• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ০১:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ০১:৪৮ পিএম

যেভাবে জন্মদিন উদযাপন করতেন নায়করাজ রাজ্জাক

যেভাবে জন্মদিন উদযাপন করতেন নায়করাজ রাজ্জাক

জানুয়ারির ২৩ তারিখ মানেই একরাশ মন খারাপের ফিরে আসা। এই দিনটাই প্রয়াত নায়করাজ রাজ্জাকের জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়স হতো ৭৯। বাংলা চলচ্চিত্রকে রাজ্জাক কী দিয়েছেন, তা নিয়ে আলোচনা অনেক হয়েছে। ওসব এখন থাক। তার চেয়ে বরং জীবদ্দশায় নায়করাজ কীভাবে জন্মদিন উদযাপন করতেন, তা নিয়ে বিস্তারিত জানা প্রয়োজন। 

প্রয়াত এই অভিনেতার ছোট ছেলে খালিদ হোসাইন সম্রাট জানালেন, বেঁচে থাকাকালীন তার বাবার জন্মদিন নানা আয়োজনে উদযাপিত হতো। তিনি বলেন, “আব্বা যদি শুটিংয়ে থাকতেন তাহলে সকাল থেকে বাসায় ফুল আসা শুরু করত। যারা তাঁকে ভালোবাসতেন তারা দেখা করতে আসতেন। ওই দিন তিনি একটু আগেভাগে বাসায় চলে আসতেন। সহ-শিল্পী, চলচ্চিত্রের নানা সংগঠন তাঁর জন্মদিনে কেক কাটতেন। বাসার প্রচুর আনন্দ করতাম আব্বার জন্মদিনে। যদি ভোর ৫টায় জন্মদিনের অনুষ্ঠান শুরু হতো তাহলে পরদিন পর্যন্ত তা চলত। আত্মীয়স্বজন যারা থাকতেন তারা বাসায় থেকে যেতেন।”

শেষ বয়সের দিকে রাজ্জাক একটু ভিন্নভাবে জন্মদিন উদযাপন করতেন বলে জানান সম্রাট। তিনি আরো বলেন, “আব্বা জেগে থাকলে রাত ১২টা ১ মিনিটে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে করে জন্মদিনের প্রহর শুরু করতেন। যদি রাতে ঘুমিয়ে যেতেন তাহলে সকালে সবাই মিলে একদম ভোরে হুড়মুড় করে তাঁর ঘরে ঢুকে শুভেচ্ছা জানাতাম। তিনি তখন অবাক হয়ে যেতেন। খুব খুশি হতেন। এরপর ভালোবাসার কাছের মানুষগুলো বাসায় আসতেন। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তাঁর জন্য সারপ্রাইজ পার্টি আয়োজন করতাম। সেই পার্টিতে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকে থাকতেন।”

মৃত্যুর পর কীভাবে জন্মদিনে পালন করা হয়—জানতে চাইলে সম্রাট বলেন, “আব্বার মৃত্যুর পর জন্মদিন ঘরোয়াভাবে আয়োজন করা হয়। এছাড়া যারা তাঁকে মন থেকে ভালোবাসেন তারা আসেন। আমরা একসঙ্গে সবাই আব্বাকে স্মরণ করি। প্রার্থনা করি। কিছু জায়গায় সাদকা দিই।”

এ সময় তিনি তার বাবাকে ভুলে না যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি মনে করেন, বাংলা চলচ্চিত্রে রাজ্জাকের অবদান অবিস্মরণীয়। সেই অবদানের জন্য তিনি মানুষের মনের মধ্যে থেকে যাবেন অনন্তকাল। 

বাংলা-উর্দু মিলিয়ে প্রায় চার শ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন রাজ্জাক। তিনি প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন। তার প্রথম প্রযোজিত ও পরিচালিত ছবিটির নাম ‘অনন্ত প্রেম’। তারপর ‘মৌ চোর’, ‘বদনাম’, ‘অভিযান’, ‘সৎ ভাই’, ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘বাবা কেন চাকর’ ইত্যাদি ছবি নির্মাণ করেন।

রাজ্জাক সর্বমোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। ছবিগুলো হলো—‘কি যে করি’ (১৯৭৬), ‘অশিক্ষিত’ (১৯৭৮), ‘বড় ভাল লোক ছিল’ (১৯৮২), ‘চন্দ্রনাথ’ (১৯৮৪) ও ‘যোগাযোগ’ (১৯৮৮)। এ ছাড়া তিনি ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান।