• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
প্রকাশিত: জুন ১৫, ২০২১, ০৩:২৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৫, ২০২১, ০৪:০০ পিএম

পরীমণির মামলায় গ্রেপ্তার কে এই নাসির?

পরীমণির মামলায় গ্রেপ্তার কে এই নাসির?

চিত্রনায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার নাসির উদ্দিন মাহমুদ নিয়ে এখন প্রশ্ন, কে সেই ব্যক্তি? কী তার পরিচয়? তিনি চলচ্চিত্র জগতের কেউ। কিভাবে তার উত্থান? উত্তরার ১ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তারের পর গাড়িতে তোলার সময় নাসির সাংবাদিকদের কাছে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।

ডেভেলপার ব্যবসায়ী

নাসির উদ্দিন মাহমুদ চার দশক ধরে ডেভেলপার ব্যবসায় যুক্ত রয়েছেন। ঢাকা বোট ক্লাবের সদস্য বলে জানা গেছে। ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে উত্তরা ক্লাবের সভাপতি এবং লায়ন ক্লাবের ঢাকা জোনের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। নাসির বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) সাবেক সদস্য। 

পড়াশোনা

নাসির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সয়েল, ওয়াটার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। কুঞ্জ ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যানের পদেও আছেন তিনি।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঠিকাদারি 

নাসির উদ্দিন মাহমুদ গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর (ইইডি), রাজউক, রেলওয়েসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদারি কাজ করেছেন। 

রাজনৈতিক পরিচয়

ছাত্রজীবনে নাসির ছাত্রদল করতেন। পরে তিনি জাতীয় পার্টিতে (জাপা) যোগ দেন। গত ডিসেম্বরে জাপার নবম কাউন্সিলে প্রেসিডিয়াম সদস্যের পদ পান তিনি।

ওইদিন রাতে যা হয়েছিল পরীমণির সঙ্গে

জীবনের ভয়াবহ এক অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হয়েছেন পরীমণি। রোববার (১৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জানালেন, তাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশের সাহায্য চেয়ে তিনি পাননি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য প্রার্থনা করেন। যদিও ফেসবুক পোস্টে ভয়ে নির্যাতনকারী ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেননি এই জনপ্রিয় অভিনেত্রী।

এরপর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় তার পোস্ট। পরিস্থিতি বিবেচনায় ওই রাতেই অঘোষিত এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন পরীমণি। সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে পুরো ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পরীমণি বলেন, “গত বুধবার (৯ জুন) রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও পরীর পোশাক ডিজাইনার জিমির সঙ্গে বাইরে বের হয়েছিলেন। রাত ১২টার দিকে অমি তাদের নিয়ে ঢাকা বোট ক্লাবে যাই। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে পরীর পরিচয় করে দেন অমি। পরে অমি সেখানে থাকা নাসির উদ্দিন মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির কাছে নিয়ে যায়। সে সময় তিনি নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টা করেন।”

পরীমণি বলেন, “অমি একজন ব্যবসায়ী এবং তার কস্টিউম ডিজাইনার জেমির স্কুল বন্ধু। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। আমি বলতে চাই, কিন্তু বলতে পারছি না। আমার বলতে ইচ্ছা করছে অনেক। আমি চার দিন ধরে পাগল হয়ে গেছি। আমার জায়গায় থাকলে আপনারা কথা বলতে পারতেন না।”

ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন পরীমণি। সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তার অভিযোগ রেকর্ড করেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ সময় পুলিশের সাহায্যে পরীমণি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন এ অভিনেত্রী। এ সময় একাধিকবার কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে তাকে। কথা বলতে গিয়ে বারবার থেমে যাচ্ছিলেন পরীমণি।

সবশেষ পরীমণি বলেন, “আমি সুইসাইড করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মরে যাই, বুঝবেন মেরে ফেলা হয়েছে। আমি সুইসাইড করতে পারি না, সুইসাইড করব না। আমি আমার বিচার নিয়ে মরব। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। আমি অন্যায়ের বিচার চাই।”