• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০১৯, ০৬:০৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৩, ২০১৯, ১২:০৯ এএম

যেমন হলো চার ধাপের উপজেলা ভোট

যেমন হলো চার ধাপের উপজেলা ভোট
ভোট দিচ্ছে এক নারী ভোটার-ফাইল ছবি

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চার ধাপে ৪৬৫ উপজেলার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। গত ১০ মার্চ প্রথম ধাপের উপজেলায় সম্পন্ন হয় ভোট। দ্বিতীয় ধাপে ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপে ২৪ মার্চ আর চতৃর্থ ধাপের ভোট সম্পন্ন হয় গত ৩১ মার্চ।

চার ধাপে ৪৬৫ উপজেলার তফসিল ঘোষিত হলেও ভোট সম্পন্ন হয়েছে ৪১৮টিতে। তিন পদেই একক প্রার্থী থাকায় ৩০টি উপজেলায় ভোটের প্রয়োজন পড়েনি। বাকি ১৭ উপজেলার ভোট স্থগিত করা হয়। এরমধ্যে ১০টি আদালতের আদেশে এবং ৭টি ইসির আদেশে স্থগিত করা হয়েছে।

আগামী জুনে পঞ্চম বা শেষ ধাপে বাকি ৩০-এর বেশি উপজেলায় ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনের।

ইসির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে শতাধিক ব্যক্তি নিহত হয়। এবার ভোট কেন্দ্রে নিহতের সংখ্যা শূন্য। যদিও ভোট শেষে এক সন্ত্রাসী হামলায় বাঘাইছড়িতে ৭ জনের মৃত্যু ঘটে। তবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে ইসির গলার কাঁটা ছিল ভোটারদের অনাগ্রহ। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে সব দল বিশেষত বিএনপির মতো বড় দল অংশ না নেয়ায় উপজেলা নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

প্রথম ধাপে সর্বোচ্চ ৪৩ শতাংশ ভোট পড়লেও চতুর্থ ধাপে সবচেয়ে কম, ৩৬ শতাংশ ভোটার ভোট দেন। চার ধাপে গড়ে ভোটের হার ছিল ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০১৪ সালে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গড়ে ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছিল। ২০০৯ সালে ভোটের হার ছিল ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

এবার উপজেলা ভোটে আওয়ামী লীগ ও তাদের বিদ্রোহীদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। এরমধ্যে নৌকার ২৮৮ জন ও স্বতন্ত্র ১৩১ জন জয়ী হয়েছেন। জাতীয় পার্টির তিনজন ও জাতীয় পার্টি (জেপি)’র একজন জয়ী হন।

চতুর্থ ধাপে আওয়ামী লীগের ৭৩ প্রার্থী জিতেছেন। এরমধ্যে ৪৯ জন ভোটে ও ২৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। জাতীয় পার্টি (জেপি) থেকে চেয়ারম্যান পদে একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৩২ জন ভোটে জিতেছেন চতুর্থ ধাপে।

তৃতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৮৩ জন (এরমধ্যে ভোটে জিতেছেন ৫২ জন, বাকিরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়), জাতীয় পার্টির একজন, স্বতন্ত্র ৩৮ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

দ্বিতীয় ধাপে আওয়ামী লীগের ৭৪ জন নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন ২৩ জন। জাতীয় পার্টির ২ ও স্বতন্ত্র ৩৮ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান পদে ৫৮ জন নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৬ জন। আর ২৩ উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ সম্পর্কে বিষয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, সামগ্রিকভাবে চার ধাপে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। কমিশন এতে সন্তোষ প্রকাশ করছে। চার ধাপের নির্বাচনে কোথাও ভোটের দিন সহিংসতায় কেউ নিহত হয়নি। প্রতিটি ধাপে ইসির চাওয়া ছিল শান্তিপূর্ণ ভোট, প্রাণহানি না হয়, অনিয়ম যেন না হয়।

তিনি বলেন, ইসি এবার ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর চেয়েও গুরুত্ব দিয়েছে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের। তবে এবারের উপজেলা নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে ইসিকে হিমশিম খেতে হয়েছে।

প্রায় ২৫ জন সংসদ সদস্যকে প্রভাব বিস্তার ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে সতর্ক করে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় ইসি। এছাড়া এক মন্ত্রীর এপিএসের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। প্রায় ১০ জন ভোটগ্রহণ ও পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে ইসি। 

অনিয়মের দায়ে ৪ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে আটক করা হয়।

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চার ধাপের ভোট সম্পন্ন হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি জোট।

হাশা/এসএমএম