। যে কোনও সময় তাদের আইনের আওতায় আনতে পারেন র‌্যাব।

ইতোমধ্যে প্রাথমিক ভাবে তদন্তে গিয়ে র‌্যাব সদস্যরা এস এ পরিবহনের নির্বাহী পরিচালক, উত্তরা শাখার ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজারকে আটক এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাদের ২৪ ঘণ্টা আটক রেখে জিজ্ঞাসাবাদের পর মুচলেকা রেখে শর্ত সাপেক্ষে ছেড়ে দিয়েছে র‌্যাব। তবে এ ইয়াবা পাচারের ঘটনায় এসএ পরিবহনের পার্সেল সার্ভিসের একাধিক ব্যক্তি সম্পৃক্ত রয়েছে। খুব শীঘ্রই তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।   

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে র‌্যাব-৩ এর সিও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মোরশেদ ও কাশেম র‌্যাবকে বলেছে, তারা বাংলাদেশ আনসারের খণ্ডকালীন সদস্য। উভয়ে বছরের ৬ মাস আনসার সদস্য হিসেবে কাজ করে। আর বাকি ৬ মাস বাধ্যতামূলক অবসরে থাকে। তারা চাকরির আড়ালে সারা বছরই ইয়াবা পাচারের ব্যবসা করে আসছিল। কাশেম ও মোরশেদ শুক্রবার চট্টগ্রামের একটি এসএ পরিবহনের অফিস থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো নিজেদের নামে পার্সেল করে। গত শনিবার এই চালানটি ঢাকায় পৌঁছাবে। তাই কাশেম ও মোরশেদ ওইদিন সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থেকে আকাশ পথে ঢাকায় আসে। র‌্যাব সদস্যরা নিশ্চিত হয়ে এসএ পরিবহনের পার্সেল কাউন্টারে কাশেম ও মোরশেদকে হাতেনাতে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আটক করে।

র‌্যাব সূত্র জানায়, এই বিপুল সংখ্যক ইয়াবা পাচারের চেষ্টায় এসএ পরিবহনের দায়িত্ব অবহেলা ও গাফেলতি রয়েছে। এসএ পরিবহনের পণ্য স্ক্যানিংয়ের কোন যন্ত্রপাতি নেই। যার ফলে অস্ত্র-বিস্ফোরকসহ যে কোন ধরনের পণ্য অনায়াসে আনা-নেয়ার মতো ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তবে র‌্যাব এসএ পরিবহনের তিনজনের বিষয়ে সরাসরি মুখ খুলছে না। তবে তাদের বিরুদ্ধে মাদক পাচারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট গাফলতি রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। 

র‌্যাবের তদন্ত সূত্র জানায়, গ্রেফতার মীর কাশেম প্রতি সপ্তাহেই কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ইয়াবার চালান ঢাকায় আনতো সে। আর চুক্তিতে বাহন হিসেবে ব্যবহার করতো এসএ পরিবহনসহ বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস।

এ বিষয়ে র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, তদন্ত সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবে না। তবে তদন্তে শেষেই জানা যাবে এ ঘটনার সঙ্গে কারা কারা জড়িত আছে। 

অভিযোগ রয়েছে, গত শুক্রবার (১৭ মে) এই বিপুল সংখ্যক ইয়াবা ট্যাবলেট চট্টগ্রামের একটি এসএ পরিবহনের অফিস থেকে ঢাকায় পাঠানোর জন্য পার্সেল বুকিং হয়। পরে শনিবার এগুলো ঢাকার উত্তরার এসএ পরিবহনের অফিসে পৌঁছায়। সে পার্সেল আনতে গিয়ে র‌্যাবের কাছে হাতে নাতে ধরা পড়ে মোরশেদ ও কাশেম। তবে এ ঘটনায় এসএ পরিবহনের যে গাফলতি রয়েছে তা স্পষ্ট।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর উত্তরাস্থ এসএ পরিবহনের অফিস থেকে এক লাখ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৩। এ সময় ওই অফিসে পার্সেল রিসিভ করতে গিয়ে গ্রেফতার হয় মীর কাশেম (৩১) ও মোরশেদ আলী (৩৩) নামের দুইজন।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, এসএ পরিবহনের মাধ্যমে নিয়মিত ইয়াবা আসার তথ্য পাওয়া গেছে। এ কারণে এসএ পরিবহনের কর্মীদের মধ্যে একাধিক অসাধু ব্যক্তি ইয়াবা কারবারে যুক্ত আছে বলে ধারণা করছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।


এইচ এম/টিএফ