• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ২০, ২০২০, ০৫:০৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২০, ২০২০, ০৫:৪৩ পিএম

তুরাগে কিশোরী ধর্ষন

ধর্ষকের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে এলো এলাকবাসী

ধর্ষকের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমে এলো এলাকবাসী

'তনু ও নুসরাতের মত বোনদের আমরা আর হারাতে চাই না'। এমনই দাবি প্রতিধ্বনিত হলো তুরাগের সর্বস্তরের মানুষের কন্ঠে। একদিকে করোনভাইরাসের সংক্রমণের ভয় অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আতঙ্ক। কিন্তু এর সবকিছু উপেক্ষা করেই এক বর্বর ধর্ষকের বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামলো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন তুরাগ থানার মানুষ।

এই ফেসবুক গ্রুপটির মাধ্যমেই ধর্ষকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ওঠে এলাকাবাসী

বৃহস্পতিবার (২০ মে) ১২ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষকের বিচার দাবিতে অভিযুক্তের বাড়ির সামনে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম তওহীদ (২৭)। সকাল সাড়ে এগারটায় তুরাগের নয়ানীচালা এলাকার ৪ নম্বর রোডের ডি ব্লকে অবস্থিত ৫০নং বাড়ির সামনে প্রায় শতাধিক এলাকাবাসী ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড হাতে মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

অবিলম্বে ধর্ষকের কঠোর শাস্তি নিশ্চিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতেই রাস্তায় নেমে এসেছেন বলে জানান এলাকার মানুষ। এ সময় ধর্ষক তওহীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও ধর্ষিতার পুনর্বাসনের জোর দাবি তোলা হয়।

সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিবেদিত নয়ানীচালা একতা যুব সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত উক্ত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘তৌহিদ এর আগেও এলাকায় ধর্ষণের মতো জঘন্যকাণ্ড ঘটিয়েছে। এলাকায় বিচার-শালিসের নামে একাধিকবার তাকে ছাড় দেয়া হয়েছে। সে শুধু নারীলোলুপই নয় বলাৎকারের মতো কু-রুচিপূর্ণ একজন অমানুষ। সর্বশেষ, করোনার এই দুর্যোগে নিরীহ একটি মেয়েকে ত্রান দেবার কথা বলে রাস্তা থেকে ডেকে আনার পর মেয়েটিকে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে তওহীদ।’

নয়ানীচালা একতা যুব সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন

তারা দাবি করেন, ‘বর্তমানে তওহীদকে রক্ষা করার জন্য কিছু লোক নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদেরকে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, কোন ধর্ষককে রক্ষার করার মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর সমাজ প্রত্যাশা করা যায়না। তাই ধর্ষককে রক্ষা করার অপচেষ্টা যারা করছেন তারা কখনোই সফল হবেন না।’

গত ১৬ই মে নয়ানীচালার নিজ বাসার ৪র্থ তলায় পিতৃহীন, ১২ বছর বয়সী এক অসহায় কিশোরীকে ঈদের জামা-কাপড় ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায় তওহীদ। পরে ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে সে। একপর্যায়ে মীম বিবস্ত্র অবস্থায় হাসান মঞ্জিল নামের ওই বাড়ী থেকে চিৎকার করতে করতে নিচে নেমে আসলে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে আশ্রয় দেয়। এ সময় স্থানীয়দের নিকট ঘটনাটি খুলে বলে সে।

বিষয়টি নিয়ে প্রথমেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠে। 'আমরা তুরাগবাসী' নামক একটি ফেসবুক গ্রুপের এডমিন ও সদস্যরা সম্মিলিতভাবে এ ঘটনার ব্যাপারে সোচ্চার হয়ে উঠলে, ধর্ষক তওহীদের বিরুদ্ধে শুরু হয় প্রচারণা ও প্রতিবাদ। এক পর্যায়ে তা গোটা এলাকার মানুষের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং একযোগে সকলেই এই পৈশাচিক ধর্ষনকাণ্ডের ঘটনার বিচারের দাবিতে সরব হয়ে ওঠেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, তুরাগ থানার এসআই ওয়াজীর রহমান দৈনিক জাগরণকে জানান, ঘটনার পর পরই তওহীদকে আসামি করে একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করা হয়েছে। ল্যাব টেস্টে আলামত সংগ্রহের পর ঢামেকে সেই কিশোরীর সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পলাতক আসামী তওহীদকে গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

এসকে