• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০১৯, ০৫:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৭, ২০১৯, ০৫:০৩ পিএম

আদালতের পর্যবেক্ষণ

‘জঙ্গিরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চরিত্রহননের চেষ্টা করেছিল’

‘জঙ্গিরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চরিত্রহননের চেষ্টা করেছিল’
হলি আটিজানে জঙ্গি হামলার পর সেনা কমান্ডো অভিযান-ফাইল ছবি

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায়ে ৮ আসামির মধ্যে সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

এক আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। 

বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক মজিবর রহমান বলেন, কলঙ্কজনক এ হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চরিত্রহননের চেষ্টা করেছিল। যারা এ ধরনের হামলা চালিয়ে বর্বরতার চূড়ান্ত বহির্প্রকাশ ঘটিয়েছে তাদের প্রতি অনুকম্পা জানানোর সুযোগ নেই। 

আদালত বলেন, ‘‘হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা নিষ্ঠুর, নারকীয় ও দানবীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। তথাকথিত জিহাদের নামে নৃশংসতার চূড়ান্ত বহির্প্রকাশ ঘটায় তারা। জঙ্গিদের লক্ষ্য ছিল, এই হামলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আইএস-এর অস্তিত্ব জানান দেয়া। জিহাদ কায়েম করে জননিরাপত্তা বিঘ্ন করার চেষ্টা করেছিল জঙ্গিরা।

বিচারক মজিবর রহমান বলেন, এই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী জঙ্গি তামিম। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য জেএমবির একাংশ নিয়ে গঠিত নব্য জেএমবির সদস্যরা হলি আর্টিজান বেকারিতে নারকীয় এ হামলা চালিয়েছে। সেখানে হামলার মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদের নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতা প্রকাশ পায়।

আদালত পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, নিরপরাধ দেশি-বিদেশি মানুষ যখন রাতের খাবার খেতে হলি আর্টিজানে যায় তখনই আকস্মিকভাবে তাদের ওপর নেমে আসে জঙ্গিবাদের ভয়াল রূপ। জঙ্গিরা শিশুদের সামনে হত্যাকাণ্ড চালায়। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য জঙ্গিরা মৃতদেহগুলো ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপায়।

বহুল আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল থেকে আদালতপাড়াসহ রাজধানী ঢাকা ও সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রায় সাহেব বাজার মোড় থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পুরো সড়কে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছিল পুলিশ। সাদা পোশাকেও তৎপর ছিলেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় নিহত হন দেশি-বিদেশি ২০ জন। হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা এএসপি রবিউল করিম এবং ওসি সালাউদ্দিন খান নিহত হন। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রেস্তোরাঁর কর্মী সাইফুল।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে তাদের মধ্যে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবর রহমানের আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিক বিচার। বিচার শুরুর প্রায় এক বছরের মাথায় রায় ঘোষণা করা হয় বুধবার। 

এসএমএম