• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ১৬, ২০১৯, ০৮:২৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১৬, ২০১৯, ১০:১৫ পিএম

মিরপুরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুন

মিরপুরে বস্তিতে ভয়াবহ আগুন
মিরপুরে ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন -ছবি : কাশেম হারুন

রাজধানীর মিরপুর ৭ নম্বর সেকশনে ঝিলপাড় বস্তিতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রূপনগর থানার পেছনে চলন্তিকা মোড়ে অবস্থিত বস্তিতে সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে লাগা আগুনে আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 

ঢাকা মহানগর ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে কর্তব্যরত কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ২৮ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খুব দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। পর্যায়ক্রমে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের ১১৫ জন কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজে যোগ দিয়েছেন।

অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এই আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে। তবে এখনও কারণ নিশ্চিত নয়।

ঝিলপাড়ের বস্তির চারদিকে বহুতল ভবন থাকার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়িগুলো সরাসরি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারছে না। এ ছাড়া বস্তির পাশে গাড়ি চলাচলের জন্য কোনও রাস্তাও নেই। বাতাসের কারণে আগুন বহুতল ভবনের দিকে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পৌণে ১০টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভানোর যন্ত্রপাতি নিয়ে বস্তির ভেতরে প্রবেশ করেছেন।

আগুন লাগার ঘটনায় কান্না ভেঙ্গে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীরা। অসহায় বস্তিবাসীদের কান্না-আহাজারিতে হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। সহায়-সম্বল হারিয়ে মুর্হূতেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। যারা আগুন থেকে বেঁচে গেছেন, তারাও স্বস্তিতে নেই। আতঙ্কিত হয়ে এদিক সেদিক ছুটোছুটি করছেন শেষ সম্বলটুকু নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। 

ঈদের কারণে বস্তির অনেক বাসিন্দা গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করার তেমন হতাহতের শঙ্কা নেই। তবে বেশিরভাগ ঘর তালাবন্ধ থাকায় আগুনে সব কিছু পুড় ছাই হয়ে গেছে। লোকজন না থাকায় সহায়-সম্বলটুকু রক্ষার তৎপরতা দেখা যায়নি।

হতাহতের বিষয়ে জানতে চাইলে রূপনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম রাব্বানী জানান, এখন তেমন কিছু বোঝা যাচ্ছে না। আগুণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর ক্ষয়-ক্ষতি ও হতাহতের তথ্য পাওয়া যাবে। 

ঘটনাস্থলে আগুনের তথ্য দিয়ে একটি বোর্ড টানিয়ে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।

আগুনে আহত না হলেও বিদুৎতায়িত হয়ে কয়েক আহত হয়েছেন বলে একাধিক সূত্র জানা গেছে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, আগুন নেভাতে গিয়ে তাদের একজন কর্মী আহত হয়েছেন। 

স্থানীয়রা বলছেন, বস্তিতে ৭ থেকে সাড়ে ৭ হাজার বস্তিঘর রয়েছে। এ সকল বস্তিঘরগুলো টিন ও বাঁশের তৈরি। পাশাপাশি প্লাস্টিকের এবং পলিথিনের ছাউনি ছিল। তাই আগুন লাগার খুব অল্পসময়ের মধ্যে গোটা বস্তির সকল ঘর ভস্মিভূত হয়ে গেছে।

বস্তির পাশে একটি ছয়তলা ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় জামে মসজিদ ও বিজিএমইএ নতুন ভবনের কিছু অংশে আগুন লেগেছে। দমকল বাহিনী ছয়তলা ভবন, একটি গার্মেন্টস, একটি জামে মসজিদ এবং বিজিএমইএ নতুন ভবন বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।

আগুন লাগার পরই রাজধানীর রূপনগর, মিরপুর, পল্লবী এবং কাফরুল থানার পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে লোকজনকে সরিয়ে দিচ্ছেন। র‌্যাবের সদস্যরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বস্তির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। কাজ করছে ঢাকা ওয়াসাও। 

আগুন লাগার পর প্রায় তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা যায় নি। ধারণা করা হচ্ছে, আগুনে বস্তির সব ঘর পুড়ে ছাই হয়েছে। আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পূর্ব থেকে উত্তরপাশে। বস্তির গা ঘেঁষা থাকা ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে আগুন। দমকল কর্মীরা সংশ্লিষ্ট ভবনগুলো এবং মসজিদ বাঁচাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। 

বস্তি লাগোয়া জামে মসজিদের এয়ারকুলার আগুনে তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

স্থানীয় লোকজন বলেন, এ ঝিলপাড় চলন্তিকা বস্তিতে প্রায় ৫০ হাজার লোকজন বসবাস করতেন। 

ছবি ● কাশেম হারুন

এইচএম/এসএমএম

আরও পড়ুন