• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০১৯, ০২:১৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৪, ২০১৯, ০২:১৫ পিএম

ঊর্ধমুখী নিত্যপণ্যের বাজার, বিপাকে ভোক্তা

ঊর্ধমুখী নিত্যপণ্যের বাজার, বিপাকে ভোক্তা

নিত্যপণ্যের ঊর্ধগতিতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। সরবরাহ থাকলেও বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না। এছাড়া বাজার মনিটরিং টিমের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকার কারণে বাজারের লাগাম টানা যাচ্ছে না। কিছু সময় এই টিমের হাকডাক শোনা গেলেও বছরের অধিকাংশ সময় থাকে নিষ্ক্রিয়।

তবে বরাবরে মতো বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর পাইকারি বাজারে পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় বাড়তি দাম। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে পণ্যের ঘাটতি না থাকলেও মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার আশায় নানা অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। নিয়মিত বাজার তদারকি করলে, সব কিছু নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও মনে করেন তারা। শনিবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, মালিবাগ, খিলগাঁও, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি বাজার ঘুরে এ চিত্র উঠে এসেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব বাজারে পর্যাপ্ত সবজির সরবরাহ রয়েছে। মৌসুম না হলেও বাজারে রয়েছে শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি, ফুল কপি, গাজর, শসা, টমেটো, বেগুনসহ আরও হরেক রকম সবজি। এর পরও সবজির দাম বেশ চড়া। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মসলাজাতীয় পণ্যে। মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমলেও বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। অন্যদিকে ইলিশের ভরা মৌসুম হলেও এখনও সাধ্যের মধ্যে নেই ইলিশের বাজার, তবে অন্য মাছের দাম অপরিবর্তিত আছে। বেড়েছে মিনিকেট, নাজিরশাল চাল ও খোলা ভোজ্যতেলের দাম। অপরিবর্তিত আছে ডিম ও ডালের দাম।

বাজারে প্রতি কেজি পটল ৫০ - ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ - ৭০ টাকা, উচ্ছে ৬০ - ৮০ টাকা, করলা ৬০ - ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৭০ - ৯০ টাকা, বেগুন ৫০ - ১০০ টাকা, ঢেঁরস ৪০ - ৫০ টাকা, শসা ৮০ - ১২০ টাকা, কচুর ছড়া ৬০ - ৮০ টাকা, কচুর লতি ৬০ - ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ - ৫০ টাকা, টমেটো ১২০ - ১৪০ টাকা, গাজর ৯০ - ১২০ টাকা, বাঁধাকপি ও ফুল কপি প্রতি পিস ৫০ - ৬০ টাকা, কলার হালি ৩০ - ৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ - ৯০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৪০ - ৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

শান্তিনগর কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, ঈদের আগে পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ থাকলেও এখন অনেকটা কম। পাইকারি বাজারে সবজির সরবরাহ কম থাকায় অনেক আড়ৎ বন্ধ আছে। তাই দাম কিছুটা বাড়তি রয়েছে। তার মতে, কয়েকদিন পর বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়তে পারে, তখন দাম কমবে। তবে তার কথার সঙ্গে একমত নন ক্রেতা জিনিয়া বেগম। তিনি বলেন, এখন শীত না হলেও শীতের সব সবজি পাওয়া যাচ্ছে, তাহলে দাম বেশি হবে কেন? বাজারে কোনো সবজির ঘাটতি নেই। এখানে ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফা লাভের আশায় নিজেরাই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। সরকারিভাবে বাজার তদারকি করলে সব কিছুর দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ - ৭০ টাকা দরে। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৪৫ - ৫৫ টাকা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ - ৫০ টাকা কেজি দরে। এক সপ্তাহ আগে তা বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে। একইভাবে কেজিপ্রতি ১৫ - ২৫ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে রসুন। এসব বাজারে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, ভারত থেকে আমদানি করা রসুন ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে। প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ১০ টাকা। দেশি আদা ২০০ থেকে ২১০ টাকা, আমদানি করা আদা (মোটা) ২০০ থেকে ২২০ টাকা। এদিকে, ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরের কাঁচা মরিচ এখন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মসলা ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর নতুন করে বাজারে মালামাল না আসায় সংকট দেখা দিয়েছে। মোকামে সব পণ্যের দাম চড়া হওয়ায় খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।

বাজারে দাম কমেছে সব রকম মুরগির। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১২০ - ১৪০ টাকা, লেয়ার ১৮০ - ১৯০ টাকা,  সোনালি ১৯০ - ২০০ টাকা। ঈদের আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা আর মহিষের মাংস ৫৮০ টাকা। খিলগাঁও বাজারের মাংস ব্যবসায়ী আলম জাগরণকে বলেন, ঈদের আগে গরুর সরবারহ বেশি থাকায় দাম কম ছিল। এখন গাবতলীর হাটে হাসিল খরচ বেড়েছে। গরুর আমদানির তুলনায় মাংসের চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম বাড়তি।

এআই/ এফসি

আরও পড়ুন