• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৫, ২০১৯, ১০:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৬, ২০১৯, ০৪:০৪ এএম

ডা. সইফ ছিলেন আজন্ম বিপ্লবী : সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

ডা. সইফ ছিলেন আজন্ম বিপ্লবী : সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
বক্তব্য রাখেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী - ছবি : জাগরণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, শুধু মুখে নয় ডা. সইফ উদ দাহার চিন্তুা ও কর্মে পূর্ণরূপে ছিলেন বিপ্লবী। কর্ম ও চিন্তা যে অবিচ্ছিন্ন বিষয় তা তিনি লেখনি ও জীবনের চলার পথে দেখিয়ে গেছেন। ডা. সইফ প্রচুর বই পড়তেন। বই পড়ে পড়ে তিনি বিপ্লবীর কাজে যুক্ত হয়েছিলেন। বিপ্লবীরা সমাজের বিদ্যমান বিষয়গুলোর পরিবর্তন চান, মানুষের মুক্তি চান। ডা. সইফ ছিলেন তেমনই এক বিপ্লবী। তিনি ছিলেন আজন্ম বিপ্লবী।

কমিউনিস্ট বিপ্লবী ডা. সইফ উদ দাহারের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী এবং ‘নির্বাচিত রচনা’ গ্রন্থের প্রকাশ উপলক্ষে ‘বর্তমানকালে মুক্তিসংগ্রাম ও সইফ উদ দাহারের চিন্তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

রোববার (৫ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচার থিয়েটার ভবনের সিরাজুল ইসলাম লেকচার হলে সভার আয়োজন করে ডা. সইফ উদ দাহার স্মৃতি রক্ষা কমিটি। গ্রন্থটি প্রকাশ করে সংহতি পাবলিকেশনস।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ডা. সইফ উদ দাহার তার রচনায় যে বিষয়গুলো তুলে এনেছেন তা সত্যিই দুরূহ ছিলো। দুঃখের বিষয় তিনি আমাদের মধ্যে নেই। আরো দুঃখের বিষয়- তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তার বাস্তবায়ন হয়নি। মুক্তির যে সংগ্রাম তাতে কমিউনিস্টরা নেতৃত্ব দিতে পারেনি। ওইসময় অনেকগুলো দ্বন্দ্বের মধ্যে একটি মূখ্য হয়ে ওঠে। প্রধান দ্বন্দ্ব ছিলো পাঞ্জাবি শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালির দ্বন্দ্ব। এ দ্বন্দ্বের ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছে। 

তিনি বলেন, মুুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলো এবং তিন লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছিলো। বলা হয়, এর বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। বিনিময় কার সঙ্গে কে করলো? কী স্বার্থ তাদের? কে অধিকার দিয়েছিলো- এই মানুষগুলোর বিনিময়ে স্বাধীনতা পাওয়ার? সে ৩০ লাখ মানুষের তালিকা কি তৈরি হয়েছে? তবে মুক্তি যে অর্জিত হয়নি তা বোঝাই যাচ্ছে। কারণ এ সংগ্রামে বামপন্থীরা নেতৃত্ব দিতে পারেনি।

তিনি বলেন, তার দেখার চোখ ছিলো। পুঁজিবাদ কীভাবে এদেশে পুনরায় এসে দাঁড়িয়েছে সেটা তিনি দেখেছেন ও দেখিয়েছেন। রাষ্ট্রকে তিনি চিনেছেন। একদিকে তাত্ত্বিকভাবে তিনি রাষ্ট্রকে ব্যাখ্যা করেছেন। অন্যদিকে করেছেন সংগ্রাম। এর জন্য প্রায় পাঁচ বছর তিনি জেলে ছিলেন। পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে তিনি সংগ্রাম করেছেন। আর এ সংগ্রামের জন্য কী করা প্রয়োজন তাও তিনি দেখিয়েছেন। এজন্য তাকে বলা হতো বাদুড় কমিউনিস্ট।

তেল-গ্যাস-বন্দর রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, স্বাধীনতার পর বামপন্থী রাজনীতির দুরাবস্থা শুরু হয়। তবে ৬০ এর দশক তথা ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত এর একটি ধারাবাহিকতা ছিলো। ডা. সইফ এসব বিষয় তার রচনায় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। স্বাধীনতার পর দেশে পুঁজিবাদের বিকাশ, শ্রমিকের মজুরির প্রশ্ন সকল বিষয়ই তুলে ধরেছেন তিনি।

ডা. সইফ উদ দাহার স্মৃতি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক শাহ আবদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যে মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধরণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি এবং ইউনাইটেড কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদকমণ্ডিলির সদস্য আজিজুর রহমান।

এমআইআর/এসএমএম