ক্যাসিনো, জুয়ার আসর ও মাদক সেবনসহ অনৈতিক কাজের অভিযোগে রাজধানীর কয়েকটি ক্লাবে অভিযান চালিয়ে তিন রাঘববোয়ালকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জব্দ করেছে বিপুল পরিমাণ টাকা, অস্ত্র, গুলি, মাদক ও ক্যাসিনো সামগ্রী।
রাজধানীর সিংহভাগ ক্লাবে চলে ক্যাসিনো বা জুয়া এবং মাদক সেবন। মাঝারি সারির প্রায় অর্ধশত ক্লাবে জুয়া খেলা বন্ধ হয়নি। এমন অভিযোগ অনেকের। অভিযোগ রয়েছে, খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এলাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকার বিজি প্রেসের পাশে জুয়া খেলা চলে। পাশাপাশি মাদক সেবন এবং অন্যান্য খেলাও প্রতি রাতে চলছে। জুয়াসহ পুরো ক্লাবের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ শফি ওরফে নোয়াখাইল্যা শফি।
তেজগাঁও তেজকুনি পাড়ার খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি কার্যালয়ে রাতভর চলে ক্যাসিনো, জুয়া এবং মাদক সেবন। এ সমিতির জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় কাউন্সিলর শামীম আহমেদ। এ সমিতিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজ এলাকায়।
ব্যস্ততম কারওয়ানবাজার কাঁচাবাজারের প্রগতি সংঘে রাতভর চলে জুয়া ও মাদক সেবন। চাঁদা আদায়ের জন্য ব্যসায়ীদের এনে এখানে নির্যাতন চালানো হয়। অভিযোগে জানা যায়, এ সমিতির জুয়ার কার্যক্রম চালান স্থানীয় মৎস্য আড়ৎদার সমিতির নেতা মোশাররফ হোসেন।
পান্থপথে রয়েছে একটি জুয়া খেলার ক্লাব। সেটিও চলছে স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা নিয়ন্ত্রণে।
মতিঝিলের ক্লাবপাড়া ছাড়াও দিলকুশা, ব্যাংক কলোনি, আরামবাগ, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, কাকরাইল, গুলিস্তান, ওসমানী উদ্যান, বঙ্গবাজার এলাকায় নিয়মিত জুয়ার আসর বসে। মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় অবস্থিত ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবে অনানুষ্ঠানিক ক্যাসিনো ব্যবসা চলে বলে অভিযোগ রয়েছে। একই অভিযোগ রয়েছে তেজগাঁও লিংক রোডের উত্তরা ক্লাব, পল্টনের জামাল টাওয়ারের ১৪ তলাসহ বেশ কয়েকটি নামিদামি রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে। সেগুনবাগিচার ৮টি স্থানে যুবলীগ মহানগরী দক্ষিণের এক শীর্ষ নেতার তত্ত্বাবধানে ক্যাসিনো ব্যবসা চলে। এখানে কয়েকটি বহুতল ভবনের ছাদ দখলে নিয়ে ক্যাসিনো চালানো হচ্ছে।
উত্তরা এলাকার উত্তরা ফেন্ডস ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ বেশ কয়েকটি ক্লাবে জুয়া ও মদের আসর বসে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রণেই এসব চলছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সম্প্রতি সারাদেশে আলোচিত ইস্যু ক্যাসিনো ব্যবসা। এরইমধ্যে কয়েকজন প্রভাবশালীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্নীতিবাজ, চাদাবাজ, টেন্ডারবাজ যেই দলের হোক কোনো ছাড় নেই।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতা হোক, সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হোক, বা জনপ্রতিনিধি হোক, কাউকেই এমন ব্যবসা করতে দেব না যা আইনসঙ্গত নয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আমরা সেই কাজটিই করছি। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় চাঁদাবাজি ও আইনবহির্ভূত সব ব্যবসার বিরুদ্ধে কাজ করছি।
এইচ এম/ এফসি