• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৯:২৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৯:২৯ এএম

নাশকতা ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নজরদারি

নাশকতা ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নজরদারি
বুয়েট শিক্ষার্থী ফাহাদ হত্যা বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের খুনিদের ফাঁসি এবং সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধসহ ৮ দফা দাবিতে বুয়েট ছাড়াও রাজধানীর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসবে।

বুধবার (৯ অক্টোবর) তারা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধের মাধ্যমে ঢাকাকে অচল করে দিতে পারে। এমন আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এ ঘটনায় একাত্মতা ঘোষণা করে সারাদেশের শিক্ষার্থীরাও সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ করবে। এ খবরের পর ডিএমপিসহ দেশের সকল মেট্রোপলিটন এলাকা এবং জেলা পুলিশ সুপারদের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পুলিশ সদর দফতর থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সংঘাত, নাশকতা বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে রাজধানীসহ সারাদেশে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের রাস্তায় নামানো হচ্ছে। তাদের সতর্কাবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নাশকতা ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

ফাহাদ হত্যার ঘটনায় শিক্ষার্থী আন্দোলনে উত্তাল হয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে  সেখানেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) প্রায় চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার পর রাত পৌনে ১০টার দিকে ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলামের কার্যালয়ের তালা খুলে দেন আন্দোলনকারীরা। বুধবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১০টায় নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেবেন তারা।

আবরার হত্যার প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ক্যাম্পাসে আসেন বুয়েট ভিসি। প্রথমে তিনি প্রভোস্টদের নিয়ে বৈঠক করেন। পরে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন। এ সময় তিনি নীতিগতভাবে শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা সুনির্দিষ্টভাবে দাবিগুলো পড়ে বাস্তবায়নের ঘোষণা চান। এতে সম্মত না হওয়ায় ভিসিকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। তালা ঝুলিয়ে দেন তার কার্যালয়ের গেটে।

রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নৃশংস পিটুনিতে মারা যান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। সোমবার থেকেই বুয়েট শিক্ষার্থীরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। মঙ্গলবার এই আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। তারা ৮ দফা দাবি পেশ করেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার করতে হবে, আবাসিক হলগুলোতে র‌্যাগিংয়ের নামে এবং ভিন্নমত দমানোর নামে নির্যাতন বন্ধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে, মামলার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে, এর আগের ঘটনাগুলোর বিচার করতে হবে, ১১ অক্টোবরের মধ্যে শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টকে প্রত্যাহার করতে হবে এবং ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতির স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

সন্ধ্যার পর আন্দোলনকালীদের সামনে এসে মাইক হাতে নিয়ে ভিসি বলেন, ‘তোমরা যে দাবিগুলো জানিয়েছ আমি সেগুলো দেখেছি। আমি তোমাদের কোনও দাবি রিজেক্ট করছি না। এ ব্যাপারে কথাবার্তা বলেছি। নীতিগতভাবে তোমাদের সবগুলো দাবি মেনে নিয়েছি। অসুবিধা থাকলে দূর করতে হবে। সবগুলো অবশ্য আমার হাতে নেই।’

এ সময় শিক্ষার্থীরা ভিসির কাছে তাদের ৮ দফা দাবি পাঠ করে বাস্তবায়নের ঘোষণা চান। ভিসি জানান, এই পরিবেশে এটা সম্ভব নয়। এর জন্য কিছু সময় লাগবে। সবগুলো তার আওতার ভেতরেও না। এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ভিসির বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে অনেকক্ষণ বাক-বিতণ্ডার পর ভিসি নিজ কার্যালয়ে চলে যান আর বাইরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। রাত পৌনে ১০টার দিকে তালা খুলে দিলে ভিসি অবমুক্ত হন।

এইচএম/এসএমএম

আরও পড়ুন