• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০১৯, ০৯:৫৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৪, ২০১৯, ০৯:৫৯ এএম

দেশ ছাড়তে সীমান্তে আনাগোনা

নিষেধাজ্ঞার আওতায় অর্ধশত ক্যাসিনো হোতা

নিষেধাজ্ঞার আওতায় অর্ধশত ক্যাসিনো হোতা
ক্যাসিনো সামগ্রী

ক্যাসিনো ও অপকর্মের হোতাদের গ্রেফতারে রাজধানীসহ সারাদেশে আটক, গ্রেফতারের পাশাপাশি পাকড়াও অভিযান চলমান রয়েছে। এর আওতায় রয়েছেন আরো অর্ধশত ক্যাসিনো হোতা। ইতোমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ক্যাসিনো,চাদাবাজ ও টেন্ডারবাজের হোতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।  

এদিকে ক্যাসিনোকাণ্ডে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিরুদ্ধে চলমান অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ২২ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (২৩ অক্টোবর) এ সংক্রান্ত চিঠি পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) ও সীমান্তের পুলিশ সুপার ও কাষ্টমস কর্মকর্তা বরাবর পাঠানো হয়েছে। সূত্র জানায়, দুদকের এ সংক্রান্ত অনুসন্ধান দলের প্রধান ও সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন এ চিঠি পাঠিয়েছেন।

দুদক সূত্রের তথ্য মতে, দুদকের অনুসন্ধানে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে তাদের প্রত্যেককে বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েকদিনে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসবেন আরো প্রায় অর্ধশত রাঘববোয়াল। অপরদিকে গ্রেফতার এড়াতে ক্যাসিনোর অর্ধশত হোতা দেশের বাইরে যাওয়ার প্রাণান্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তারা দেশের ৫টি সীমান্ত এলাকার বাজার, বাসা বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এমনই তথ্য পাওয়া গেছে সীমান্ত থেকে। সম্প্রতি এদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার কারণে সীমান্তে তারা বেকায়দায় রয়েছেন।
   
এদিকে ক্যাসিনো হোতাদের গ্রেফতার ও জেল জরিমানার আতঙ্কে রাজধানীসহ বিভাগীয় শহর ছেড়েছেন প্রায় অর্ধশত ক্যাসিনো জুয়াড়ি, চাদাবাজ ও টেন্ডারবাজ। এদের আয়ের সঙ্গে সম্পদের মিল নেই। যার কারণে তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। 

কুমিল্লা জেলা শহরের গোয়েন্দা পরিদর্শক নজরুল ইসলাম জানান, চৌদ্দগ্রাম চৌয়ারা, সুয়াগাজী, মিয়াবাজার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় সীমান্ত বাতিসা, বাবুর্চী বাজার এলাকার সকল আবাসিক হোটেল, হাসপাতাল ক্লিনিক ও সীমান্তের বাড়িগুলোতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা নজরদারি শুরু করেছে। 

এবিষয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম দৈনিক জাগরণকে জানান, কুমিল্লা জেলার বিবির বাজার, মিয়াবাজার, চৌয়ারা, সুয়াগাজী সীমান্তে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যদের সার্বক্ষণিক সতর্ক রাখা হয়েছে। আবাসিক হোটেল, ক্লিনিক, প্রাইভেট হাসপাতাল, এবং সীমান্তের বাড়িগুলোতে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে। অপরিচিত কোন ব্যক্তিকে পেলেই তার পূর্ণ পরিচয় ব্যতীত ছাড়া হচ্ছে না।   
এবিষয়ে যশোর বেনাপোল কাষ্টমস পরিদর্শক মাসুম জানান, ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। সে অনুযায়ী ক্যাসিনো টেন্ডারবাজ ও চাঁদাবাজদের ছবি সম্মিলিত প্রোফাইল চেকিং পয়েন্টে কম্পিউটারে রাখা হয়েছে। এ ধরনের কোন লোক আমাদের কাছে আসলে কম্পিউটার আমাদের ম্যাসেজ দিবে। পাশাপাশি বর্ডার ক্রস করার আগে চেকিং পয়েন্টে চেক এবং নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান মাসুম।
 
এছাড়া যশোর সদর থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, ক্যাসিনোসহ দুর্নীতিবাজদের দেশ ছাড়তে নিষেধাজ্ঞার পরই যশোর সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শহরের সকল পার্ক, হাসপাতাল, হোটেল ও বস্তি এলাকায় পুলিশ ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। সতর্কতা ও ব্যাপক তল্লাশির ফলে পুরো যশোরের চিত্র পাল্টে গেছে বলে ব্যবসায়িরা মন্তব্য করেন।
  
অপরদিকে সিলেটের জৈন্তাপুর ও গোয়াইঘাট এলাকার ডিবি পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, এদিকের কাষ্টমস ফাঁকি দিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখানে ডিবি র‌্যাব ও বিশেষ শাখার সদস্যরা পালাক্রমে কাস্টমস চেকিং পয়েন্টে চেক করা হচ্ছে। তল্লাশির পর সাধারণ মানুষের জন্য জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, জাফলংয়ের ডাউকি বাজার এলাকায় সতর্ক পাহারা বসানো হয়েছে। এ সীমান্ত দিয়ে ক্যাসিনো সীমান্ত অতিক্রমের কোন সুযোগ নেই।
 
দুদক ও এনবিআর সূত্র বলেছে, যাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময় গ্রেফতার হওয়া কয়েকজনের পাশাপাশি অনুসন্ধান চলমান থাকা ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। 

এইচ এম/বিএস 
 

আরও পড়ুন