• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০১৯, ০২:০১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১১, ২০১৯, ০৪:৩৭ পিএম

শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার আসামি

ভারতে পালানোর সময় কাউন্সিলর মিজান শ্রীমঙ্গলে গ্রেফতার

ভারতে পালানোর সময় কাউন্সিলর মিজান শ্রীমঙ্গলে গ্রেফতার
ডিএনসিসি ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান - ছবি : সংগৃহীত

ভার‌তে পালা‌নোর সময় ঢাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হা‌বিবুর রহমান মিজান‌কে শ্রীমঙ্গল থে‌কে আটক ক‌রে‌ছে র‌্যাব। র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তাকে ঢাকায় এনে বিকাল ৪টার দিকে তার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে র‌্যাব।

কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে র‌্যাবের একটি বিশেষ টিম শ্রীমঙ্গ‌লের গুহ রোডের হামিদা আবাসিক গেস্ট হাউজের সামনে থেকে মিজান‌কে আটক করে। তিনি ঢাকা উত্তর সিটি ক‌র্পোর‌রেশ‌নের (ডিএনসিসি) ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের (মোহম্মদপুর) কাউন্সিলর। 

র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান ভূঁইয়া জানান, চলমান ক্যা‌সি‌নোবি‌রোধী অভিযানের অংশ হিসেবে হাবিবুর রহমান মিজানকে আটক করা হয়েছে। সে দেশ থেকে পার্শ্ববর্তী দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আবদুস সালেক জানান, টিভি দেখে জানতে পেরেছি আমাদের এলাকা থেকে র‍্যাব ওই কাউন্সিলরকে আটক করে নিয়ে গেছে। তার এখানে অবস্থানের বিষয়ে বা র‍্যাবের অভিযানের বিষয়ে আমাদের কিছু জানা ছিল না।

গুহ রোডের বাসিন্দা হাজী ফরিদ আহমেদ জানান, কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় মিজানকে আনাগোনা করতে দেখেছেন তারা।

জানা গেছে, হাবিবুর রহমান মিজান ওরফে পাগলা মিজান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা। ১৯৮৯ সালে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে বাসায় হামলার সময় মিজান ছিলেন ফ্রীডম পার্টির বড় অন্যতম নেতা। শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। তার নামে মোহাম্মদপুর থানায় ১৯৯৬ সালে ইউনূস হত্যা, ২০১৬ সালে সাভার থানায় জোড়া হত্যা মামলা রয়েছে। খুনের মামলা ছাড়াও মোহাম্মদপুর বিহারি ক্যাম্পে মাদক নিয়ন্ত্রণকারী ও মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে মিজান পরিচিত। 

অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া মিজান বহুবার গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। তার সেকেন্ডম্যান মাতব্বর তুহিন। বর্তমানে তারা আদাবরে ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন। পাগলা মিজান নামেই সবাই তাকে চেনে। শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি নাম বদলিয়ে রাখেন হাবিবুর রহমান মিজান। পরে এক সময় ফ্রীডম পার্টি থেকে গিয়ে ভেড়েন আওয়ামী লীগে। বর্তমানে তিনি মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের আলোচিত-সমালোচিত নেতা। গত কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।

১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্য রাতে ফ্রীডম পার্টির সদস্য কাজল ও কবিরের নেতৃত্বে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে হামলা চালায় একটি চক্র। তারা সেখানে গুলি করে এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় শেখ হাসিনা বাড়ির ভেতর অবস্থান করছিলেন।

১৯৯৭ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মামলার অভিযোগপত্র দেয়। এতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) সৈয়দ ফারুক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুর রশিদ ও মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) বজলুল হুদা এবং নাজমুল মাকসুদ মুরাদসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। অভিযোগপত্রে মিজানুর রহমান ওরফে পাগলা মিজানকে হামলার পরিকল্পনাকারীদের একজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মিজানের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফাও ছিলেন হামলাকারী দলের সদস্য। মোহাম্মদপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মোস্তফা ১৯৯৫ সালে দুষ্কৃতকারীদের গুলিতে মারা যান।

জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে ফ্রীডম পার্টির পক্ষ থেকে মিজান, শামীম জালালী ওরফে দারোগার ছেলে শামীম, বাবুল ওরফে পিচ্চি বাবুলসহ কয়েক জন লিবিয়া যান গেরিলা ট্রেনিং নিতে। হামলার ঘটনার সময় মিজান ছিলেন ফ্রীডম পার্টির ধানমণ্ডি-মোহাম্মদপুর জোনের কো-অর্ডিনেটর।

এইচএম/এসএমএম/ এফসি

আরও পড়ুন