• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২, ২০১৯, ০৮:৪৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২, ২০১৯, ০৮:৫০ এএম

অনলাইন ক্যাসিনো আয়ের সিংহভাগ পেতেন তারেক রহমান

অনলাইন ক্যাসিনো আয়ের সিংহভাগ পেতেন তারেক রহমান
বিপুল পরিমাণের মদ, টাকাসহ গ্রেফতার সেলিম প্রধান-ফাইল ছবি

অনলাইন ক্যাসিনোর মূল হোতা সেলিম প্রধান ক্যাসিনো থেকে আয়ের সিংহভাগ টাকা লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য পাঠাতেন। পাশাপাশি তারেক রহমানের ব্যবসায়িক পার্টনার কারাবন্দি গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের মামলার খরচও দিতেন এই সেলিম প্রধান। এ তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

র‌্যাব সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম জানান, ক্যাসিনো থেকে আয়ের টাকা সিলন ব্যাংকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে পাচার হতো বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে। সেলিম প্রধান তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মামুন ও তারেক জিয়ার নামে সেলিম প্রধান লন্ডনে টাকা পাঠাতেন। মামুনের মামলা চালানোর খরচও পাঠাতেন সেলিম। প্রাথমিকভাবে এ তথ্য পেয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিকালে সারোয়ার বিন কাশেম আরও জানান, অভিযুক্তদের বাসা ও অফিসে অপারেশন শেষে নানা রকম তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। সে সব তথ্যাদি যাচাই-বাছাই শেষে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেলিম প্রধান ছাড়াও আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হচ্ছে আক্তারুজ্জামান ও আবদুর রহমান। আদালত বন্যপশু সংরক্ষণ আইনে তাদের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। 

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, সাইবার মনিটরিং সেলের তথ্যমতে আমরা জানতে পাই, দেশে কিছু অসাধু ব্যক্তি অনলাইনে ক্যাসিনো গেমিংয়ে নিয়োজিত রয়েছেন। এ অনলাইন গেমিং এর মূল সমন্বয়ক সেলিম প্রধান। সে দেশ থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল খবর পেয়ে আমরা তাকে বিমান থেকে নামিয়ে আনি। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে তার গুলশানের বাসা ও বনানীর অফিসে অভিযান চালাই। অভিযান চালিয়ে ৪৮টি মদের বোতল পাওয়া গেছে। জব্দ করা হয়েছে ২৯ লাখ ৫ হাজার ৫০০ নগদ টাকা। এর মধ্যে তার বাসা থেকে পাওয়া গেছে ৮ লাখ টাকা আর বনানীর অফিস থেকে ২১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তা ছাড়া ২৩টি দেশের ৭৭ লাখ ৬৩ হাজার টাকা সমমূল্যের মুদ্রা, ১৩ টি ব্যাংকের ৩২টি চেক জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে অনলাইন ক্যাসিনো খেলার মূল সার্ভার, আটটি ল্যাপটপ। দুটি হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়েছে।

সারোয়ার বিন কাশেম জানান, সেলিম প্রধান তার ভাইয়ের হাত ধরে ১৯৮৮ সালে জাপানে যান। সেখানে গিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে গাড়ির ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তীতে জাপানিদের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর সেখান থেকে সে থাইল্যান্ডে চলে যান। সেখানে শিপ ইয়ার্ডের ব্যবসা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে জাপানিদের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। যার নাম মিস্টার দু। এ মিস্টার দু সেলিমকে বাংলাদেশ একটি কনস্ট্রাকশন সাইট খোলার প্রস্তাব দেয়। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ একটি অনলাইন ক্যাসিনো খেলার পরামর্শ দেন। সেই সূত্র ধরে সেলিম প্রধান টি-২১ এবং পি২৪ নামে অনলাইন গেমিং সাইট চালু করে। এর মূল কাজ হচ্ছে টাকার মাধ্যমে খেলা।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, জব্দকৃত কাগজপত্র ও সার্ভার পর্যালোচনা করে দেখতে পেয়েছি এই অনলাইন খেলার মাধ্যমে তাদের প্রতিমাসে ৯ কোটি টাকা আয় হতো। এসব টাকার অর্ধেক কোরিয়া ও বাংলাদেশের যারা সম্পৃক্ত তারা পেত। সেলিম প্রধানের বাসা থেকে হরিণের চামড়া পাওয়ায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, টাকা জব্দের ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইন ও মদ পাওয়ায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করা হয়েছে। এ সব মামলায় সেলিম প্রধান ও তার দুই সহযোগী আক্তারুজ্জামান ও আবদুর রহমানকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

এইচএম/এসএমএম

আরও পড়ুন