• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০১৯, ০৯:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৯, ২০১৯, ০৯:০৮ পিএম

‘পাওনা আদায়ে গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ কমানো হয়েছে’

‘পাওনা আদায়ে গ্রামীণফোন ও রবির ব্যান্ডউইথ কমানো হয়েছে’

টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে দুটির অডিট হয়েছে (গ্রামীণফোন ও রবি) এবং অন্য যারা আছে তাদেরও অডিট হবে। পাওনা আদায় করার জন্য কঠোরতম ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন এবং রবির দুটি প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে। এই পাওনা আদায়ের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর সর্বশেষ পদক্ষেপটি হচ্ছে- তাদের যে ব্যান্ডউইথ রয়েছে গ্রামীণ ফোনের জন্য এর ৩০ ভাগ ও রবির জন্য ১৫ ভাগ গ্যাপিং (কমিয়ে দেয়া) করা হয়েছে। তাদের বলা হয়েছে অবিলম্বে যেন তারা পাওনা পরিশোধ করে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সংসদে বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের কাছে সরকারের পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা বিষয়ে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের জন্য এটি দুঃখজনক যে, আমরা কোনো অপারেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাই- তারা যখন আদালতে যায় তখন পুরো প্রসেসটাই বিলম্বিত হয়ে যায়। এ কারণে দীর্ঘ সময় ধরে এই বকেয়াটা রয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগের শামীম ওসমানের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, গ্রামীণফোন বা রবিসহ বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট অপারেশনে যেসব সংস্থা কাজ করে তারা সরকারকে বিভিন্নভাবে যে কর দেয় তা তাদের গ্রস রেভিনিউর শতকরা প্রায় ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ ১০০ টাকা তারা রেভিনিউ গ্রস হিসেবে আয় করে তার অর্ধেকটা সরকারের রাজস্বখাতে এমনিতেই যায়। আমরা অডিট করতে গিয়ে গ্রামীণফোন ও রবির ক্ষেত্রে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি যে এই পাওনাটা হচ্ছে প্রচলিত পদ্ধতিতে তারা যেভাবে সরকারকে রাজস্ব দিয়ে আসছিল, এর বাইরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর ফাঁকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। অডিট করতে গিয়ে এই কর ফাঁকির বিষয়টি উদ্ধার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে গ্রামীণফোনের কথা উল্লেখ করতে গেলে বলা যায়- তাদের কাছে মূল পাওনা আসলে ৪ হাজার কোটি টাকার মতো। কিন্তু যেহেতু তারা এই কর দেয়নি এবং এক্ষেত্রে সারচার্জ এবং সুদ সবকিছু মিলিয়ে ১২ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি বলেন, ধরা যাক অর্থ প্রদান না করার জন্য গ্রামীণফোনের লাইসেন্স বাতিল করে দিলাম। কিন্তু এতে চাপটি পড়বে দেশের জনগণের ওপর। ফলে জনগণের ব্যবস্থাটি সঠিক রেখেই তারপরে যেন আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারি সেটি চিন্তা করতে হয়। এটা ঠিক- আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটক বিকল্প হিসেবে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারলে যে কারো বিরুদ্ধেই কঠোরতম পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব ছিলো। তারপরেও রাষ্ট্রীয় অর্থ আদায় করার জন্য আমরা আইনগত দিক থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানিকভাবে ব্যবস্থা- সমস্ত কিছুর জন্য সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।

মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমাদের উপলব্ধি করার বিষয় হওয়া উচিত যে টেলিটকের মতো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কী কারণে সমকক্ষতা অর্জনের ধারে-কাছেও যেতে পারেনি। বরং বাংলাদেশের মোবাইল মার্কেটের তলানিতে বসে আছে।

তিনি বলেন, একটু তুলনা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে যে গ্রামীণফোন বাংলাদেশে ৪০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আর গত বছর পর্যন্ত আমি হিসাব নিয়ে দেখেছি টেলিটকের বিনিয়োগ ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

এক সময়কার বিটিটিবিকে ভেঙে যে কয়টি কোম্পানি করা হয়েছে এর মধ্যে একটি বিটিসিএল, যেটি ফিক্সড ফোনের জায়গায়। আর টেলিটক মোবাইল অপারেটরের কাজ করছে। এই জায়গটার ক্ষেত্রে ভেঙে ভেঙে কোম্পানি করার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে- মাননীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে আমি একমত হয়ে মনে করি, একত্রিতভাবে দুটি প্রতিষ্ঠান থাকলে তার শক্তি অনেক বেশি হতে পারবে। তবে, ভালো খবর হচ্ছে গত দেড় বছরে টেলিটকের যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে তাতে আমরা প্রত্যাশা করতে পারি এর দুর্বল অবস্থা অচিরেই কাটিয়ে উঠবে। টেলিটকের সঙ্গে বেশ কয়েকটি দেশ বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করছে উল্লেখ করে এটি পর্যালোচনা পর্যায়ে আছে বলেও মন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে যার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করা সুবিধাজনক হবে নিশ্চয়ই আমরা গ্রহণ করব। একইসঙ্গে বিটিসিএলের যেসব প্রযুক্তিগত সুবিধা রয়েছে তাতে টেলিকটকে সম্পৃক্ত করা গেলে এতে উভয় প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবে। এই বিষয়ের প্রতি আমরা নজর দিচ্ছি। 

এইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন