• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০, ০৮:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০, ০৮:০৮ পিএম

রেশনিংয়ে বরাদ্দ না থাকলে বাজেট প্রতিহত করা হবে

রেশনিংয়ে বরাদ্দ না থাকলে বাজেট প্রতিহত করা হবে

আগামী বাজেটে শ্রমিকদের রেশনিং ও বাসস্থানের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ না থাকলে সেই বাজেট আন্দোলনের মধ্য দিয়ে প্রতিহত করবে বলে হুশিয়ার করে দিয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিক নেতারা। আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে গার্মেন্ট শ্রমিকদের রেশনিং ও আবাসনের জন্য সুনির্দিষ্ট বরাদ্দসহ কয়েকটি আশু দাবিতে সমাবেশে নেতারা এ দাবি করেন। 

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শ্রমিক সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ বলেন, যারা জীবনী শক্তি ক্ষয় করে দেশের ৮৪ ভাগ রপ্তানী আয় করে সেই শ্রমিকদের খাদ্য-আবাসন-চিকিৎসা-শিক্ষা বাবদ ন্যায্য হিস্যা বরাদ্দ করতে হবে। এ ছাড়াও শ্রমিকবিরোধী বিদ্যমান শ্রম আইন ও বিধিমালা সংশোধন করে সংবিধান, সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা ও আইএলও কনভেনশন অনুসারে আইন-বিধিমালা প্রণয়ন করতে হবে। সমাবেশ থেকে অব্যাহত শ্রমিক ছাঁটাই, হয়রানি, নির্যাতন বন্ধের দাবি জানানো হয়।

গার্মেন্ট টিইউসির সভাপতি অ্যাড. মন্টু ঘোষের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় নেতা সাদেকুর রহমান শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ এম এ শাহীন, ট্যানারি শ্রমিকনেতা আক্তার হোসেন, গার্মেন্ট শ্রমিকনেতা রেহানা আক্তার, আজিজুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, ইমাদুল ইসলাম, বাবুল আহমেদ, সাবিনা বেগম, রুবেল আহমেদ প্রমুখ।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে অ্যাড. মন্টু ঘোষ বলেন, দেশের বিগত বাজেটসমূহ চরিত্রগতভাবে ধনিক তোষণের বাজেট হয়ে আসছে। এ সকল বাজেটে ধনিক শ্রেণির জন্য বহু প্রণোদনা ও পুরস্কারের ঘোষণা থাকলেও শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের জন্য ন্যূনতম সান্ত্বনাটুকুও থাকে না। 

তিনি বলেন, শ্রমিকদের রেশনিং ও বাসস্থানের জন্য বরাদ্দের দাবি অনেক পুরাতন। এই দাবির পক্ষে অতীতে সর্বত্র আবেদন জানানো হয়েছে, শ্রমিকরা রাস্তায় মিছিল করেছে। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। তিনি আরো বলেন, আজ থেকে চল্লিশ বছর আগেও শ্রমিকদের জন্য রেশনিং ও বাসস্থানের সুবিধা ছিল, কিন্তু বর্তমানে সেসব কর্তন করা হয়েছে। 

সমাবেশে গার্মেন্ট টিইউসির সাধারণ সম্পাদক শ্রমিকনেতা জলি তালুকদার বলেন, গার্মেন্ট শিল্পে অব্যাহতভাবে শ্রমিক ছাঁটাই, হয়রানি, নির্যাতন চলছে। নানান অজুহাতে বেআইনিভাবে শ্রমিকদের সমগ্র কর্মজীবনের সঞ্চিত আর্থিক পাওনা থেকে বঞ্চিত করে চাকুরিচ্যুত করা হচ্ছে। আইন লঙ্ঘন করে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এ সকল জুলুম অতীতের সকল সীমাকে অতিক্রম করেছে। তিনি অবিলম্বে সকল ধরনের বেআইনি চাকরিচ্যুতি, ছাঁটাই, নির্যাতন বন্ধের দাবি জানান।

তিনি আরও বলেন, দেশের প্রচলিত শ্রম আইন ও বিধিমালা চরমভাবে শ্রমিক স্বার্থবিরোধী। এই আইন ও বিধিমালা ব্যবহার করে শ্রমিকদের ওপর সকল অন্যায়-অবিচার করা হয়। শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার নানান ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হরণ করা হচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই সকল ছাঁটাই-নির্যাতন বন্ধ করে অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত না  করা হলে শ্রমিকদের জমতে থাকা ক্ষোভ অচিরেই বিস্ফোরিত হবে। যা শিল্প এবং দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক হবে না।

সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গাজীপুরের ঝর্ণা নীটওয়্যার ও মালিবাগের ড্রাগন সোয়েটারসহ যেসকল কারখানায় ইতোমধ্যে বেআইনিভাবে ব্যাপক হারে শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে অবিলম্বে তাদের সকল দাবি মেনে নিতে হবে। বক্তারা ছাঁটাই নির্যাতনের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে।

টিএস/বিএস