• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০১৯, ০৪:৩১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৫, ২০১৯, ০৪:৩১ পিএম

পেঁয়াজ বাজারের দাবানল, প্রতি কেজি ২৫০ টাকা

পেঁয়াজ বাজারের দাবানল, প্রতি কেজি ২৫০ টাকা

রাজধানীতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। দেশজুড়ে বাজারে অভিযান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আশ্বাস, বড় চালান আসার খবর—কোনো কিছুই থামাতে পারছে না পেঁয়াজের দরবৃদ্ধিকে।  খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসে নাভিশ্বাস ক্রেতাদের। দামের এ অসহনীয় অবস্থার জন্য সিন্ডিকেটকে দায়ী করছে সরকার। আড়তদাররা বলছেন সরবরাহ সংকটের কথা।  সরবরাহ না বাড়িয়ে বাজার মনিটরিং করলে দাম আরও বাড়বে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, শান্তিনগর, শ্যামবাজার, যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল কাঁচাবাজার, কাপ্তানবাজার আর উত্তরায় ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের কেজি যে ২০০ টাকা ছিল— তা যেন সুদূর অতীত। একটু খারাপ মানেরও যে পেঁয়াজ, সেটাও মিলছে না ২২০ টাকার নিচে। কিছু কিছু দোকানো দেশি পেঁয়াজের দেখা মিলছে, তার দাম ২২০ টাকা, কোথাও ২৫০ টাকা!

বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ না থাকায় তাদের কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে যেসব ব্যবসায়ীর কাছে পেঁয়াজের মজুদ আছে, তারা আরও বেশি লাভের আশায় ধীরে ধীরে সেসব পেঁয়াজ বাজারে ছাড়ছেন— এমনটিও জানালেন তারা।

সকাল সাড়ে ৮টায় শ্যামবাজারের আড়তে বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কোনো গুদামে পেঁয়াজ আছে, কোনো গুদামে নেই। যেসব গুদামে পেঁয়াজ আছে, সেখানে দাম চড়া। মিয়ানমারের পেঁয়াজ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি ২১০ থেকে ২২০ টাকায়।

শ্যামবাজারের ছোট আড়তদারদের চিত্র আরও ভয়াবহ। এক পাল্লার (৫ কেজি) নিচে পেঁয়াজ বিক্রিই বন্ধ হয়ে গেছে। আর এক পাল্লা দেশি পেঁয়াজের দাম পড়ছে ১২০০ টাকা থেকে ১২৫০ টাকা, অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা। পাশের সূত্রাপুর খুচরা বাজারে দেখা গেল, সেই দেশি পেঁয়াজই বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম কিছুটা ‘কম’— প্রতি কেজি ২৩০ টাকা।

পেঁয়াজের এই দুইশ পাড়ি দেয়ার ঘটনা দেশে প্রথম। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দেশি পেঁয়াজের কেজি ১৪০ টাকায় উঠেছিল। সেটাই ছিল এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ দর।

রাজধানীর বারিধারার গৃহিণী শেখ সাবিহা আক্তার বলেন, সকালে পেঁয়াজ কিনতে বের হয়েছিলেন। দুই দোকান থেকে ফেরত আসতে হয় তাকে। পেঁয়াজ নেই। পরে একটি দোকানে গিয়ে পেঁয়াজ পান। ২৫০ টাকা কেজিতে ১ কেজি পেঁয়াজ নেন তিনি। দোকানি তাকে জানান, আগে কিনে রেখেছিলেন বলে এই দামে পেয়েছেন।

খণ্ডকালীন গৃহকর্মীর কাজ করেন রুমানা। তিনি বলেন, ‘আফা পিয়াজ কিনতে পাঠাইছিলেন। আড়াইশ টাকা কেজি শুইনা ফিরা আসছি।’

পেঁয়াজের আকাশচুম্বী দামের কারণে নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষ ব্যাপক চাপে পড়েছে। সকালে কারওয়ান বাজারে ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজের দাম শুনে মলিন মুখ করে চলে যাচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। অনেককে এক কেজি করে পেঁয়াজ কিনে ফিরে যেতে দেখা যাচ্ছে। 
ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের জোগান নেই। দাম বেশি বলে বাজারে ক্রেতাও কম।

এদিকে পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সিন্ডিকেটের কারণে পেঁয়াজের বাজারে এই অবস্থা হয়েছে। যাদের কারণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। শিগগিরই পেঁয়াজের দাম কমে যাবে। বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে।  পেঁয়াজ, চাল, ধানসহ বিভিন্ন সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় বলেই পরে তা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসে। পেঁয়াজের সিন্ডিকেট চিহ্নিত হলে অবশ্যই সাজা পাবে তারা।

জেড এইচ/ এফসি

আরও পড়ুন