• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৯:৩৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৩০, ২০১৯, ০৯:৩৩ এএম

যন্ত্রপাতির ঘোষণায় মদ আমদানি, আমদানিকারকের ক্ষমা প্রার্থনা

যন্ত্রপাতির ঘোষণায় মদ আমদানি, আমদানিকারকের ক্ষমা প্রার্থনা

চট্টগ্রাম বন্দরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি আমদানির ঘোষণা দিয়ে মদ ও অন্যান্য নিষিদ্ধ পণ্য নিয়ে আসার ঘটনায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষমা চেয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড। তাদের ভাষ্য, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নয় চীনা নাগরিকদের জন্যই মাদকসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আসা হয়। 

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড কিংবা শেড়ে জব্দকৃত মাদক এবং মেশিনারি পণ্য ইনভেন্ট্রি না করে কাস্টমস এর নিলাম শেড়ে এসব পণ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য কাস্টমস কমিশনারকে চিঠি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছে এতগুলো পণ্য কাস্টমস এর নিলামে শেড়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। 

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জানান, বন্দরে মেশিনারি পণ্যের চালানে মদ আমদানি করার ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দরের শেড় কিংবা ইয়ার্ডে পণ্যগুলো না রাখার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কারণ চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে প্রতিনিয়ত পণ্য উঠানামা করে। এতগুলো পণ্য বন্দরের ভেতর ইনভেন্ট্রি করতে গেলে বন্দরের অপারেশনাল কাজে ব্যাঘাত ঘটবে। সেজন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অকশন শেড়ে নিয়ে ওই পণ্যগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান। 

এদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরের এই চিঠিকে অযৌক্তিক বলে দাবি করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি ২টি লাইটারেজ জাহাজ ও একটি বার্জ ভর্তি পণ্যগুলো কাস্টমস এর অকশন শেড়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বন্দরের ওই চিঠির প্রতি উত্তরে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ একটি চিঠি দেবেন। 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার- ২ কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, রোববার (২৮ জুলাই) বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানীর প্রতিনিধিরা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে এসেছিলেন। তারা মেশিনারি পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়ে মাদক ও ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য নিয়ে আসার জন্য মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছে। লিখিত ক্ষমা প্রার্থনার একটি ড্রাফটও নিয়ে আসে। মঙ্গলবার এ বিষয়ে তারা লিখিতভাবে কাস্টম কমিশনারের কাছে ক্ষমা চাইবে। চায়না যেহেতু বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার এবং মেশিনারি পণ্যগুলো পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য আমদারি করা হয়েছে সেই বিবেচনায় মেশিনারি পণ্যগুলো যাতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ছাড়া যায় সেটি বিবেচনা করা হবে। অন্যদিকে মদ বিয়ারসহ যেসব নিষিদ্ধ পণ্য নিয়ে আসা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে কাস্টম আইন অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে। 

বন্দরের অভ্যন্তরে  জব্দকৃত পণ্যের ইনভেন্ট্রিতে বন্দর কর্তৃপক্ষের আপত্তির বিষয়ে কাজী মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমি (সোমবার) কাস্টম হাউজের অকশন গুদাম পরিদর্শন করেছি। স্থান সংকুলান না থাকায় সেখানে এতগুলো পণ্য নিয়ে আসা সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ থেকে বন্দরকে চিঠি দেওয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, চীনের সাংহাই থেকে আট চালানে ৬৬৯শ প্যাকেটে ১ হাজার ৪শ ৬ মেট্রিকটন ক্যাপিটাল মেশিনারি নিয়ে এমভি কিউ জি শান নামের একটি মাদার ভ্যাসেল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। বন্দরের ৩ নম্বর জেটিতে বার্থিং নেওয়ার পর বার্জ খালাস করার সময় ধরা পড়ে মাদকের এই বিশাল চালান। কার্টন খুলতেই একের পর এক বেরিয়ে আসে মদ বিয়ার ভর্তি ক্যান। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পণ্য খালাসকালে কাস্টমস কর্মকর্তাদের হাতে আটক হয় চালানটি। চালানটি খালাসের দায়িত্বে ছিল সিএন্ডএফ এজেন্ট বিপাশা এন্টারপ্রাইজ। এরপর চালানগুলো সাময়িক আটক করে চট্টগ্রাম কাস্টম কর্তৃপক্ষ।

কেএসটি
 

আরও পড়ুন