• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০১৯, ০৯:১৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ২৩, ২০১৯, ০৯:২৫ এএম

পুঁজিবাজারে দরপতন অব্যাহত

৬ মাসে বাজার মূলধন হারিয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা 

৬ মাসে বাজার মূলধন হারিয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা 

স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানির অংশীদারিত্ব কেনেন বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানির ভবিষ্যৎ বিশ্লেষণে বিনিয়োগের পর শেয়ারের দর বাড়লে বিনিয়োগকারীরা ক্যাপিটাল গেইন করে। নতুবা বছরান্তে কোম্পানির ঘোষিত ডিভিডেন্ড থেকে ডিভিডেন্ড গেইন করে তারা।

কিন্তু গত মে মাসে স্টক ডিভিডেন্ড প্রদানে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পাশাপাশি বাজেটেও স্টক ডিভিডেন্ড রহিত করণে নেয়া হয় শক্ত ব্যবস্থা। এ কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো ভবিষ্যৎ ভাবনায় বিনিয়োগকারীরা বিপাকে পড়েছেন। ফলে ক্রম দরপতনে বিগত ৬ মাসে বাজার মূলধন হারিয়েছে ৪৮ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে প্রাণ বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু আস্থা সংকটের কারণে পুঁজিবাজারে বাড়ছে তারল্য সংকট। তাই সম্প্রতি ইয়ার ইন্ড হওয়া ১৭১ কোম্পানির শেয়ারেও আগ্রহ নেই বিনিয়োগকারীদের।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, নির্বাচন পরবর্তী সময় পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতার প্রত্যাশায় ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে পুঁজিবাজার। যা অব্যাহত ছিল চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।

কিন্তু ২৯ জানুয়ারির পর দরপতন শুরু হয়। তবে ২০১৯-২০ সালের বাজেট ঘোষণার আগ মুহূর্তে ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। কিন্তু চলতি মাসে প্রথম থেকে টানা দরপতন অব্যাহত রয়েছে। বিগত ১০ কার্যদিবসেই সূচক কমেছে পুঁজিবাজারে।

সোমবার লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা, যা গত ২৯ জানুয়ারির লেনদেন শেষে ছিল ৪ লাখ ২১ হাজার ৫৮১ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৬ মাসের ব্যবধানেই বাজার মূলধন উধাও হয়েছে ৪৮ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, বাজার কোনো সূত্রই মানছে না। স্বাভাবিক নিয়মে সূচক বাড়লে কারেকশন হবে। ঠিক তেমনই সূচক বা দর কমলে বিনিয়োগকারীরা সুযোগ নেবে। কিন্তু পুঁজিবাজারে অব্যাহত বিক্রয় চাপ চলছে। সূচকও ৫ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে এসেছে।

বাংলদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান-উর-রশীদ চৌধুরী বলেন, বিনিয়োগারীদের দেখার কেউ নেই। বাজারের প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর গড়ে ৩০-৩৫ শতাংশ লস। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনও দরপতনের কারণ খুঁজে বের করতে পারেনি।

জানা যায়, সোমবার (২২ জুলাই) ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৫৩টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ২৭৭টির এবং দর অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি প্রতিষ্ঠানের। এ সময় ডিএসইতে ১৬ কোটি ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৬০৫টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৬৭.৩০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৬৬ পয়েন্টে। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর ডিএসই’তে সূচক ছিল ৪৯৯৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ পুঁজিবাজারে আজ ৩৩ মাসের সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে।

অপরদিকে, শরিয়াহ সূচক ১৮.৩৩ পয়েন্ট ও ডিএস-৩০ সূচক ২৩.২৬ পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১ হাজার ১৩৯ ও ১ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন ডিএসইতে ৪৬৪ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৬৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সাধারণ মূল্য সূচক সিএসইএক্স ১১৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৯ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৮৬টি কোম্পানির ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫১টির, কমেছে ২১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির। আর দিন শেষে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ১৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।


এআই/একেএস

আরও পড়ুন