• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০১৯, ১২:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১১, ২০১৯, ১২:২৩ পিএম

চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপো ২০১৯ অনুষ্ঠিত

চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপো ২০১৯ অনুষ্ঠিত
চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপো- ২০১৯ এ বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি দল -ছবি : জাগরণ

চীনের সাংহাই শহরে দ্বিতীয় চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপো ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বাংলাদেশ সরকারের ৯টি প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। এক্সপোটির উদ্বোধন করেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং।

৫ থেকে ১০ই নভেম্বর পর্যন্ত চায়না সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সাংহাই পৌর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যেগে সাংহাই এর জাতীয় সম্মেলন ও প্রদর্শনী কেন্দ্রে এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়।

এক্সপোতে ৬টি আলাদা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন- বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকরা। পুরো প্রদর্শনীকে ৭টি ভাগে করা হয়। এতে দেড়শ দেশের প্রায় ৩ হাজার প্রতিষ্ঠানের স্টল দেয়া হয়। খাবার, তৈরি পোশাক, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থেকে চিকিৎসা বিজ্ঞান সামগ্রী ও নতুন উদ্ভাবনের প্রদর্শনী হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল সিআইআইই হং ছিয়াও ফোরামে এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর পরিচালক (টেক্সটাইল) মো. শামসুউদ্দীন আহমেদের পরিচালনায় ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে অংশগ্রহণ করে। চীনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন।

 

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান গুলো হল- বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃকক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন কর্তৃপক্ষ (জেডিপিসি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর ডিরেক্টর জেনারেল অভিজিত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তা আরও দীর্ঘস্থায়ী করতে সরকারের পলিসি ও নীতি অনুযায়ী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো ব্যবস্থাপনায় আমরা এবার চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপো অংশগ্রহণ করেছি। পরপর দু’বার এক্সপো অংশগ্রহণ করার ফলে চায়না সরকার সঙ্গে আমাদের আরও গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এক্সপোতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি আসার ফলে বাংলাদেশকে তাদের কাছে উপস্থাপন করতে পেরেছি।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এর চেয়ারম্যান মো. মোস্তাক হাসান এনডিসি বলেন, চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইমপোর্ট এক্সপোতে আমরা বেসিক এর তরফ থেকে এসেছি। উদ্দেশ্য হল বেসিককে প্রমোট করা। বেসিক সম্প্রতি একটি মেগা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পরিকল্পনা অংশ হিসাবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ হাজার একর জমির মধ্যে ৫০টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন। বেসিক পক্ষ থেকে আমরা ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান করবো। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কগুলোতে দেশীয় উদ্যোক্তার পাশাপাশি বিদেশি উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করতে চাই।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) এর পরিচালক (টেক্সটাইল), মো. শামসুউদ্দীন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে আমরা চায়না সরকারের যথেষ্ট সহযোগিতা পেয়েছি। আমাদের আসা যাওয়া ও থাকার ব্যাপারে সহযোগিতা পেয়েছি। বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে বাংলাদেশ সরকারের ৯টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে এবং তাদের প্রত্যেকে প্রকাশনা ও পণ্য নিয়ে এসেছে। আমি আশাবাদী চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইম্পোর্ট এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশের এক্সপোর্ট  আরেও বাড়বে।

বাংলাদেশ এম্বাসি, বেইজিং এর কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোহাম্মদ মনসুর উদ্দীন বলেন, কান্টি প্যাভিলিয়নে গতবারের মত এবারও চায়না ইন্টারন্যাশনাল ইম্পোর্ট এক্সপোতে বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে। কোম্পানি পর্যায়ে বিজেএমসি ও দাদা বাংলা এই দুইটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টার (আইটিসি) প্যাভিলিয়নে এসএমই পর্যায়ে৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।  

চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং শাংহাইয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক আমদানি মেলায় বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের ৫টি পদক্ষেপ ঘোষণা দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে বাজার উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণ করা, উন্মুক্তকরণের কাঠামো পূরণ করা, ব্যবসা পরিবেশ উন্নত করা, বহুপক্ষীয় ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা গভীরতর করা এবং অব্যাহতভাবে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ নির্মাণ করা। তিনি বিশ্বাস করেন চীনের অর্থনীতির ভবিষ্যত আরও সুউজ্জ্বল হবে।

তিনি আরও বলেন, ইতিহাস থেকে দেখা যায়, চীনের উন্নয়ন মানবজাতির অগ্রগতির এক মহান কর্তব্য। বিভিন্ন দেশের বাজার, পুঁজি বিনিয়োগ, অর্থনীতির বৃদ্ধির সুযোগ দিতে উন্মুক্ত করবে চীন।

এছাড়াও তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বের ১৩৭টি দেশ ও ৩০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চীন। চীন অব্যাহতভাবে ‘এক অঞ্চল এক পথ’ নির্মাণ করবে, অভিন্ন পরামর্শ, গঠন ও উপভোগের ভিত্তিতে উন্মুক্ত, সবুজ চেতনায় অবিচল থাকবে। ভবিষ্যতের দিকে দাঁড়িয়ে চীন উন্নয়নের নতুন চেতনার ভিত্তিতে অব্যাহতভাবে সৃজনশীলতার মাধ্যমে উন্নয়ন বাস্তবায়নের কৌশল কার্যকর করবে এবং কাঠামো সুবিন্যস্ত করে অর্থনীতির উচ্চ গুণগত মানের উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবে।

আমন্ত্রিত হয়ে দ্বিতীয় আমদানি মেলায় অংশগ্রহণকারী ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাকখোঁ বলেন, চীনের সংস্কার ও উন্মুক্ততার ৪০ বছরের মধ্যে যে লক্ষ্যণীয় সাফল্য অর্জিত হয় তা মানবজাতির ইতিহাসের বৃহত্তম মহান ঘটনা।

২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ প্রদর্শনীতে ৫ হাজার ৭৮০ কোটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছিল। 

সিআইআইই হং ছিয়াও ফোরামে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন- সালমান এফ রহমান এমপি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের  বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। মাহবুব উজ জামান, রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশ এম্বাসি, বেইজিং, চায়না। অভিজিত চৌধুরী, ডিরেক্টর জেনারেল, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। জিল্লুর রহমান, সদস্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরন এলাকা কর্তৃকক্ষ (বেপজা)। মো. মোস্তাক হাসান এনডিসি, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক)। মো: শামসুউদ্দীন আহমেদ, পরিচালক (টেক্সটাইল), রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। মিরাজুল ইসলাম উকিল, ডেপুটি সেক্রেটারি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মোহাম্মদ মনসুর উদ্দীন, কমার্শিয়াল কাউন্সিলর, বাংলাদেশ এম্বাসি, বেইজিং, চায়না।

বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা হলেন- মো. মোস্তাক হাসান এনডিসি, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক), মো. মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-সচিব, পরিচালক (বিপণন ও নকশা), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। মো. খুরশিদ আলম পাটওয়ারী, উপ-সচিব, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), মো. মুস্তাফিজুর রহমান, ব্যবস্থাপক (ওএসএস ও সমন্বয়) বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), মো. মাহে আলম ভূইঁয়া, সহকারী ব্যবস্থাপক (হিসাব ও অর্থ), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। নিলুফার ইয়াসমিন, উপপরিচালক (অর্থ) বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। নাসির উদ্দিন আহম্মেদ, উপ-সচিব, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ, হিরণ বড়ুয়া অভি, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। মো. রায়হান ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরন এলাকা কর্তৃকক্ষ (বেপজা), জিল্লুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব, সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃকক্ষ (বেপজা), মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, উপ-ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃকক্ষ (বেপজা)। মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন হায়াত, ব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, মো. আবু ইউসুফ পাটওয়ারী, এক্সিকিউটিভ অফিসার, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। জীবন কৃষ্ণ সাহা রায়, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), মো. আতিক সরকার, সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। আমিন আহমেদ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন কর্তৃপক্ষ (জেডিপিসি)। মো. আব্দুল লতিফ বকসী, পাবলিক রিলেশন অফিসার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

একএস