• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২২, ০৪:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১৯, ২০২২, ০৪:৩০ পিএম

কার্ড জালিয়াতির চেষ্টায় তুর্কি নাগরিক আটক

কার্ড জালিয়াতির চেষ্টায় তুর্কি নাগরিক আটক

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যাংকের এটিএম কার্ড ক্লোন করে বাংলাদেশের ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক তুর্কি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হাকান জানবারকান নামের ৫৫ বছর বয়সী ওই তুর্কি নাগরিককে মঙ্গলবার গুলশান-১ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। হাকানের সঙ্গে তার এক বাংলাদেশি সহযোগীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

সিটিটিসি বলছে, হাকান জানবারকান আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড ক্লোন চক্রের সদস্য। বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে হাকানকে গ্রেপ্তার করা এবং এই চক্রের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানান সিটিটিসির প্রধান আসাদুজ্জামান।

তিনি জানান, রাজধানী ঢাকায় ইস্টার্ন ব্যাংকের বুথ ব্যবহার করে শতাধিক বার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করা হয়েছে। তবে ইবিএল অ্যান্টি স্ক্যামিং সফটওয়্যার ব্যবহার করায় টাকা উত্তোলন চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিষয়টি টের পেয়ে যায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তারা এ বিষয়ে পুলিশকে অবহিত করে। এরপর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে।

তুর্কি নাগরিক হাকান জানবারকান এটিএম কার্ড ক্লোনিংয়ের দায়ে ২০১৯ সালে ভারতে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারারক্ষীদের হেফাজতে ভারতের আসামের জিবিপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন হাকান। পরে সেখান থেকেই পালিয়ে যান তিনি। এরপর তিনি নেপালে যান। নেপাল থেকে আউটপাস নিয়ে যান নিজ দেশ তুরস্কে। ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এটিএম কার্ড ক্লোনিং করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

হাকানের সঙ্গে তার যে বাংলাদেশি সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার নাম মফিউল ইসলাম। গ্রেপ্তারের সময় তাদের দুজনের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন মডেলের ফোন, একটি ল্যাপটপ, ১৫টি ক্লোন করা এটিএম কার্ডসহ মোট ১৭টি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশে এই তুর্কি নাগরিক একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। ভারতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশি সহযোগী শহিদুল ইসলামসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে হাকান পালিয়ে যেতে পারলেও শহিদুল এখনো ভারতের কারাগারে রয়েছেন। শহিদুলের ভাই মফিউল ইসলাম। তারা সবাই মিলে এই এটিএম কার্ড ক্লোনিং করেন।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর হাকান জানবারকান বিজনেস ভিসা নিয়ে ঢাকায় আসেন। তার একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। তিনি একেকবার একেক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশ ভ্রমণ করেন। 

আসাদুজ্জামান বলেন, ঢাকায় আসার পর তুরস্কের এই নাগরিক ২ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংকের বিভিন্ন বুথে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, ইউএসএ, ভারত, তুরস্ক, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া, জার্মানি, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, বলিভিয়া, স্পেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়েসহ প্রায় ৪০টি দেশের নাগরিকদের ক্লোন করা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কমপক্ষে একশবার টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন। কার্ডগুলো তিনি বিদেশ থেকেই ক্লোন করে নিয়ে আসেন বলে আমরা ধারণা করছি।

এই চক্রের সঙ্গে তুরস্ক, বুলগেরিয়া, মেক্সিকো, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছেন হাকান জানবারকান।

কার্ড ক্লোনিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।