এবারের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে পাস ও জিপিএ-৫ এর হার দুটোই বেড়েছে। এ বছর মোট পাসের হার ৯১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। পাস করেছে মোট এক লাখ ৮৬ হাজার ৮২৮জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৭৯৫ জন।
গত বছর বোর্ডে পাসের হার ছিল ৮৬ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। যা গত ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পাসের হার ছিল। এবার সেই অবস্থান থেকে উঠে এসেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড।
সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিম্চিত করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আনারুল হক প্রমানিক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক হাবিবুর রহমান, বিদ্যালয় পরিদর্শক দেবাশীষ রঞ্জন রায়, উপপরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) বাদশা হোসেন, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম, প্রধান মূল্যায়ন কর্মকর্তা এসএম গোলাম আজম প্রমুখ।
শিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, এ বছর সবমিলিয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২ লাখ ৪ হাজার ৮৩৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৮২৮ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৭৯৫ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৪৯৮ জন। এবার বোর্ডে ৫৯২ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর ৯২ দশমিক ৯৬ শতাংশ ছাত্রী এবং ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ ছাত্র পাস করেছে। মোট জিপিএ ২২ হাজার ৭৯৫ জন। এর মধ্যে ১১ হাজার ৬৮৬ জন ছাত্রী এবং ১১ হাজার ১০৯ জন ছাত্র। গত বছর জিপিএ ৫ পেয়েছিল মোট ৫ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৯৮ জন পরীক্ষার্থী। এর মধ্যে ৯ হাজার ৪৮০ জন ছাত্রী এবং ১০ হাজার ১৮ জন ছাত্র।
এ বছর নিয়মিত পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৮০ হাজার ৫০১ জন। এর মধ্যে পাশ করেছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৭৪৮ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ হাজার ৬৯০ জন। নিয়মিত পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিল ৫৯২ জন।
এ দিকে, এবার শতভাগ পাশের বিদ্যালয় গত বারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এ বছর রাজশাহী বোর্ডে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে এমন বিদ্যালয় রয়েছে ৪৩১টি। গত বছর তা ছিল ২০৬টি।
এর আগে, ২০১৫ সালে ৯৬৯টি এবং ২০১৪ সালে এক হাজার ৫৫টি বিদ্যালয় থেকে শতভাগ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়। এব ছর বিদ্যালয় সংখ্যা ছিলো ২ হাজার ৬৪৬টি।
এবার বোর্ডের পবা উপজেলার বাগসাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে থেকে কোন পরীক্ষার্থী পাশ করেনি। এ বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত বছর কেউ পাস করেনি এমন বিদ্যালয় ছিল একটি। পরীক্ষায় বহিষ্কৃত হয়েছে ১৭ পরীক্ষার্থী। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪১।
ফলাফল সার্বিকভাবে ভালো হয়েছে দাবি করে সন্তোষ প্রকাশ করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ড. আনারুল হক প্রামানিক। তিনি বলেন, ফলাফল সার্বিকভাবে ভালো হয়েছে। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
তিনি আরও বলেন, এবার অকৃতকার্য হয়েছে অনেকাংশে কম শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে সব চেয়ে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে গণিতে। এছাড়া বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়েও অকৃতকার্য হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল কালাম আজাদ। এক বার্তায় তিনি তাদের সুন্দর, উজ্জল ও আলোকিত ভবিষ্যৎ কামনা করেন।
তিনি বলেন, সবার অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল ভালো পরীক্ষা। শিক্ষক ও অভিভাবকদের সহায়তা ও আন্তরিকতায় শিক্ষার্থীদের সফল হতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়েছেন চেয়ারম্যান। এই ফলাফলে নিরাশ না হবার আহবান জানিয়ে আগামীতে ভালোভাবে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা বলেন তিনি।
একেএস