• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৪:০৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ০৪:১২ পিএম

আশ্বাস আর বিশ্বাসে শিল্পী সংঘের নির্বাচন

আশ্বাস আর বিশ্বাসে শিল্পী সংঘের নির্বাচন

প্রার্থীরা আশ্বাস দেন আর সদস্যরা বিশ্বাস করেন। আশ্বাস পূরণ না হলেও বিশ্বাস ভাঙে না। তাই নতুন আশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে এবারও ভোট দিবেন অভিনয় শিল্পী সদস্যরা। সেই আশাতেই আগামীকাল শুক্রবার (২১ জুন) অভিনয় শিল্পী সংঘের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে ওই দিন সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

অভিনয় শিল্পী সংঘের আনুষ্ঠানিক নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০১৭ সালে। ওই বছর শহিদুল আলম সাচ্চু সভাপতি ও আহসান হাবিব নাসিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেই সময়ের প্রার্থীরা নির্বাচন প্রাক্কালে যে আশ্বাস দেন সদস্যরাও খুশি হয়ে বিশ্বাস করে ভোট দিয়ে তাদের জয়যুক্ত করেন। কিন্তু নির্বাচন জয়ের দুই বছর পার হলেও নেতাদের আশ্বাসের কোনো বাস্তবায়ন তারা দেখেননি বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। উপরন্ত এবারও আবার তাদের নতুন প্রার্থীদের আশ্বাসে বিশ্বাস রাখতে হচ্ছে। কারণ এবার প্রার্থী বদলেছে, সদস্য বেড়েছে, আশ্বাসের ধরনও পাল্টেছে। সদস্যরা বিশ্বাস করেন এবার হয়তো তাদের কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে আশ্বাসের বাস্তবায়ন ঘটবে।

এ প্রসঙ্গে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং এবারও একই পদে প্রার্থী আহসান হাবিব নাসিম বলেন, দুই বছর খুব কম সময়। তারপরও আমরা শিল্পীদের কলাণ্যে প্রচুর কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। অনেকগুলো ইতিমধ্যে বাস্তবায়নও করেছি। এরমধ্যে সংগঠনের কার্যালয় এবং সংগঠন নিবন্ধন করেছি। কয়েকজন দুস্থ শিল্পীকে মাসিক ভাতা দেয়া শুরু করেছি। অসুস্থ শিল্পীদের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া শুরু হয়েছে। গত ঈদে কয়েকজনকে উৎসব ভাতাও দেয়া হয়েছে। নাটক-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেছি। শুটিং-সংক্রান্ত অনেকগুলো সমস্যার সমাধান করেছি।’

তিনি বলেন, ‘এরমধ্যে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে অভিনয় পেশার নিরাপত্তা। সেই পেশার নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কাজ করছি পেশা হিসেবে অভিনয়শিল্পের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির জন্য, বাংলাদেশে বিদেশি শিল্পীদের অভিনয় নীতিমালা, অভিনয়শিল্পী সংঘের প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, শুটিংয়ের একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করার বিষয়ে। আর এগুলো যদি কারো চোখে না পড়ে বা কাজ হিসেবে যদি মূল্যায়ণ না হয় তাহলে আর বলার কিছুই নেই।’

এবারের নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সভাপতি প্রার্থী শহীদুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘আমি জয়ী হলে সবার আগে চেষ্টা করব অভিনয়শিল্পী পেশার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি আদায়ের। সেই সঙ্গে নাটকের অভিনয়ে জাতীয় পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করব।’ ‘নির্বাচনের আগে একটা প্রতিশ্রুতি দিলাম, পরে কোনো কারণে সেটির বাস্তবায়ন হলো না, এমন প্রতিশ্রুতির কোনো দাম নেই। তবে শিল্পীদের পাশে আছি, দায়িত্ব পেলেও পাশে থাকব।’ বলে জানান সভাপতি প্রার্থী তুষার খান। 

সভাপতি পদের আরেক প্রার্থী শামীম ভিস্তী বলেন, ‘নাটকে বৈচিত্র্য আনার জন্য বিভিন্ন চরিত্রের সমাবেশ ঘটিয়ে নাটক নির্মাণ এবং সেটা প্রচারের জন্য টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সঙ্গে কাজ করবো। পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে আমরা যদি সম্মিলিতভাবে একটি অনলাইন চ্যানেল চালুর চেষ্টা করব। তাহলে নিজেরাই স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে ভালো গল্প এবং ভালো নির্মাতা নিয়ে নিজেদের প্রোডাকশন বানিয়ে লাভবান হতে পারবো। সেই সাথে অভিনয়শিল্পীদের অন্যান্য সুবিধা এবং অসুবিধা নিয়েও সম্মিলিতভাবে কাজ করবো।’

২০১৯-২০২১ নির্বাচনে ২০টি পদের বিপরীতে এবার প্রার্থী ৫১ জন। এরমধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় নির্বাচনের পূর্বেই একমাত্র প্রার্থী লুৎফর রহমান জর্জ বিজয় লাভ করেন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন অভিনেতা খায়রুল আলম সবুজ এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন অভিনেতা ও নির্মাতা মাসুম আজিজ ও নাট্যকার বৃন্দাবন দাশ।

সভাপতির একটি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন আশিকুল ইসলাম খান (তুষার খান), শহীদুজ্জামান সেলিম ও মো. মিজানুর রহমান (শামীম ভিস্তি)। সহ-সভাপতির তিনটি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন আজাদ আবুল কালাম, আহসানুল হক মিনু, ইউজিন ভিনসেন্ট গোমেজ, তানিয়া আহমেদ, ইকবাল বাবু ও দিলু মজুমদার। সাধারণ সম্পাদকের একটি পদে প্রার্থী আহসান হাবীব নাসিম ও আব্দুল হান্নান। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দুইটি পদে প্রার্থী আশরাফ কবীর, আনিসুর রহমান মিলন, একেএম আমিনুল হক আমীন, এসএম কামরুল হাসান (রওনক হাসান), সুমনা সোমা।

অর্থ সম্পাদকের একটি পদের প্রার্থী মুহাম্মদ নূর এ আলম (নয়ন), মো. মাঈন উদ্দিন আলম (কোহিনুর)। দপ্তর সম্পাদকের একটি পদের জন্য প্রার্থী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর, এসএম আরমান পারভেজ মুরাদ, গোলাম মাহমুদ, শেখ মেরাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সম্পাদকের একটি পদে জিনাত সানু স্বাগতা, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (পাভেল ইসলাম), রাশেদ মামুনুর রহমান অপু। আইন ও কল্যাণ সম্পাদকের একটি পদে মম শিউলি (মমতাজ বেগম), শামীমা ইসলাম তুষ্টি, শিরিন আলম। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের একটি পদে প্রাণ রায়, শফিউল আলম বাবু, শহিদ আলমগীর। তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদকের একটি পদে মো. সিরাজুল ইসলাম (মুকুল সিরাজ), মো. সুজাত হোসেন (সুজাত শিমুল) প্রার্থী হয়েছেন।

কার্যনির্বাহী সদস্য ৭ পদের বিপরীতে প্রার্থী ১৮ জন। তারা হলেন- খালেদ আহমেদ সালেহীন (রাজিব সালেহীন), জাকিয়া বারী মম, তারেক মাহমুদ, নুরুন নাহার বেগম, রেজাউল করিম সরকার (রেজাউল রাজু), বন্যা মির্জা, নাদিয়া আহমেদ, মাসুদ আলম তানভীর (তানভীর মাসুদ), মাহাদী হাসান পিয়াল, মুনীরা বেগম মেমী, মো. ওয়াসিম হাওলদার (ওয়াসিম যুবরাজ), মো. জাহিদুল ইসলাম চৌধুরী (জাহিদ চৌধুরী), মো. মাহাবুবুর রহমান মোল্লা (নিথর), সাজ্জাদুর রহমান সনি (সনি রহমান), শামস ইবনে ওবায়েদ (শামস সুমন), শাহ মো. আব্দুর রাজ্জাক, শামসুন নাহার শিরিন (সূচনা শিকদার) ও সেলিম মাহবুব।

এসজে