• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০৬:১২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ৩, ২০১৯, ০৬:১২ পিএম

৭ টাকার ফুলকপি কেন ঢাকায় ৫০ টাকা, প্রশ্ন নানকের

৭ টাকার ফুলকপি কেন ঢাকায় ৫০ টাকা, প্রশ্ন নানকের
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক

কুমিল্লার একটি বাজারে ৭টাকায় যে ফুলকপিটি বিক্রি হয়, সেটি ঢাকার কারওয়ান বাজার ঘুরে ঢাকার খুচরা বাজারে কেন ৫০ টাকা হয়, সেই প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক।

সোমবার (৩ ডিসেম্বর) গভীর রাতে কুমিল্লার নিমসার বাজার পরিস্থিতি ঘুরে এসে পরদিন সকালে রাজধানীতে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পণ্যের দামের এই বড় ফারাক তুলে ধরেন তিনি। রাজধানীর ফারস হোটেলে ‘নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধকল্পে ব্যবসায়ী সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি।

জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে থাকবো জানতে পেরে আমি রাত ১১টায় ঢাকা থেকে কুমিল্লার উদ্দেশে রওনা দেই। রাত সোয়া ১২টার দিকে নিমসার বাজারে গিয়ে পৌঁছাই এবং রাত আড়াই পর্যন্ত আমি নিমসার বাজারে বাজারদরটি বোঝার চেষ্টা করেছি। আমি কথা বলেছি তৃণমূলের কৃষকের সঙ্গে যারা মাথায় করে মালামাল নিয়ে এসে বিক্রি করছে। তারা কতো টাকা পাচ্ছে সবজির দাম। এই বিষয়গুলো আমি লুঙ্গি পড়ে সাধারণ মানুষের মতো বোঝার চেষ্টা করেছি।’

‘কেন নিমসার বাজারে যে ফুল কপি কিনছে ৭ টাকায়, সেই ফুল কপি কারওয়ানবাজারে তিন হাত বদলে ২০ টাকা বিক্রি হবে। সেই ২০ টাকার কারওয়ান বাজারের কপি এখান থেকে যেতে না যেতেই কৃষি মার্কেটে গিয়ে ৪০/৫০ টাকা হয়ে যাবে কেন? এটি মেনে নেয়া যায় না। এটি কোনো জনবান্ধব সরকার মেনে নিতে পারে না। এটি জনগণের দল আওয়ামী লীগ মেনে নিতে পারে না।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে রমজান মাসে বাজার দর নেমে যায় আর আমাদের দেশের ব্যবসায়ী রমজান মাসে হাকিয়ে উপরে উঠিয়ে নিয়ে যায়। এটি লজ্জার।’

দেশের বাজার ব্যবস্থাপনায় একটি অসুস্থ অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘সেই অসুস্থ অবস্থায় দায়িত্বশীল একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিশ্চুপ থাকতে পারে না, আমরা কখনো থাকিনি। ২০০৮ সালের সরকার গঠনের পর এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমরা চেষ্টা করছিলাম একটি বিকল্প বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার। রাজধানীর বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে বসে আমরা চেষ্টা করেছিলাম বোঝার জন্য কোথায় শুভাঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই বাজার পরিস্থিতিকে লাগামহীন হতে দেয়া যাবে না। একটি জনগণের সরকার এমনিভাবে বাজারের যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি রয়েছে, সেটি মেনে নিতে পারে না। কারণ এই সরকার শেখ হাসিনার সরকার, ব্যবসা বন্ধাব সরকার।’

এ সময় আওয়ামী লীগের এই নেতা ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভোজ্য তেলের বাজার, চালের দাম বাড়ে নি? কেন বাড়ছে আদার দাম? কেন বাড়ছে বসুনের দাম? বাধাকপি, ফুলকপি এগুলো আমি বলতে চাই না। কেন ফুলকপির দাম বাড়বে?’ “আজকে থেকে সকল ব্যবসায়ীরা মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেন, দর সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। মধ্যবিত্ত শ্রেণি এখন ক্ষয়িষ্ণু মধ্যবিত্তে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে ভারত থেকে গরু আসতে হয় না। গরু এখন আমাদের দেশে উদ্বৃত্ত। এটা সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য। তিনি একটি বাড়ি একটি খামার করে মানুষকে দারিদ্রতা থেকে মুক্ত করেছেন। পশু পালনে উৎসাহিত করেছেন। এখন গরু খামারির অভাব নেই।’

দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকার উৎখাতে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আন্দোলনের আহ্বানের প্রতিক্রিয়া নানক বলেন, ‘আমরা এর কোনো যুক্তিযুক্ত কারণ খুঁজে পাই না। আমরা তাই বলছি, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে অস্বস্তি রাখলে দেশ অস্বস্তিতে থাকবে। কাজেই আজকে থেকে চিন্তা করতে হবে আগামীকাল থেকে যেন বাজার নিয়ন্ত্রণে আসে। দ্রব্যমূল্যকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে।’
 
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিতে সূচনা বক্তব্য দেন সদস্য সচিব আব্দুস ছাত্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

এএইচএস/টিএফ

আরও পড়ুন