• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২০, ০২:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ২৪, ২০২০, ০২:০৮ পিএম

কংগ্রেসের কাণ্ডারি এবার গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ?

কংগ্রেসের কাণ্ডারি এবার গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ?

গত শনিবার রাত থেকেই প্রশ্নটা জোরালো হতে শুরু করেছিল। উপমহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল কংগ্রেসে কি নেতৃত্ব বদল হতে চলেছে? ২২ বছর পর ভারতের প্রতাপশালী এই দলটির নেতৃত্ব কি যেতে চলেছে গান্ধী পরিবারের বাইরে?

নেতৃত্ব প্রশ্নে আজ সোমবার (২৪ আগস্ট) সকালে শুরু হয়েছে দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। তার আগে সিনিয়র ২৩ জন নেতা দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখেছেন। তারা নেতৃত্বে বদল আনার আহ্বান জানিয়েছেন। এর উত্তরে সোনিয়া গান্ধী নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে বলেছেন। শোনা যাছে, সোনিয়া গান্ধী নেতৃত্ব ছাড়তে চাইছেন। কিন্তু কে হবেন নতুন কংগ্রেস প্রধান? দলে এমন কে রয়েছেন?

কংগ্রেসের সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কে সি বেনুগোপালকে ফোন করে সোনিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছেন, নির্বাচনে ভরাডুবির পর এক বছর কেটে গিয়েছে। সাময়িকভাবে এক বছর কংগ্রেস সভানেত্রী পদের দায়িত্ব সামলানোর যে অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি, সেই মেয়াদ গত ১০ অগস্টই উত্তীর্ণ হয়েছে। বৈঠকে ওয়ার্কিং কমিটি নতুন নেতা বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করুক, এটাই চান সোনিয়া।

সন্দেহ নেই কংগ্রেসের জন্য এ এক বড় সন্ধিক্ষণ। সেই সঙ্গে ভারতের রাজনীতির জন্যও এটা ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যে নেহরু-গান্ধী পরিবার কংগ্রেসের বটবৃক্ষের মতো ছিল, তার বাইরে দলের রাশ যে অতীতে যায়নি তা নয়। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর নরসিংহ রাও দলের সভাপতি হয়েছেন। তাকে সরিয়ে পরে সীতারাম কেশরীকে সভাপতি করা হয়েছে। কিন্তু  ওই সময়ে কংগ্রেসের রাজনৈতিক দৈন্য কোন স্তরে পৌঁছেছিল, তা কারোর অজানা নয়। সেখান থেকে দল পুনরুজ্জীবিত হয়েছিল সোনিয়ার হাত ধরেই।

আবার সোনিয়া সভানেত্রী থাকাকালীন ২০১৪ সালে সংসদীয় রাজনীতিতে তলানিতে পৌঁছে গিয়েছিল কংগ্রেস। রাহুল গান্ধী কংগ্রেস সভাপতি পদের দায়িত্ব নিয়েও সেই হাল ফেরাতে পারেননি, ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর গত বছরের লোকসভা ভোটে দলের ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদ ছেড়েও দিয়েছেন।

এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই একাংশ চাইছেন রাহুল গান্ধী ফিরে আসুন। তিনিই নেতৃত্ব দিন। কিন্তু রাহুল এখনও রাজি নন। ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্যের কথায়, রাহুলকে নিয়ে বাইরে যে আলোচনাই থাকুক, রাজনীতি নিয়ে খুব একটা আগ্রাসী মনোভাবের নন। একবার পদ ছেড়ে দেয়ার পর ফের দায়িত্ব নেয়ার ব্যাপারে এখনও ঘোর আপত্তি রয়েছে তার। বরং গান্ধী পরিবারের নতুন প্রজন্ম মনে করছেন, তাদের পরিবারের বাইরে কেউ যদি দলের হাল ধরতে পারেন তাতে ক্ষতি নেই।

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজনীতিতে কোনটাই শেষ কথা নয়। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক সদস্য রাহুলকেই ফের দায়িত্ব নিতে বলেন, তখন অনড় থাকাটা রাহুলের পক্ষে চাপের হবে। আর যদি এ ব্যাপারে ওয়ার্কিং কমিটির মধ্যেই বিভাজন থাকে, অর্থাৎ সিডব্লিউসি-র উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা গান্ধী পরিবারের বাইরে নেতা সন্ধানের পক্ষে অবস্থান নেন, তা হলে ধরে নেওয়া যেতে পারে বদল অনিবার্য। সেই পরিস্থিতিতে আর রাহুল গান্ধী সভাপতি পদের দায়িত্ব কোনওভাবেই নিতে চাইবেন না।  

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, কংগ্রেসের এমন কোন নেতা রয়েছেন যার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে? জবাবে কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা বলেন, দলের অভিজ্ঞ ও বিচক্ষণ নেতার অভাব নেই, অশোক গেহলট, গুলাম নবি আজাদ, পি চিদম্বরম, আনন্দ শর্মা, মল্লিকার্জুন খার্গে, আহমেদ পটেল, অমরেন্দ্র সিং-এমন অনেকেই রয়েছেন। নরসিংহ রাও বা কেশরী সভাপতি হওয়ার আগেও কেউ ভাবতে পারেননি তারা সভাপতি হবেন। এবারও সে রকম পরিস্থিতি হলে সর্বসম্মতভাবে ওয়ার্কিং কমিটি নেতা বাছাই করে নেবে।

এসকে/এসইউ