• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২২, ২০২০, ০৫:৫৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২২, ২০২০, ০৫:৫৩ পিএম

‘সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর’

‘সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ● ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সঠিক বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচার ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে চট্টগ্রাম-৩ আসনের মাহফুজুর রহমানের তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা এ সময় সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারাবদ্ধ। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য সরকার যথাযথ আইন সংস্কার ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করণের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। শোষণ-বঞ্চনামুক্ত ন্যায় ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার ও সুবিচার নিশ্চিত করা আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য। একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ ও আধুনিক বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মাঝে উপলব্ধি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে যে সব নাগরিক আইনের চোখে সমান এবং কোনও অপরাধী অপরাধ করে পার পাবে না। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে ৭৫ এর পরবর্তী সময়ে এদেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলার রায়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় সংসদে তুলে ধরে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান সাফল্য হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ যাবৎ ৪৪ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। ৯টি মামলার চূড়ান্ত রায় হয়েছে। ৬টি মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। ২টি মামলা আসামিদের মৃত্যুজনিত কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত করা হয়েছে। একটি মামলায় আসামি আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে মাদক সমস্যা সমাজে একটি বিষফোঁড়া।আমাদের সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। মাদক সংক্রান্ত মামলাসমূহের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮8 প্রণয়ন করেছি। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে বর্তমানে আমরা নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত অপরাধ বিচারের লক্ষ্যে ৯৫ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরের বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র সংক্রান্ত মামলা, সিলেটে চাঞ্চল্যকর জোড়া শিশু হত্যা মামলা, নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর ৭ খুনের মামলা এবং জাপানি নাগরিক কুনিও হোশির হত্যা মামলাসহ চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, দল-মত-নির্বিশেষে সন্ত্রাসী ওয়ারেন্টভুক্ত সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ নিয়মিত মামলার আসামী গ্রেফতার করা হচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অবৈধ অস্ত্র বিস্ফোরক এবং মাদকদ্রব্যসহ সকল ধরনের অবৈধ মালামাল উদ্ধার করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। কোনও ব্যক্তি গোষ্ঠী বা দল যাতে গুজব বা বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে না পারে সে লক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমুহ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপনসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার চুরি ছিনতাই ডাকাতি রোধকল্পে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, নৌ পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিক যথাক্রমে সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। দেশের সীমান্তবর্তী জেলা সমূহের অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং মাদকের অনুপ্রবেশ রোধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বক্ষণিক নজরদারি বৃদ্ধি এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধী শনাক্ত ও তাদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

এইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন