এক বিদুষী ‘খনা’ যার অন্য নাম লীলাবতী। তার গল্পটা অনেক পুরোনো, কিংবদন্তির ঘেরাটোপে বন্দি। তবু যেটুকুর তল খুঁজে পাওয়া যায় তাতে বোধ হয় যে, তিনি এক বিদুষী জ্যোতিষী, স্বামী মিহিরও একই বৃত্তিধারী। শ্বশুর যশস্বী জ্যোতিষী বরাহ মিহির। পুত্রজায়ার যশ, খ্যাতি ও বিদ্যার প্রভাব দর্শনে বরাহের হীনমন্যতা ও ঈর্ষা। শ্বশুরের নির্দেশে লীলাবতীর জিহ্বা কর্তন ও তার ‘খনা’ হয়ে ওঠার গল্প পেরিয়েছে প্রজন্মের সীমানা। 

খনার বচনের মাঝে টিকে থাকা শত বছরের আগের জল, মাটি, ফসল আর মানুষের গন্ধ মাখা জ্ঞান আর সত্যটুকু কি সত্যি লীলাবতীর? নাকি এ সত্য-তথ্য সবই এ ভূ-খন্ডের বৃষ্টি, পলি, আর জল হাওয়ার সাথে মিশে থাকা যুগান্তরের সামষ্ঠিক জ্ঞানের সংকলন? লীলাবতী শুধুই কি একজন নারী বলে তার পরিণতি নির্মম, নাকি তিনি নারী হয়ে মিশেছিলেন চাষাভুষোর সনে; সেই তার কাল? 

পুরুষতন্ত্র না শ্রেণি কাঠামো; নাকি উভয় দাঁড়ায় লীলাবতীর বিপ্রতীপে? মিহির বা প্রাকৃত লোকালয় কারোর পরোয়া না করা জীবন ত্যাগী নেশার ঘোর তাকে নিয়ে যায় দিগন্তের ওপার। খনার সত্য শুধু থেকে যায় কৃষকের মুখে। তবু প্রশ্ন থাকে, খনার সত্যই কি একক সত্য? নাকি আজকে নির্ভুল যা কাল তা হতে পারে অসত্য? শুধু সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর যে মৃত্যুনেশা তার সে নেশা কি একরোখা জেদ? খনা নিজেই নিজেকে করেন সম্মুখীন প্রশ্নের।

আগামীকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) বটতলার তৃতীয় প্রযোজনা ‘খনা’র ৭১তম মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। নাটকটি রচনা করেছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা ও নির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ আলী হায়দার।

মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনায় আবু আউদ আশরাফী, সুর ও সংঙ্গীত পরিকল্পনায় ব্রাত্য আমিন, শারমিন ইতি ও জিয়াউল আবেদীন রাখাল, পোষাক পরিকল্পনায় তাহমিনা সুলতানা মৌ ও তৌফিক হাসান ভূঁইয়া, কোরিওগ্রাফিতে মোহাম্মদ রাফি ও নাসির উদ্দিন নাদিম, প্রপসে হুমায়রা আখতার, পোস্টারে তৌহিন হাসান।

খনায় অভিনয় করছেন সামিনা লুৎফা নিত্রা, ইমরান খান মুন্না, কাজী রোকসানা রুমা, ইভান রিয়াজ, তৌফিক হাসান, শেউতি শা’গুফতা, মিজানুর রহমান, সুমিত তেওয়ারি রানা, ম. সাঈদ, পঙ্কজ মজুমদার, হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, নাফিউল ইসলাম, হাফিজা আক্তার ঝুমা, চন্দন পাল।

সুর ও সঙ্গীতে শারমিন ইতি, হুমায়ূন আজম রেওয়াজ, শে’উতি শাহগুফতা, লোচন পলাশ। 

এসজে