• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৫:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৮, ২০১৯, ০৫:০৩ পিএম

ভারতের অর্থনীতিতে মন্দা ভাব  

ভারতের অর্থনীতিতে মন্দা ভাব  
ইউনিয়ন ফাইলনান্স মিনিস্টার নির্মলা সীতারমণ

২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মধ্যদিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি সরকার। তারপর থেকেই অর্থনীতির মন্দা ভাব শুরু। প্রথমে গোটা দেশকে চমকে দিয়ে প্রথমে বিমুদ্রাকরণ (ডিমানিটাইজেশন) এবং তার কিছু পরেই কর ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ঘটিয়ে জিএসটি কর ব্যবস্থা চালু করার পর থেকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে অস্থিরতার শুরু, তা ২০১৯ সালের প্রায় শেষের দিকে এসে নাভিশ্বাস তুলেছে গোটা দেশের।পেঁয়াজসহ সমস্ত শাক-সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া। 

ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের কয়েকটি সর্বশেষ সূচক (সরকারি জরিপের ভিত্তিতেই যা প্রকাশ্যে এসেছে) দেখলেই অথর্নীতির সার্বিক চিত্রটা স্পষ্ট হয়ে যায়।  যেমন ভারতের জিডিপি এই মুহূর্তে ৫.৫ (বাংলাদেশের থেকে যা অনেকটাই পেছনে)।  কর্মসংস্থানের হাল গত চল্লিশ বছরে এতো খারাপ কখনও ছিল না।


ভারতের অর্থ ভাণ্ডার এতটাই তলানিতে পৌঁছেছে যে ভারতের শীর্ষ ব্যাঙ্কের (রিজার্ভ ব্যাঙ্ক) সঞ্চিত অর্থেও হাত বসিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। তার জন্য প্রয়োজনীয় আইনও নিজেদের মতো করে পাল্টে নিয়েছে মোদি সরকার।
গ্রামীণ ভোগ্যপণ্যের চাহিদা স্বাধীনতার পর থেকে সর্বনিম্ন। অর্থাৎ নৈমিত্তিক প্রয়োজনীয় খরচ এবং শিক্ষাখাতেও কাটছাঁট করতে শুরু করেছে গ্রাম ভারতের মানুষ।

সদ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ভারতের আর্থিক মন্দার কারণ হল চাহিদার অভাব। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের হাতে খরচ করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ না থাকার কারণেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা তৈরি হচ্ছে না। ঢাকঢোল পিটিয়ে যে বিমুদ্রাকরণ করা হয়েছিল, তার প্রত্যক্ষ ফল হিসাবে এক বছরের মধ্যেই কর্মচ্যুত হয়েছেন ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ। বছরে বছরে তা আরও বেড়েছে।

বিনিয়োগ নেই। ফলে নানাবিধ কর ছাড় দিয়ে মোদি সরকার কর্পোরেট বিনিয়োগ আনার মরিয়া চেষ্টা করছে, কিন্তু তাতে কার্যত কোনও ফলই হয়নি। মন্দার প্রভাবে জিএসটি আদায়ও লক্ষ্যমাত্রার থেকে অনেক কম হয়েছে। ফলে সরকারের হাতেও উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য কোনও টাকা নেই।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী রাজনৈতিক এবং ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে মোদি সরকার একদিকে এক এক করে যাবতীয় লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিক্রি করে দিতে উদ্যত হয়েছে, আর অন্যদিকে রামমন্দির বা এনআরসি-র মতো বিষয়কে বারবার সামনে তুলে আনতে চাইছে।এই মন্দা থাবা বসিয়েছে কাজের সম্ভাবনার ক্ষেত্রেও। খোদ মোদি সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে চিরাচরিত ক্ষেত্রে নতুন ৪ লাখ ১৫ হাজার ৩৫৫ জন নতুন করে কাজে যুক্ত হতে পেরেছেন। চলতি আর্থিক বছরে যা সর্বনিম্ন। অর্থাৎ প্রথাগত ক্ষেত্রে ভারতে কর্মসংস্থানের হার খুবই কম। বিশেষজ্ঞদের ধারনা, আগামী দিনে আরও  করবে। 
সরকারি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ভারতের চিরাচরিত ক্ষেত্রগুলোতে আগস্ট মাসে পে রোলে যুক্ত হয়েছিলেন ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৬৮১ জন। জুলাই মাসে এই সংখ্যাটা ছিল ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯ জন। জুন মাসে ১১ লাখ ৬৬ হাজার ১০১ জন কর্মী পে রোলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। ফলে, পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহদের রাজত্বে কোনো অতলে তলিয়েছে ভারতের অর্থনীতি।
বিএস