• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০, ০৮:০৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২০, ০৮:১৪ পিএম

নর্থ সাউর্থের ওয়েবিনার

জাতিসংঘের আরও সক্রিয় ভূমিকা চায় বাংলাদেশ

জাতিসংঘের আরও সক্রিয় ভূমিকা চায় বাংলাদেশ

কোভিড-১৯ বিস্তার জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার দূর্বলতাকে উন্মোচিত করেছে। পাশাপাশি এই মহামারি বৈষম্য দূর করে একটি টেকসই পৃথিবী গড়ার অনেকগুলো সুযোগও তৈরি করেছে। কয়েকটি দেশের বৃত্ত থেকে বের হয়ে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাকে ‘জনগণের জাতিসংঘে’ পরিণত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
 
বাংলাদেশে জাতিসংঘের দপ্তর ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিসষ্টাডিজ (সিপিএস) আয়োজিত দুই দিনের আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত দিয়েছেন।
 
‘জনগণের প্রয়োজনের সময়ে জাতিসংঘ: বহুপক্ষীয় ব্যবস্থা নিয়ে পুনর্ভাবনা’ শীর্ষক ওই ওয়েবিনারে কার্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমেহতা হতে বিষয়ে জাতিসংঘের ব্যর্থতার পরও বাংলাদেশ বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সংস্থার ম্যান্ডেটের প্রতি অঙ্গিকার পুর্নব্যক্ত করেছে। সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে এবং সবচেয়ে জটিল পরিবেশে শান্তিরক্ষী মোতায়েনে বাংলাদেশ তৈরি রয়েছে। 

বুধ ও বৃহস্পতিবার ছয়টি আলাদা কর্ম অধিবেশনের আলোচনায় বলা হয়েছে, সংঘাত, গণহত্যা ও ব্যাপক মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের আরও অনেক কিছু করার আছে। যদিও সশস্ত্রসংঘাত, গণহত্যা, ভ‚-রাজনৈতিক দ্বৈরথ বন্ধ আর দেশের ভেতরে এবং এক দেশের সঙ্গে অন্যদেশের বৈষম্য বিলোপের মত বিষয়গুলো সুরাহায় জাতিসংঘ ক্রমশঃ অকার্যকর হয়ে পড়ছে। 

ওয়েবিনারের শেষে কর্ম অধিবেশনে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম দুই দিনের আলোচনার সামারি প্রোসিডিংসউপ স্থাপন করে বলেন, জাতিসংঘকে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়া থেকে উদ্ধারের স্বার্থে সরকার আর নাগরিক সমাজের সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি। মহামারির ফলে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা আর অস্বস্তির পরও অধিকাংশ মানুষ এখনো জাতিসংঘ আর আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় আস্থা রাখতে চান।

দুই দিনের ওয়েবিনারে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের মানবিক সাড়াদান এবং মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় দেশের সৃজনশীল কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন।

সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, বছরের পর বছর ধরে জাতিসংঘের প্রতি আমাদের আস্থা কমছে। রোহিঙ্গা জনগণের জন্য শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ সফল হয়নি। তাঁর মতে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সারা পৃথিবীর মানুষের সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। 

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, অর্জন আর অঙ্গিকারের দিক থেকে বিবেচনা করলে জাতিসংঘের পোষ্টার চাইল্ড হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশ। বহুপক্ষীয় ব্যবস্থার প্রতি যে আস্থা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই পথেই রয়েছেন। 

তিনি জাতিসংঘের প্রক্রিয়ার বাইরে থাকা কোটি কোটি মানুষের কাছে সংস্থাটির পৌঁছানোটা জরুরি বলে মনে করেন। আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনষ্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গর্ভনেন্সের (এসআইপিজি) জ্যেষ্ঠফেলো শহীদুল হক। 

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়াসেপ্পো জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি সংস্থার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি সব পক্ষকে জাতিসংঘের উন্নয়নের স্বার্থে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
 
দুই দিনের এই আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে কয়েকটি দেশের বৃত্ত থেকে বের হয়ে আন্তর্জাতিক এই সংস্থাকে ‘জনগণের জাতিসংঘে’ পরিণত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘকে আরও কার্যকর ও অংশগ্রহণমূলক করে তুলতে ‘টুগেদার ফাষ্ট’ এন্ড অ্যাকাউন্টিবিলিটি, কোহারেন্স এন্ড ট্রান্সপারেন্সি (এসিটি) ও  গ্লোবাল গভার্নেন্স ফোরামে রমতনাগরিক সমাজের বিভিন্ন উদ্যোগে যোগ দিয়ে সমর্থনের আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের ভবিষ্যত এখন তরুনদের হাতে। তাই ভবিষ্যত জাতিসংঘের স্বার্থে এই সংস্থায় তাদের জন্য একটি আলাদা প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা জরুরি।

জাগরণ/এমএইচ 

আরও পড়ুন