• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯, ০৭:০৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯, ০৭:০৯ পিএম

ভোটের আগে মাঠের কথা

নির্বাচন আসন্ন, উত্তরে উত্তাল ৫২, ৫৩, ৫৪  

নির্বাচন আসন্ন, উত্তরে উত্তাল ৫২, ৫৩, ৫৪  
৫২ নং-এ মনোনীত প্রার্থী ফরিদ আহমেদ (বাঁয়ে), ৫৩ নং-এ মনোনীত প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন (ডানে) এবং ৫৪ নং ওয়ার্ডের মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ (মাঝে)- ছবি: বেলায়েত হোসেন বিপ্লব

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত কাউন্সিলর প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করা হয়। রোববার ( ২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন ওবায়দুল কাদের।

আসন্ন সিটি নির্বাচনে ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) মনোনয়ন পেয়েছেন শেখ ফজলে নূর তাপস। এসময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থী এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি  করপোরেশনের ৭৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর নামও ঘোষণা করা হয়। আর মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ঢাকা উত্তরে ১৮ জন এবং দক্ষিণে ২৫ জনের নামের তালিকাও সামনে আসে।

বাঁ থেকে- দুই সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী মেয়র আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস

গতবারের মত এবারও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবগঠিত ওয়ার্ডগুলোতে শুরু থেকেই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশিরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। একই পরিস্থিতি লক্ষ করা যায় দক্ষিণ সিটিতেও। তবে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়ানোয় এরইমধ্যে আলোচনায় উঠে আসতে শুরু করেছে উত্তর সিটির নবগঠিত তিন ওয়ার্ড ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বরের কথা। যেখানে প্রথমবার নির্বাচনেই একাধিক হাইভোল্টেজ প্রার্থীর জমজমাট রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতা আর ভোটযুদ্ধের উত্তাপ ছিল ব্যাপকভাবে আলোচিত ইস্যু।

এবার এই তিন ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলরদের পাশাপাশি মনোনয়ন প্রাপ্তির দৌড়ে অংশ নেন স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক পদস্থ নেতৃবৃন্দ। তবে শেষ পর্যন্ত বর্তমান তিন কাউন্সিলরকেই মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয় দলের পক্ষ থেকে। ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের মনোনীত প্রার্থী মো. ফরিদ আহমেদ এবং ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর মো. নাসির উদ্দিনের পাশাপাশি এবার চমক সৃষ্টি করে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ। গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের ভিড়ে একমাত্র নির্দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যক্তিগত ইমেজের বলেই জয় লাভ করেন তিনি।

আওয়ামী ঘরানার রাজনীতির সমর্থক কাউন্সিলর যুবরাজ ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকলেও পরবর্তীতে স্থানীয় পর্যায়ে প্রত্যক্ষভাবে দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না। তবে প্রথম নির্বাচনে স্থানীয় পর্যায়ের একাধিক প্রবীন ও পদস্থ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বড় জয় নিয়েই নতুন এই ওয়ার্ডের প্রথম কাউন্সিলর  নির্বাচিত হন যুবরাজ। এরপরেই পুরো দমে সক্রিয় হয়ে ওঠেন দলীয় রাজনীতিতে। এবার তার প্রত্যক্ষভাবে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়টিকে অনেকেই মূল্যায়ণ করছেন গত মেয়াদের কার্যক্রম, ক্লিন ইমেজ, দলের প্রতি নিবেদিত থাকা, স্বল্প মেয়াদের মাঝে প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রচেষ্টা এবং ব্যক্তি ইমেজের ইতিবাচকতাকেই।

প্রার্থী তালিকা ঘোষণাকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা

এ প্রসঙ্গে দৈনিক জাগরণ প্রতিবেদককে জাহাঙ্গীর হোসেন যুবরাজ বলেন, দলীয় প্রার্থীতা প্রদানের বিষয়টি দলীয় প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। সর্বোচ্চ পর্যায়ের যাচাই বাছাইয়ের পরেই প্রার্থীতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তার সেই বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য হতে পারাটা আমার জন্য বিশাল অনুপ্রেরণা। আমি নেতৃত্ব চাই না, দেশ, দেশের মানুষ ও জাতির জনকের আদর্শের দল আওয়ামী লীগের একজন নিবেদিত কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাই। নেত্রী যে পরিশুদ্ধ রাজনৈতিক চর্চার পথ প্রদর্শক হয়েছেন সে পথে হাটতে চাই তা সে যত কঠিনই হোক।

স্থানীয়দের মতে গত বারের মত এবারও উত্তর সিটিতে আলোচনার শীর্ষে থাকবে এই তিন ওয়ার্ডের ভোটযুদ্ধ। এদিকে প্রার্থীরা বলছেন, এলাকার বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে মানুষের মাঝে অসন্তোষ থাকলেও প্রার্থীরা বলছেন পূর্ণ মেয়াদে কাজ করার সুযোগ রয়েছে সামনে। এরপর অভিযোগের তেমন কিছু থাকবে না। এলাকার মানুষের ধৈর্য্য ধারনের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে এবার তার প্রতিদান দিতে চান প্রার্থীরা।

আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের ভোটযুদ্ধ। সাম্প্রতিক যে সকল বিতর্কিত বিষয়ে দলীয় ইমেজ ক্ষুণ্ণ হয়েছে তা নিজেদের কাজের দ্বারা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে দলের মূল্যায়ণের প্রতিদান দিতে চান মনোনীত প্রার্থীরা। তবে তাদের এই প্রতিজ্ঞা ব্যালটমুখী নাকি কর্মমুখী তা সময় হলেই জানা যাবে, এমনটাই দাবি সাধারণ মানুষের।

এসকে

আরও পড়ুন