গুলশান হলি আর্টিজান হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা শরিফুল ইসলাম ওরফে খালিদ ওরফে রাহাত ওরফে সাইফুল্লাহ ওরফে নাহিদ ওরফে আবু সুলাইমান (২৭)।
শুক্রবার ( ২৫ জানুয়ারি) দুপুরে ইজি বাইকে করে পালিয়ে যাবার সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থেকে জেমএমবির এই শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ শনিবার ( ২৬ জানুয়ারি) সকালে কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়ে খালিদ স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান মুফতি মাহমুদ খান।
কে এই খালিদ
মুফতি মাহমুদ খান জানান, খালিদ ১৯৯১ সালে রাজশাহীর বাগমারায় জন্মগ্রহণ করেন। বাগমারা পাইলট হাইস্কুল থেকে ২০০৮ সালে এসএসসি এবং রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজ থেকে ২০১০ সালে এইচএসসি পাশ করেন। তারপর সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০-১১ সেশনে ইংরেজী বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হন।
খালিদ এর জঙ্গিবাদে আসা প্রসঙ্গে জানা যায়, অনার্স ৩য় বর্ষে অধ্যায়নকালীন সময়ে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে আহসান হাবিব ওরফে শোভনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে যুক্ত হন তিনি। প্রথমে সে শোভনের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রিক বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত সমমানদের নিয়ে গঠিত একটি উগ্রবাদী গ্রুপে যুক্ত হন। এই গ্রুপের সদস্যরা অনলাইনে উগ্রবাদী মতবাদ প্রচার করত। পরবর্তীতে রাজশাহীতে শোভনের মেসেই শীর্ষ জঙ্গি নেতা তামীম চৌধুরীর সঙ্গে পরিচয় হয় তার।
মিডিয়া উইং এর পরিচালক বলেন, জেএমবির আমির সারোয়ার জাহান ও তামীম চৌধুরীর একত্রীকরণে খালিদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। ২০১৫ সালে মামুনুর রশীদ ওরফে রিপনের বগুড়ার বাসায় সারোয়ার জাহান, তামিম, সাদ্দাম, মারজান ও সাকিব মাষ্টার একত্রে মিটিং করে। ঐ মিটিংয়েই খালিদকে জেএমবির মিডিয়া শাখায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়।
হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলার ঘটনার পরিকল্পনা ছাড়াও প্রত্যক্ষভাবে অর্থ সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ, হামলাকারী নির্বাচনে খালিদের বিশেষ ভূমিকা ছিল। হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৬ সালে বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকল বৈঠকেই শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে খালিদ উপস্থিত ছিলেন।
হলি আর্টিজান হামলার আগেই ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সংগঠনের সিদ্ধান্তে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেয়ার পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান। এ সময় জঙ্গি নেতা মামুনুর রশিদ রিপন তার সঙ্গে ছিল। আত্মগোপন থাকা অবস্থায় তারা সর্বমোট ৩৯ লাখ টাকার যোগান দেন যা হলি আর্টিজান হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে।
এরপর আত্মগোপন থেকে বের হয়ে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে আবার তারা জঙ্গিদের সংগঠিত করতে থাকে। সম্প্রতি র্যাব হলি আর্টিজান মামলার আসামি জঙ্গি মামুনুর রশীদ রিপনকে গ্রেফতার করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা।
আরআর/সাইসে