• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০১৯, ০৩:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৮, ২০১৯, ০৪:০০ পিএম

দেশ-বিদেশে নানা আয়োজনে ‘মাইলস’

দেশ-বিদেশে নানা আয়োজনে ‘মাইলস’

বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাড়া জাগানো অন্যতম ব্যান্ড সঙ্গীতের দল ‘মাইলস’। যারা অগণিত সঙ্গীতপ্রেমীর ভালোবাসা কুড়ানোর মধ্য দিয়ে পাড়ি দিয়েছে চার দশকের পথ। এই পথপরিক্রমায় চলতি বছরে ৪০ বছরে পা দিয়েছে ‘মাইলস’। অগ্রযাত্রার এই সুবর্ণ সময় স্বরণীয় করে রাখতে দেশ-বিদেশে বহু কনসার্টের আয়োজন করেছেন ব্যান্ডের সদস্যরা। দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া এখন পর্যন্ত নিশ্চিত রয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে মাইলস সদস্য শাফিন আহমেদ বলেন, ‘চল্লিশ বছর উদযাপনকে সামনে রেখে আমরা অনেক কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ১ মাইলসের এই পর্যন্ত ১১টি অ্যালবাম রিলিজ হয়েছে। এর পাশাপাশি চারটি বেস্ট অফ অ্যালবাম প্রকাশ পায়। যার মধ্যে ভারত থেকে দুটি এবং আমেরিকা থেকে দুটি। ৪০ বছর পূর্তি একদিনের কনসার্টে শেষ হবে না, এটা আগামী ৬ মাস ধরে চলবে। শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরে থাকছে নানা আয়োজন।’ 

ব্যান্ডের আরেক সদস্য হামিন আহমেদ জানান, ‘এটা আমাদের জন্য আনন্দের একটি বছর। এটা আমাদের শ্রোতা, দর্শক এবং ফ্যানদের নিয়ে। আমাদের শুরুটা হবে আমেরিকা সফর দিয়ে। চলতি মাসেই আমরা সেখানে বিভিন্ন কনসার্টে অংশগ্রহণ করব। যা শেষ হবে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে। আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ১২টির অধির একক শোতে অংশ নেবে মাইলস। এরপর সেপ্টেম্বেরে কাডা ট্যুরে অংশ নেব। সেখানেও ৬টি শো হবে। দেশে ফিরেই আবার অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে আমরা অস্ট্রেলিয়ায় ৬টি শো’তে অংশ নেব। তারপর দেশে।’ 

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে আমেরিকায় প্রথম শো ছিল ১৯৯৬ সালে। যেখানে মাইলস একক আয়োজনে অংশগ্রহণ করে। ১৯৭৯ সালে মাইলস যাত্রা শুরু করলেও আমাদের জন্য ৮২ সালটা ছিল বেশ উল্লেখযোগ্য। কারণ তখন সাধারণ শ্রোতাদের সামনে আমরা হাজির হই স্ব-শরীরে। এর আগে শুধুমাত্র ইন্টারকন্টিনেন্টালে আমরা বাজাতা, যেখানে সাধারণ শ্রোতার আনাগোনা কম ছিল।
 
দেশের ইভেন্টগুলো আয়োজক প্রতিষ্ঠান উইন্ডমিলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাব্বির রহমান তানিম বলেন, ‘দেশের বাইরে ব্যান্ডগুলো অনেক জনপ্রিয়। তার অন্যতম কারণ তাদের উপস্থাপন। বিভিন্ন  শোয়ের স্পন্সরের মাধ্যমে বড় আয়োজন করে থাকে তারা। যা এদেশেও শুরু হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতা এবারের মাইলসের কনসার্ট। আমরা একটু আলাদাভাবে এই আয়োজনটি করছি। শুধুমাত্র একটি ইভেন্টের মাধ্যমে ৪০ বছর পূর্তিকে শেষ করবে না। এটা অনেক শ্রোতা বা দর্শকে অংশগ্রহণে হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘এই জার্নিটাকে বলছি ম্যাজিক অফ মাইলস। যেখানে ওয়াল্ড ট্যুরের পাশাপাশি ঢাকার বাইরে চারটি কনসার্ট এবং ঢাকায় একটি গালা কনসার্ট অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাইরের কনসার্টগুলো হবে চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা এবং রাজশাহী। কনসার্টে আছে রোড শো। ঢাকার গালা ইভেন্টটি আর্মি স্টেডিয়াম অথবা ইন্টান্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত হবে।’

জানা যায়, এই আয়োজনে মাইলসের জনপ্রিয় গানের পাশাপাশি তাদের নিজেদের পছন্দের অনেক গান পরিবেশন করা হবে। এ ছাড়া দেশের অন্য শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ডগুলো মাইলসের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গানে ঢাকার কনসার্ট মাতাবে। যারা এ কনসার্টে আসার সুযোগ পাবেন, তারা এই ৪০ বছরের কালের সাক্ষী হয়ে থাকবেন।

৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে থাকছে- মাইলস ব্যান্ডের সদস্যদের ব্যবহৃত বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী, মাইলসের বিভিন্ন সময়ের দূলর্ভ ছবি প্রদর্শন, মাইলসের বিভিন্ন অর্জন প্রদর্শন, গানের লিরিক এবং তার পেছনের কাহিনিসহ প্রদর্শন ও মাইল্সের যেসব সদস্য প্রয়াত, তাদের স্মরণে একটি জোন। ফলে নতুন প্রজন্মের ভক্ত বা শ্রোতারা জানতে পারবেন মাইলসের ইতিহাস। 

ফরিদ রশিদের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে যাত্রা শুরু করে মাইলস। দীর্ঘ চার দশক ধরে ব্যান্ডটি জনপ্রিয়তার শীর্ষ ধরে রেখেছে। বিভিন্ন ধারার মিউজিকের সমন্বয় ঘটিয়ে দেশে বাংলা রক মিউজিককে ভিন্নমাত্রার উচ্চতায় নিয়ে গেছে মাইলস। তারই ফলে দেশের পাশাপাশি সমানভাবে সমাদৃত হয়েছে পশ্চিম বাংলা এবং বিদেশে বসবাসরত বাঙালিদের মাঝে। 

মাইলসের প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ প্রকাশ হয় ১৯৯১ সালে। তার আগে প্রকাশিত হয় দুটি ইংরেজি গানের অ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফারদার’। মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘কি যাদু’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইন’ এবং ‘প্রিয়তমা মেঘ’ ইত্যাদি।

এসজে