• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০১৯, ০৮:৩৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১, ২০১৯, ০৮:৩৯ পিএম

হলি আর্টিজান

ছবি বুকে আগলে কান্না করছেন রবিউলের মা

ছবি বুকে আগলে কান্না করছেন রবিউলের মা
করিমন নেছা ছেলের ছবি বুকে আগলে কান্না করছেন-ছবি : জাগরণ

তিন বছর আগে ২০১৬ সালে ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি  হামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ ২২ জন নিহত হন। তাদের একজন রবিউল করিম ছিলেন ৩০তম বিসিএস ক্যাডার। তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার ছিলেন।

ছোটবেলা থেকে মানবসেবার জন্য নিজ এলাকাসহ গোটা মানিকগঞ্জে তার আলাদা পরিচিতি ছিল। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় নিজ গ্রামে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষায়িত বিদ্যালয় ‘ব্লুমস’ গড়ে তুলেছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল করিম। তার স্বপ্ন ছিল এই বিদ্যালয়ের সাথে হাসপাতাল ও বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করা। ২০০১ সালে চালুর পর ভালোভাবেই চলছিল বিদ্যালয়টি।

কিন্তু ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার দিনে রবিউল করিম নিহত হওয়ায় থমকে যায় সেই স্বপ্ন। বর্তমানে অর্থাভাবে খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয়টি আবাসিক করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি।

সোমবার (১ জুলাই) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের কাটিগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবন্ধী শিশুরা পড়াশোনায় ব্যস্ত সময় পার করছে। বর্তমানে সেখানে ৪২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। সপ্তাহে ৪ দিন সকাল ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত ক্লাস চলে। পাশাপাশি খেলাধুলা ও ফিজিওথেরাপির ব্যবস্থা রয়েছে। দুপুরে খাবার দেয়া হয় স্কুল থেকেই।

রবিউল করিমের ছোটভাই শামসুজ্জামান সামস বলেন, ভাইয়ের স্বপ্নপূরণে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বেঁচে থাকতে তিনিই সব খরচ চালাতেন। এখন ভাইয়ের বন্ধু এবং বিভিন্নজনের সহযোগিতায় চলছে বিদ্যালয়টি। বিদেশি একটি সংস্থা তিন কক্ষের একটি ভবন করে দিলেও আর্থিক সমস্যা রয়েছে। 

ব্লুমস-এর সভাপতি জি আর শওকত আলী বলেন, বিদ্যালয়ে আসতে ২ কিলোমিটার সড়ক কাঁচা।সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে চলাচল করা যায় না। সড়কটি দ্রুত পাকা করার দাবি করেন তিনি।

রবিউল করিমের স্ত্রী উম্মে সালমা বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাওয়ার পর আর্থিকভাবে ভালোই আছি। কিন্তু রবিউলের স্বপ্নপূরণ হবে তো? হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে বিদ্যালয় ছিল ওর স্বপ্ন। বিদ্যালয়টি দেখে যেতে পারলেও এখনও আবাসিক করা যায়নি।

রবিউলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা করিমন নেছা ছেলের ছবি বুকে আগলে কান্না করছেন। আর বিলাপ করে বলছেন, আমার রবিউল মরতে পারে না।

রবিউলের নামে মাদ্রাসার কক্ষ

সাটুরিয়া উপজেলার বাছট বৈলতলা মোকদমপাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার একটি কক্ষ রবিউলের নামে নামকরণ হয়েছে। মাদ্রাসার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হাবিবুল্লাহ মিজান বলেন, মানিকগঞ্জের কৃতী সন্তান রবিউল করিম দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেছেন। স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মাদ্রাসার একটি কক্ষের নাম তার নামে রাখা হয়েছে।

এসএমএম

আরও পড়ুন