• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০, ০১:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২০, ০১:০৮ পিএম

চসিক নির্বাচন ২০২০

বিতর্কিতদের মনোনয়ন নিয়ে আ.লীগে তোলপাড়

বিতর্কিতদের মনোনয়ন নিয়ে আ.লীগে তোলপাড়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন পাওয়া একাধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা পদ-পদবি ও দলীয় নাম ভাঙানোর অভিযোগ উঠেছে। 

অতীতে কখনই আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না, তারা ওয়ার্ড কমিটিতে উপদেষ্টা কিংবা দলের সদস্য পদ দেখিয়ে মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছে বলেন অভিযোগ উঠেছে। 

যাদের বিরুদ্ধে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে তারা হলেন- জামালখান ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন, আলকরণ ৩১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সালাম, বক্সিরহাট ৩৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নূরুল হক, লালখানবাজার ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলাল এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর (৯, ১০ ও ১৩ নং ওয়ার্ড) তছলিমা বেগম নূরজাহান।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, সাইডলাইনে সরিয়ে রাখা হয়েছে যোগ্য ও পরীক্ষিতদের। রাজনীতিতে পোড় খাওয়া দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও কেউ মুখ খুলছেন না।  

সূূত্র বলছে, দলীয় সমর্থন না দেয়া দুর্দিনের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্দ। উপেক্ষিত রয়ে গেছেন ত্যাগী ও দীর্ঘদিন নৌকার গুন টানা নেতারা।

ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য পদ দেখিয়ে শৈবাল দাশ সুমন ২১ নং জামালখান ওয়ার্ডে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন।

তিনি বলেন, শৈবাল দাশ সুমন আওয়ামী লীগের কোনও পদ পদবীতে নেই। 

৩১নং আলকরণ ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, ওয়ান ইলেভেন কিংবা দলের দুঃসময়ে দলের পাশে ছিলেন তারেক সোলায়মান সেলিম। তিনি ছিলেন চারবারের বিজয়ী। অথচ তাকে মনোনয়ন না দিকে অন্যজনকে দেয়া হয়েছে। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত এবং ত্যাগী নেতা-কর্মীরা রাজনীতিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

আলকরণ ওয়ার্ড থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য দাবিদার আবদুস সালাম। জানতে চাইলে ৩১নং আলকরণ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, মনোনয়ন পাওয়া আবদুস সালাম কমিটির সদস্য ছিলেন না। তবে গত বছর তিনি ওয়ার্ডে দলীয় সদস্য ফরম পূরণ করেছেন। 

একাধিক মাধ্যমে যোগাযোগ করে আবদুস সালামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনটি খোলা রাখলেও ফোন রিসিভ করেননি।

লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিক আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ১৪ নং ওয়ার্ডে দল না করেও মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে মনোনয়ন বাগিয়ে নিয়েছেন আবুল হাসনাত বেলাল। যিনি আওয়ামী লীগে কোনও অংঙ্গ-সংগঠনের পদেও নেই।

বক্সিরহাট ৩৫ নং কাউন্সিলর নূরুল হকের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ, তিনি কখনই আওয়ামী লীগের কোনও পদে ছিলেন না এবং মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাও নন।

জানতে চাইলে নূরুল হক দৈনিক জাগরণকে বলেন, মনোনয়ন না পেয়ে অনেকে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন।

১৯ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে দল সমর্থিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। তারপর থেকেই ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন পাওয়া প্রার্থীদের নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।

বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য, আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত যে কোনও প্রার্থীকে মনোনয়ন দিলে জনগণ খুশি হতো। দলের সাধারণ সদস্য পদ তো দূরের কথা, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে কখনই জড়িত ছিলেন না, তাদের মনোনয়ন দেয়ায় স্বাভাবিকভাবে বির্তক উঠছে।

বেগম নূরজাহান বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, নগর আওয়ামী লীগে নারী সদস্য আছে একজন। তিনি হচ্ছেন জুবাইদা নার্গিস। জানা মতে, তছলিমা বেগম নূরজাহান নামে কোনও নারী সদস্য নেই। 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে পুরনোদের মধ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন ২৭ জন। আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বাদ পড়েছেন পুরোনো ১৯ কাউন্সিলর। 

জানা গেছে, দলীয় সমর্থন না পেলেও সাধারণ কাউন্সিলরের মধ্যে সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র, তারেক সোলায়মান সেলিমসহ অন্তত ১১ জন স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচনে লড়বেন। 

এসএমএম