• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৫:৩৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৫:৫৫ পিএম

রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিয়েছে গ্রামীণফোন

রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিয়েছে গ্রামীণফোন
গ্রামীণফোন ভবন

সিঙ্গাপুরের একটি আইন সংস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে গ্রামীণফোন (জিপি)।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী বলেন, মূলত আরবিট্রেশনে (সালিশ) যাওয়ার জন্য জিপি সিঙ্গাপুরের একটি আইন সংস্থার মাধ্যমে আমাদের রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ পাঠিয়েছে। এটি খুব দুঃখজনক।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করবে একটি প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠান আবার আমাদের রাষ্ট্রপতিকে আরবিট্রেশনের জন্য উকিল নোটিশ দিয়ে চাপ দেবে, এটা কোনওভাবেই আমাদের কাছে খুব সহজে গ্রহণ করার মতো অবস্থা না।

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, আমরা এটা বুঝি ব্যবসা যদি কেউ করে তাহলে ব্যবসার ক্ষেত্রে তাদের নানা ধরনের সমস্যা থাকবে। আমাদের দায়িত্ব ফ্যাসিলেটেড করা, আমরা তাদের ফ্যাসিলেটেড করবো। 

দিনের শেষে অংকটা সহজ, ব্যবসাটা বাংলাদেশেই করতে হবে। বাংলাদেশের আইন-কানুন না মেনে আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা করে দেবে না

...

গ্রামীণফোনের কাছে অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা

.................................................................................

নোটিশের বিষয়ে সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে কি- না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, যে নোটিশ দেয়া হয়েছে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত অবহিত করা রয়েছে। সবাই বিষয়টা জানেন। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথা হয়েছে। উকিল নোটিশ নিয়ে আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ তারা যে জায়গায় চাচ্ছে সে জায়গাটা হচ্ছে আরবিট্রেশন যেন করা হয়। আরবিট্রেশন করার জায়গায় আমরা উম্মুক্ত রয়েছি। জিপি বাংলাদেশের আদালতে মামলা করে বসে থাকায় এখানে আদালতের বাইরে আরবিট্রেশন করার ‍সুযোগ নেই।

মন্ত্রী বলেন, আদালত যদি হুকুম দেয় আরবিট্রেশন করার- তাহলে করতে পারবো। যে দেশে বিজনেস করে সে দেশের আইন-আদালত অমান্য করে দুনিয়ার কোনও জায়গায় গিয়ে অন্য বিচার পাওয়ার সম্ভবনা নেই। আমরা সঠিক পথে রয়েছি, আদালত তার দৃষ্টিভঙ্গি চমৎকারভাবে করেছে।

গ্রামীণফোন আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কোনও উদ্যেগ নিচ্ছে কি- না প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, তারা এরকম একটি ধারণা দিয়েছে যদি আরবিট্রেশন না হয় তাহলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবেই। তবে আমার যেটা অবজারভেশন, বাংলাদেশের আদালতে হেরে গিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে কিছু একটা করা যাবে- আমি এটা বিশ্বাস করি না। দিনের শেষে অংকটা সহজ, ব্যবসাটা বাংলাদেশেই করতে হবে। বাংলাদেশের আইন-কানুন না মেনে আন্তর্জাতিক আদালত বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা করে দেবে না।

মোস্তফা জব্বার বলেন, আমরা সহানুভুতিশীল, আলোচনায় বসতে ইচ্ছুক। আমরা সমস্যার সমাধানের জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত। কিন্তু এর মধ্যে থেকে কেউ জাতীয় স্বার্থ বিপণ্ণ করলে আমরা সেটি আর করতে পারি না।

গ্রামীণফোনের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা মেনে চলা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রবি এরই মধ্যে প্রস্তাব দিয়েছে- তারা মামলা তুলে নিতে চায়। আমরা তো মামলায় যাইনি। ওরা যদি মামলা তুলে নিয়ে আলোচনায় বসে তাহলে কোনও আপত্তি নেই। তবে মামলা চলাকালীন অবস্থায় আলোচনা করতে পারি না। কারণ সেটি আদালত অবমাননা হয়ে যাবে। তবে জিপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারবো না, যতক্ষণ আদালতের রায় তারা না মানে।

গ্রামীণফোনের কাছে অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। পাওনা চেয়ে গত এপ্রিল মাসে চিঠি দেয় বিটিআরসি। এরপর তারা আদালতে যায়। অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে অপারেটর দুটির সঙ্গে বিটিআরসির কর্মকর্তাদের মধ্যে দুই দফা বৈঠক হলেও তাতে সফলতা আসেনি। বিটিআরসি সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তিতে রাজি না হওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয় রবি ও গ্রামীণফোন। আদালত গ্রামীণফোনকে ২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়ার মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে উকিল নোটিশ দিলো গ্রামীণফোন।

এইচএস/একেএস