• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৪:১১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৯, ০৪:১১ পিএম

রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবরাহ

ইসির ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক

ইসির ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করবে দুদক

অসাধু উপায়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের কয়েকশ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেয়ায় দুই নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযুক্ত ৭ জন হলেন- চট্টগ্রাম জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান ও চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা (বর্তমানে পাবনায় কর্মরত) আব্দুল লতিফ শেখ এবং ঢাকা এনআইডি প্রজেক্টের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সাগর, একই শাখার সাবেক টেকনিক্যাল এক্সপার্ট সত্য সুন্দর দে, চট্টগ্রামের পটিয়ার বড় উঠান ইউনিয়মের শাহানুর মিয়া, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসের অস্থায়ী অপারেটর জনপ্রিয় বড়ুয়া ও চট্টগ্রাম ডবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন।

সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য। সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া ও নির্বাচন কমিশনের ল্যাপটপসহ নির্বাচনি সরঞ্জাম আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ৫১ রোহিঙ্গাকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। রোহিঙ্গাদের এনআইডি সরবারহ করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনেও বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে দুদক। শিগগিরই অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে বলে দুদক জানিয়েছে।

এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ, উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন ও মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলীর সমন্বয়ে গঠিত এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশনের কাছে এক চিঠির মাধ্যমে অনুসন্ধানের অনুমতি চায়।

চট্টগ্রামের এনফোর্সমেন্ট টিম চট্টগ্রাম, কক্সবাজারের তিনটি পাসপোর্ট কার্যালয়সহ বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করা প্রায় দেড়শ পাসপোর্ট আবেদনপত্রের নথি সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে।

দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে বিভিন্ন পত্রিকায় রোহিঙ্গাদের এনআইডি সংক্রান্ত নিউজ প্রকাশিত হলেও নির্বাচন কমিশনের সবাই দায়সারা কাজ করেছেন। তারা এই অভিযানের আগ পর্যন্ত ল্যাপটপ হারানো সংক্রান্ত কোনো জিডি বা মামলা এবং ল্যাপটপ উদ্ধারের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

সম্প্রতি দুদক থেকে অভিযান চালানোর পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস কোতোয়ালী থানায় এবং ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বাদী হয়ে জেলার সদর থানায় ভোটার তালিকায় ৬০০ রোহিঙ্গাদের নাম উঠানোর অভিযোগে মামলা করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর পাঁচ কর্মচারীকে আসামি করে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এটা আইওয়াশ ও দায়িত্ব এড়ানোর কৌশলমাত্র। নির্বাচন কমিশনের অসৎ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের  সহযোগিতা ব্যতীত ভোটারতালিকায় নাম উঠানো কিংবা জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া সম্ভব নয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, গুটি কয়েকজন কর্মচারীর পক্ষে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা অসম্ভব। বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা ভোটার হলেও ফরম-২ দেয়ার ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা জড়িত মর্মে অভিযান পরিচালনা ও রেকর্ডপত্রের প্রাথমিক পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়।

তথ্য আপলোড দেয়ার ক্ষেত্রে ল্যাপটপ ছাড়াও ডিজিটাল ক্যামেরা, স্ক্যানার, ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন, আইরিশ মেশিন, ডিজিটাল সিগনেচার প্যাডসহ এনআইডিতে ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো কোনো কর্মচারীর নিকট থাকার কথা নয়। ল্যাপটপ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যহারের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ভোটার করার বিষয়গুলো নির্বাচন কমিশনের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়নি। দুদককে পাশ কাটানোর জন্য দায়সারা মামলা করে জড়িত কর্মকর্তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়েছে।

এইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন