কলেজ পরিচালনার গভর্নিং বডির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে মামলা করায় সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এক কলেজ শিক্ষককে। ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার জয়লাজুয়ান ডিগ্রী কলেজে।
এ প্রসঙ্গে গভর্নিং বডির বিরুদ্ধে আনত অভিযোগেরভিত্তিতে জানা যায়, কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক রঞ্জন কুমার দে গভর্নিং বডিতে শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করার চেষ্টা করেন। এতে ঈর্ষাপরায়ন হয়ে গভর্নিং বডির প্রতিনিধিরা অত্যন্ত সুচারুভাবে তাকে জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু করে। যার ধারাবাহিকতায় কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রঞ্জন কুমার দে প্রথমে দেরি করে কলেজে আসার অভিযোগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি 'কারণ দর্শাও' নোটিশ ইস্যু করা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক কারণ দর্শাও নোটিশের জবাব দিলে গত ৭ মার্চ নতুন করে আরও তিনটি নতুন অভিযোগে দ্বিতীয় দফায় কারণ দর্শাও নোটিশ দেয়া হয়। এরপর গত ১৮ মার্চ ওই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে প্রভাষক রঞ্জন কুমার দে বলেন, ঘটনার সূত্রপাত আসলে আমার শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করার চেষ্টার কারণে। আমাকে গভর্নিং বডির নির্বাচন করতে না দেয়ায় আমি বিষয়টি নিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালতে একটি মামলা করি। মামলা নং ৪৩। এর পরই সংক্ষুব্ধরা একজোট হয়ে আমাকে হুমকি ও হয়রানি শুরু করে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজের গভর্ণিং বডির সংবিধি ২০১৫ অনুযায়ী ২০১৭ সালে জয়লাজুয়ান ডিগ্রী কলেজের গভর্ণিং বডি গঠন করা হলে শুরু থেকেই সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি। সংবিধি অনুযায়ী যেকোন ধরণের বিদ্যোৎসাহী সদস্য হতে হলে তাকে ন্যুন্যতম স্নাতক পাশ হতে হবে। কিন্তু আলহাজ্ব আব্দুর রহমান সরকার নামীয় একজন স্নাতক পাস না করেও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মনোনীত বিদ্যোৎসাহী সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, আহসান উল্লাহ খান সবুজ নামের একজন গভর্ণিং বডিতে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত আছেন। অথচ আহসান উল্লাহ খান সবুজের পিতা মরহুম আমান উল্লা খান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তবে তার পুত্র কোনোভাবেই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে পারেন না।
মামলার সূত্র আরও জানা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী গভর্ণিং বডির মেয়াদ ৪ বছর হলেও শিক্ষক প্রতিনিধির মেয়াদ ২ বছর। গত বছরের নভেম্বরে তাদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নির্বাচন ছাড়াই সংশ্লিষ্টরা স্বপদে আছেন। শিক্ষকরা নির্বাচন দাবী করলেও কর্তৃপক্ষ তাদের খেয়াল খুশিমতো কলেজ পরিচলনা করছেন।
এ বিষয়ে কলেজের উপাধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। ফলে এ বিষয়ে মন্তব্য করার সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষ হোসেন আলীকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
এইচএস/এসকে