• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: মে ৫, ২০১৯, ০৩:২২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৫, ২০১৯, ০৯:৫০ পিএম

ময়মনসিংহে ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত ভোটাররা

ময়মনসিংহে ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত ভোটাররা
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভোট দিতে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন -ছবি : জাগরণ

প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিয়ে উচ্ছ্বসিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের (মসিক) ভোটাররা। ভোট পদ্ধতিতে নতুন যন্ত্র দেখতে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহও কম ছিল না। সকাল থেকেই দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত উৎসুক ভোটারকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। 

পরিচ্ছন্ন পদ্ধতিতে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হচ্ছেন উচ্ছ্বসিত ভোটাররা। কেউ কেউ আবার বাড়ি ফিরে অন্য ভোটারদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোটদানে উৎসাহ দিয়ে কেন্দ্রমুখী করাচ্ছেন। ভোট নিয়ে কোনো রকম ঝামেলা না হওয়ায় রীতিমতো ইভিএম বন্দনায় মজেছেন সাধারণ ভোটাররা। নগরের রাঁধাসুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও মৃত্যুঞ্জয়ী স্কুলসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।

ময়মনসিংহে প্রথমবার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে উৎসুক ভোটারদের দীর্ঘ লাইন -ছবি : জাগরণ

নগরের রাঁধাসুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে স্ত্রী আলপনা দে (৩৫) কে সঙ্গে নিয়ে ভোট দিতে এসেছেন গোবিন্দ দে (৫০)। ভোট দিয়ে বের হয়ে উচ্ছ্বসিত গোবিন্দ বলেন, হাতে সিল মারার চেয়ে ইভিএম অনেক সহজ। এ পদ্ধতিতে ভোট দিতে সময়ও কম লেগেছে।

স্বামীর মতোই স্বস্তির কথা জানালেন আলপনাও। তিনি বলেন, এতোদিন শুধুমাত্র ব্যালট পেপারেই ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা ছিল। প্রথম ইভিএমে ভোট দিতে পেরে ভালই লাগছে। সব ভোটেই এমন হওয়া উচিত।

মৃত্যুঞ্জয় স্কুলের কেন্দ্রে কথা হলো মুক্তিযোদ্ধা জোবায়ের আহমেদ বলেন, ইভিএমে কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। এজন্যও সকালেই ভোট দিতে চলে এসেছি। ফিঙ্গার প্রিন্টে তথ্য যাচাইয়ের পর ভোট দিতে সময় লাগেনি।

স্থানীয় ২৮ নম্বর রাঁধাসুন্দরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার মোজাহিদুল হক জানান, এ কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৫৮৬ জন। এর মধ্যে গত দু’ঘণ্টায় ১৮১টি ভোট পড়েছে।

তিনি জানান, ব্যালটে সিল দেয়া, ক্রমিক নম্বর দেখে ঠিক করা এসবের চেয়ে ইভিএম বেশ সহজ একটি পদ্ধতি। এনআইডি বা ফিঙ্গার প্রিন্ট দিয়ে একবার শনাক্ত করে ভোট দিতে পারবে। এ ভোট কোথায় গেলো জানতে পারবে না, ফলাফল হওয়ার আগেও গণনা করতে পারবে না কে কতগুলো ভোট পেলো।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও পরীক্ষামূলকভাবে সদর উপজেলায় ১০০টি ভোটকেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণের অভিজ্ঞতা রয়েছে এ প্রিজাইডিং অফিসারের। সেই উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ইভিএমে সাফল্যের হার বেশি। ইভিএম কাজ করছে না বা কোথাও সমস্যা হচ্ছে এমন অভিযোগ আসেনি।

সকাল ৮ টা থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ চললেও ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ নয়। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করছেন কাউন্সিলর প্রার্থী ও সংশ্লিষ্টরা।

মসিক নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৪ জন। ১২৭টি কেন্দ্রের ৮৩০ টি ভোটকক্ষে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এ নির্বাচনে মেয়রপদে ভোটের আগেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে নির্বাচনে ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪২জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৭০জন প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।
 
এ নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৫ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে ৩ জন করে মোট ৩৮১ জন ও মোবাইল টিমে ২৩১ এবং স্ট্রাইকিং ফোর্সে ১৩২ জন পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে ১০ জন করে মোট ৩২ কেন্দ্রে ৩২০ জন আনসার সদস্য, স্ট্রাইকিং ফোর্স/মোবাইল টিমে ৩৩ জন ব্যাটালিয়ন আনসার, স্ট্রাইকিং ফোর্স/মোবাইল টিমে ১৮০ জন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এবং ৪২০ জন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন
করছেন।

একেএস