• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২১, ১২:২৭ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ২৪, ২০২১, ১২:২৭ এএম

লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপিঋণ

লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপিঋণ

গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপিঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ এক হাজার ১৫০ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১২ শতাংশ। এতে করে গত তিন মাসে খেলাপিঋণ বেড়েছে এক হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা।

গত ডিসেম্বরের তুলনায় ৯ মাসে বেড়েছে ১২ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা।

সংশ্নিষ্টরা জানান, আমদানি ও রফতানি ব্যাপকভাবে বাড়ছে। অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্য আগের অবস্থায় ফিরেছে। তবে অনেকে ইচ্ছে করে ঠিকমতো ঋণ পরিশোধ করছে না। এর আগে করোনার মধ্যে গতবছর কেউ এক টাকাও ফেরত না দিলেও কাউকে খেলাপি করতে পারেনি ব্যাংকগুলো।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলারের মাধ্যমে ওই সুবিধা আর না বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। তবে কেউ যেন ঋণ পরিশোধে সমস্যায় না পড়ে সে জন্য চলমান ঋণের ওপর ২০২০ সালে আরোপিত অনাযায়ী সুদ একবারে পরিশোধ না করে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত ৬টি কিস্তিতে পরিশোধের সুযোগ দেয়া হয়। আর তলবি ঋণ চলতি বছরের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৮টি কিস্তিতে পরিশোধ করতে বলা হয়।

পরবর্তীতে গত ২৭ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক এক সার্কুলার দিয়ে জানায়, এসব ছাড়ের পর চলতি বছর যে পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করার কথা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে তার ২৫ শতাংশ পরিশোধ করলে তিনি আর খেলাপি হবেন না।

মতামত জানতে চাইলে ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরবর্তী অর্থনীতি অনেক দিক দিয়ে ভালো অবস্থানে এসেছে। অনেক দেশের তুলনায় পুনরুদ্ধার পরিস্থিতি ভালো। তবে সক্ষমতা থাকার পরও কেউ-কেউ হয়ত ব্যাংকের টাকা ফেরত দিচ্ছেন না। তারা হয়ত সুযোগ নিচ্ছেন। সাধারণভাবে বড়দের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটে। সক্ষমতা থাকলে ছোট ঋণ গ্রহীতারা যথা সময়ে ঋণের টাকা ফেরত দেন।

তিনি বলেন, এটাও ঠিক যে, করোনার ধাক্কা অনেকের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করে দিয়েছে। একবারে যা শেষ হবে না। এর মধ্যে জ্বালানির দর বৃদ্ধি আরেকটা চ্যালেঞ্জে ফেলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতের মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। তিন মাস আগে গত জুন পর্যন্ত ছিল ১২ লাখ ১৩ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয় ৯৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ। আর গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮৮ হাজার ২৮২ কোটি টাকা ছিল খেলাপি। যা ছিল মোট ঋণের ৭ দশমিক শুন্য ৬৬ শতাংশ।

মোট ঋণের মধ্যে শতাংশ বিবেচনায় খেলাপি ঋণের শীর্ষে রয়েছে রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংকের মোট ২ লাখ ১৯ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি রয়েছে ৪৪ হাজার ১৬ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ২০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ৯ লাখ ২৮ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৫০ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। এ খাতের ঋণের যা ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকগুলোর ৬৫ হাজার ২৬২ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি রয়েছে ২ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। আর বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের ৩২ হাজার ৩৪২ কোটি টাকার বিপরীতে তিন হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা রয়েছে কেলাপি। মোট ঋণের যা ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

জাগরণ/এসএসকে