• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০১৯, ০৮:২২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৭, ২০১৯, ০৮:২২ এএম

১১ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা

১১ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা

চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। 

জুলাই থেকে মে পর্যন্ত অর্থাৎ ১১ মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। সেখানে এখন পর্যন্ত এনবিআর আদায় করতে পেরেছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। 

আলোচ্য সময়ে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এ অবস্থায় অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশের বেশি হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত অর্থাৎ ১১ মাসে এনবিআরের কাস্টমসে ৭০ হাজার ৭০৭ কোটি টাকার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৫৯ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট) এ ১১ মাসের ৯০ হাজার ২১৬ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭৯ হাজার ১০১ কোটি টাকা। 

আয়কর থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। আলোচ্য সময়ে আয়কর ৮০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৬০ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা। তবে গতমাসের তুলনায় এনবিআরের রাজস্ব আদায় বেড়েছে। গত এপ্রিল মাসে রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনে ঘাটতি দেখা দেয়। এর বিপরীতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআর একটি কমিটি গঠন করে। যার কারণে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি এক মাসে ৭ শতাংশ থেকে ১১ শতাংশে উন্নীত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের কর প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য ও রাজস্ব আদায় বাড়ানো নিয়ে গঠিত কমিটির প্রধান সদস্য কালিপদ হালদার দৈনিক জাগরণকে বলেন, আসলে আমরা রাজস্ব আদায়ের প্রচেষ্টা সর্বদা অব্যাহত রাখি। গত ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের কারণে রাজস্ব আদায়ে শ্লথগতি দেখা দিয়েছিল। তবে এনবিআর এসব বিষয় কাটিয়ে উঠছে। আশা করি, বছর শেষে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে। তবে ১২ শতাংশের নিচে নামবে না। এখন রাজস্ব আদায় না হলে কমিশনাররা উদ্বিগ্ন হন। এর ফলে রাজস্ব আদায়ে গতি এসেছে।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। বিশ্বের যে তিনটি দেশের কর-জিডিপি সবচেয়ে কম রয়েছে তাদের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। যা দেশের অর্থনীতির সঙ্গে পাল্লা দিতে কর-জিডিপি আরও বাড়ানো উচিত। আর প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। তবে নানা স্তরের কারণে আগামীতেও রাজস্ব আদায়ে শ্লথগতি দেখা দিতে পারে। তাই করের আওতা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এনবিআরের জনবল বৃদ্ধি ও সক্ষমতা বাড়ানো পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। 

এ প্রসঙ্গে মতামত জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন দৈনিক জাগরণকে বলেন, বিশ্বের তিনটি কম কর-জিডিপি রয়েছে এমন দেশের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ। তাই এনবিআরে উচিত কর রেশিও বাড়ানো। এছাড়া আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে বড় ধরনের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে অস্পষ্টতা রয়েছে। তা কাটানোর পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের সক্ষমতা অর্জনের মতো জনবল তৈরি করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যতে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে এক ধরনের জটিলতা বা সমস্যা সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ।

এআই/এসএমএম/টিএফ