• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০১৯, ০৬:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১২, ২০১৯, ০৬:৫৭ পিএম

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নিজ কর্মস্থল থেকেই কমিটি গঠন শুরুর আহ্বান

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নিজ কর্মস্থল থেকেই কমিটি গঠন শুরুর আহ্বান

যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল এর বাস্তবায়ন নিজ কর্মস্থল থেকেই শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ। হাইকোর্টের এই বিচারপতি বলেন, কমিটি গঠনের বিষয়টি আগে নিজেদের ঘর থেকেই শুরু করতে হবে। আপনার কলিগ যদি হেনস্থার শিকার হন, আপনি অথবা আপনার অন্য কোনো কলিগদের দিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করুন। সেখানে (গণমাধ্যম অফিসের কর্মস্থলে) যৌন হয়রানির ঘটনা যার দ্বারাই ঘটুক না কেন আপনারা যদি তা তুলে ধরেন তাহলে হয়রানি কমে আসবে। আপনাদের কলিগদের পাশে যদি আপনারা দাঁড়ান তা হলে সবাই এগিয়ে আসবে, আপনাদের পাশে দাঁড়াবে।

তিনি বলেন, অনলাইন, পত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মস্থলে যৌন হয়রানিবিরোধী কমিটি করার আগে সংবাদমাধ্যমের মালিক ও সম্পাদকদের এ সংক্রান্ত অনুষ্ঠান বা বিভিন্ন সভা সেমিনার এবং কর্মশালায় বেশি বেশি করে সম্পৃক্ত করতে হবে। তা হলে তারা অন্যদের পাশাপাশি নিজেরাও সচেতন হবেন। ফলে গণমাধ্যম অফিসগুলোয় যৌন হয়রানি প্রতিরোধের কমিটি গঠন করা আরও সহজ হবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি এ আহ্বান জানান। আইন, বিচার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্সদের ফোরামের জন্য কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, ভুক্তভোগী নারীরা মুখ খুলতে থাকলে যৌন হয়রানি অনেকটাই কমে আসবে। নারীদের প্রতি একধরনের অসহায় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে তাকানো হয়। আমরা বলছি, নারী কারও স্ত্রী, কারও বোন বা কারও কন্যা। আমরা মানবিকভাবে তাদের ভাবতে পারছি না। তারাও আমাদের মতো মানুষ- এ দৃষ্টিভঙ্গি না থাকার কারণে যৌন হয়রানির মনোভাব সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের (পুরুষদের) দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নারীরা আমাদের সমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নারীদের বাদ দিয়ে সমাজ ও দেশ অচল। এমনকী পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্যও সমাজে নারীরা গুরুত্বপূর্ণ।
 
হাইকোর্টের রায়ের আলোকে সুপ্রিম কোর্টেও যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন না হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে যে রায় দেয়া হয়েছিল সেটি আইনজীবী সমিতি বা সুপ্রিম কোর্টও পালন করেনি। আমরা যখন অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কমিটি নিয়ে জবাবদিহিতা চাইব তখন তো তারা পাল্টা আমাদের কাছে প্রশ্ন তুলবে। তাই অবিলম্বে ওই রায় বাস্তবায়নের আহ্বান জানাচ্ছি।

আইন, বিচার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. মাসউদুর রহমানের সঞ্চালনায় এবং সংগঠনটির সভাপতি ওয়াকিল আহমেদ হিরনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন ফোরামের সাবেক সভাপতি এম. বদি-উজ্জামান, অ্যাডভোকেট নাহিদা আনজুম কণা, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ, পরিচালক অ্যাডভোকেট তৌহিদা খন্দকার, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জোবায়দা পারভিন ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সীমা জহুর। কর্মশালায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ল' রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান রাজু, সিনিয়র সদস্য মিলটন আনোয়ার ও মাজহারুল হক মান্না। 

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানিবিরোধী কমিটি করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কিন্তু এখনও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান আদালতের ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করেনি।

এমএ / এফসি

আরও পড়ুন