বাণিজ্যকেন্দ্রীক অর্থপাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার অপেক্ষায় না থেকে ব্যাংকগুলোকে নিজস্ব ডাটা ব্যাংক গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে এ ডাটা ব্যাংক অন্যান্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের কাজে ব্যবহার করতে পারে তার উদ্যোগও নিতে হবে। অর্থপাচার রোধে ব্যাংকের পাশাপাশি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং অন্যান্য সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

সোমবার (২০ মে) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম মিলনায়তনে ‘অ্যাড্রেসিং ট্রেড বেজড মানি লন্ডারিং ইন বাংলাদেশ : অ্যান অ্যাসেসমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা কর্মশালায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান।

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম এর ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম-এর অধ্যাপক এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড.শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব। তিনি ব্যাংকিং কার্যক্রমে মানিলন্ডারিং ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

গবেষণা কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএম এর সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএম এর সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফারুক মঈনুদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান প্রমুখ।

কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএম এর অধ্যাপক এবং পরিচালক (ট্রেনিং) ড. শাহ মোহাম্মদ আহসান হাবীব।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, বাণিজ্যকেন্দ্রীক অর্থপাচার রোধে এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। একটি গাইড তৈরি করছে যা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সারা বিশ্বে এখন অর্থপাচার একটি চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশও এর আওতার বাইরে নয়। এ সমস্যা মোকাবেলায় সব সংস্থাকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।

বিআইবিএম এর চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও জনশক্তি নেই। এদিকে নজর দিয়ে ব্যাংকারদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর নির্ভর না করে প্রত্যেক ব্যাংকের নিজস্ব ডাটা ব্যাংক করতে হবে। যা অন্যান্য ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে।

পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএম এর সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, অর্থপাচার প্রতিরোধে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ব্যাংক এবং সকল স্টেক হোল্ডারের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। ব্যাংকের এডি শাখাগুলোকে সুষ্ঠু মনিটরিং করতে হবে। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল দিতে হবে। ব্যাংকারদের ব্যাংকিংয়ের পাশাপাশি ট্রেড এর খুঁটিনাটি জানাতে হবে। বাণিজ্য পণ্যের মূল্য নির্ধারণে ব্যাপারে বিদেশি সংস্থার সহায়তা প্রয়োজন।

এআই/এসএমএম