• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২০, ০৯:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ৭, ২০২০, ০৯:৫১ পিএম

ডা. সারওয়ার আলীকে হত্যাচেষ্টা

চালক ও দারোয়ান ২ দিনের রিমান্ডে

চালক ও দারোয়ান ২ দিনের রিমান্ডে
ডা. সারওয়ার আলীকে - ফাইল ছবি

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীকে সপরিবারে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ওই বাড়ির দারোয়ান হাসান এবং চালক হাফিজুলকে ইসলামকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই সুকান্ত সাহা মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) আসামিদের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালতে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম ২ দিনের রিমান্ড আদেশ দেন।

সোমবার ডা. সারওয়ার আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এতে চালক ও দারোয়ানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৪ জনকে আসামি করা হয়।

বাংলাদেশের মানবাধিকার আন্দোলনের অন্যতম নেতা, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি, মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারওয়ার আলী ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর রোববার হামলার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, রাত সাড়ে ১০টায় অজ্ঞাতপরিচয় দুই দুর্বৃত্ত উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে ডা. সারওয়ার আলীর বাড়িতে ঢোকে। তারা ওই বাড়ির তৃতীয় তলায় গিয়ে প্রথমে তার মেয়ে সায়মা আলীর বাসার দরজায় ধাক্কা দেয়। দরজা খুলে দেওয়া হলে দুর্বৃত্তরা ভেতরে গিয়ে সারওয়ার আলীর মেয়ে ও জামাতা হুমায়ুন কবিরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তাদের জিম্মি করে বাড়ির চতুর্থ তলায় গিয়ে সারওয়ার আলী ও তার স্ত্রী কমিউনিটি ক্লিনিকের সাবেক প্রকল্প পরিচালক মাখদুমা নার্গিসকে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় সায়মা আলীর চিৎকারে ওই ভবনের দুই বাসিন্দা এগিয়ে গেলে তারা পালিয়ে যায়। পুলিশ ওই বাসা থেকে দুর্বৃত্তদের ফেলে যাওয়া মোবাইল ফোন, একটি ব্যাগে থাকা ৭টি চাপাতি, বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার যন্ত্র, টিভি ক্যামেরার স্ট্যান্ড, সিনথেটিক দড়ি ও কেমিক্যাল স্প্রে উদ্ধার করেছে।

উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি তপন চন্দ্র বলেন, চালক ও দারোয়ান তাদের ওপর হামলা করে। গতকাল সোমবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। হামলার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সারওয়ার আলীর সাবেক গাড়িচালক নাজমুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ঘটনার দিন নাজমুলের সঙ্গে মোবাইল ফোনে হাসানের একাধিকার কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে। একইভাবে নাজমুলের সঙ্গে বর্তমান চালক হাফিজেরও বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে।

ডা. সারওয়ার আলীর সন্দেহ- ভবনের দারোয়ান হাসানের সঙ্গে দুর্বৃত্তদের যোগসাজশ রয়েছে। সে আগে থেকেই বাড়ির ফটক খোলা রেখেছিল। হামলার দিন দারোয়ানের ওই ফোনে অন্তত ২৫টি কল এসেছিল। তার স্ত্রীর সঙ্গে বেয়াদবি করায় সাবেক গাড়িচালক নাজমুল আর চাকরি ছেড়ে দেয়। 

হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন মৃদুল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান।

তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সারোয়ার আলী ও তার পরিবারের ওপর এই ন্যক্কারজনক হামলায় আমরা উদ্বিগ্ন। ডা. সারওয়ার আলী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে একজন অগ্রসৈনিক এবং এ দেশের প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তার অবদান অসামান্য। জঙ্গি, মৌলবাদী ও সন্ত্রাসবিরোধী বলিষ্ঠ অবস্থানের কারণে তাকে সপরিবারে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমরা এই কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। একইসঙ্গে হত্যাচেষ্টাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার, ডা. সারওয়ার আলী ও তার পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানাচ্ছি।

এইচ এম/ এফসি

আরও পড়ুন