• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০১৯, ০৮:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ৩০, ২০১৯, ০৮:৫৩ পিএম

ঢাবিতে বাজেট পরবর্তী সেমিনার

উচ্চশিক্ষায় বাজেট বৃদ্ধিসহ ৮ প্রস্তাবনা

উচ্চশিক্ষায় বাজেট বৃদ্ধিসহ ৮ প্রস্তাবনা
ঢাবির নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত সেমিনার -ছবি : জাগরণ

টেকসই উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন ও দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে উচ্চশিক্ষায় উল্লেখযোগ্য হারে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ ৮ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

রোববার (৩০ জুন) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘বাজেট পরবর্তী উচ্চশিক্ষায় বরাদ্দ’ বিষয়ক সেমিনারে এসব প্রস্তাবনা দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান সেমিনারের উদ্বোধন করেন।

সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসি’র সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীনের সভাপতিত্বে সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। এতে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। সেমিনারের মূল বক্তব্য উপস্থান করেন সেন্টার অন বাজেট এন্ড পলিসি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তৈয়বুর রহমান।

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখার উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। এ সময় তিনি উচ্চশিক্ষিত মানব সম্পদ তৈরি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি ও উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অধ্যাপক আতিউর রহমান বলেন, অন্যান্য সকল খাতের সঙ্গে উচ্চশিক্ষার বাজেটের সম্পর্ক রয়েছে। উচ্চশিক্ষা বাড়লে জিডিপি বাড়ে। উচ্চশিক্ষা প্রদানকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে উপযোগী করে তুলতে হবে। কিভাবে তাদের কর্মক্ষেত্রের উপযোগী করা যায় তার জন্য শিক্ষা কার্যক্রমকে সেভাবে সাজাতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া ৪৬ ভাগ শিক্ষার্থী অন্তত ৩ বছর চাকরি পায় না। অথচ অনেক প্রতিষ্ঠানে দক্ষ কর্মীর অভাবে বিদেশিদের নিয়োগ দেয়া হয়। তারা ৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশে নিয়ে যায়। ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই। এই জন্য দেশের উচ্চশিক্ষা কর্মমুখী করতে হবে। কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। কেননা কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্বের হার কম। সব ধরণের উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। উচ্চশিক্ষায় সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে সরকারকে কিছু ভর্তুকি দিতে হবে।

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট এবার গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যায়নি। এটি আমাদের সীমাবদ্ধতা। এদিকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট গত বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ২৭ বিলিয়ন টাকা, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ৮ বিলিয়ন টাকা।

তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও অ্যালামনাই সংগঠনগুলো অর্থায়ন করে। কিন্তু এদেশে সেটি হচ্ছে না। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও অ্যালামনাইদের এগিয়ে আসতে হবে।

সেমিনারের মূল বক্তব্যে উত্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো হলো- ১. উচ্চশিক্ষার জন্য উল্লেখযোগ্য হারে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি ২. উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে কার্যকরী সংযোগ স্থাপন। ৩. কারিগরি ও প্রযুক্তি শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মান ও আওতা বৃদ্ধি করা। ৪. বেসরকারি খাতকে সহায়ক ভূমিকায় সংযুক্ত করা। ৫. শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উচ্চশিক্ষা অর্জন ও জ্ঞান চর্চার জন্য আর্থিক সাহায্য ও প্রণোদনা প্রদান। ৬. গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ হারে অর্থায়ন করা। ৭. উচ্চশিক্ষিত তরুণদের মাঝে উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি ও তাদের কাজের উপযোগী পরিবেশ প্রদান এবং কাঠামোগত সহায়তা প্রদান। ৮. নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট সকল ক্ষেত্রে ইতিবাচক সহায়তা প্রদান।

এমআইআর/ একেএস
 

আরও পড়ুন