• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০, ০২:৩০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২০, ০২:৩১ পিএম

৩৭১টি লাইসেন্স সাসপেন্ড ও বিন লক

৩৭১টি লাইসেন্স সাসপেন্ড ও বিন লক

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করায় গত বছর ৩৭১টি প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স ‘সাসপেন্ড’ ও ‘বিন লক’ করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। একইসঙ্গে চলতি অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে ১০২ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে ১০২টি বিভাগীয় মামলা ও ১১টি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। 

জাতীয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

 তথ্যমতে, ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের অধীনে সক্রিয় বন্ড লাইসেন্স রয়েছে ৩ হাজার ৮৩০টি। মোট বন্ড লাইসেন্স ৬ হাজার ৮১৩টি। এর মধ্যে নিষ্ক্রিয় ২ হাজার ৯৮৩টি।

বিভিন্ন সময়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের অভিযান, প্রিভেনটিভ অভিযান ও নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বন্ড অনিয়ম ও রাজস্ব ফাঁকি উৎঘাটিত হয়। সে অনুযায়ী অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বন্ড লাইসেন্স ‘সাসপেন্ড’ ও ‘বিন লক’ করে দিয়েছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।

লাইসেন্স ‘সাসপেন্ড’ বা ‘বিন লক’ করা হলে কোনও প্রতিষ্ঠান বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানি বা রফতানি করতে পারে না।

জানা গেছে, রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বন্ড সুবিধার আওতায় পণ্য তৈরি ও রফতানির পরিবর্তে কাঁচামাল এনে খোলা বাজারে বিক্রি করে দেয়। এতে একদিকে সরকার যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে দেশীয় শিল্প কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি প্রকৃত শুল্ককর পরিশোধ করে যেসব ব্যবসায়ী বাণিজ্যিকভাবে পণ্য আমদানি করে তারা বাজারে অসমপ্রতিযোগিতার কারণে ঝরে পড়ছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

কাস্টমস কর্মকর্তাদের দুর্বল মনিটরিংয়ের কারণে আগে নিষ্ক্রিয় ছিল ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।

নতুন এনবিআর চেয়ারম্যানের নির্দেশে আবার বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ৩৭১টি প্রতিষ্ঠানের বন্ড লাইসেন্স সাসপেন্ড এবং বিন লক করে দেয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রথম ৬ মাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের কারণে ১০২টি বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। যেখানে রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ ১০২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ফাঁকি দেয়া রাজস্ব ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে আদায় হয়েছে ৪৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট ১১টি ফৌজদারি মামলা করেছে। আটক পণ্য রয়েছে ৩২০ দশমিক ৯৬ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ২৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আসামির সংখ্যা ৫৬ জন। কয়েকজন আসামিকে আটকও করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট সম্প্রতি ইসলামপুরে অভিযান চালিয়ে ২৪৭ দশমিক ৪২ মেট্রিক টন ফেব্রিক্স আটক করেছে। যার বাজার মূল্য ১৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। সিরাজগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় ৩৮ দশমিক ২৫ মেট্রিক টন সুতা। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। নারায়ণগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় ৩৫ দশমিক ২৯ মেট্রিক টন সুতা। যার বাজার মূল্য ৪ কোটি টাকা।

রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দিনভর রাজধানীর নয়া নগরে অভিযান চালিয়ে ১০০ মেট্রিক টন কাগজ আটক করা হয়। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৬৯৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। যার মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে প্রতিষ্ঠানটি আদায় করেছে ১ হাজার ৭৫৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। গত অর্থ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিলো ১ হাজার ৩৯৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। গত অর্থ বছরের চেয়ে রাজস্ব আহরণে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সহকারি কমিশনার (প্রিভেনটিভ) আল-আমিন জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বন্ডে অপ-ব্যবহার কমে এসেছে। দিনে ও রাতে সমানতালে অভিযান চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় রাজস্ব আহরণও বেড়েছে। 

ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, অবৈধ সকল বন্ডেড পণ্যের ব্যবসার উৎস, গন্তব্য ও মাধ্যম চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে। এরইমধ্যে অনেকগুলো ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাামে। আসামিরাও আটক হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য দেশীয় ব্যবসার সম্প্রসারণ করা এবং দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। আমরা সেই কাজটি যথারীতি করে যাচ্ছি।

এসএমএম