• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০১৯, ০৬:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১০, ২০১৯, ০৬:৫২ পিএম

জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতার অভাব : টিআইবি

জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের প্রকল্প বাস্তবায়নে দক্ষতার অভাব : টিআইবি
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান - ছবি : জাগরণ

উন্নয়ন প্রকল্পের তুলনায় বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বাস্তবায়িত বা বাস্তবায়নরত প্রকল্পগুলো আর্থিক ব্যবস্থাপনা স্বচ্ছ হলেও সম্পাদিত কাজের মান দুর্বল। এর কারণ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বাস্তবায়িত বা বাস্তবায়নরত প্রকল্পগুলোর সমন্বয়, পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাব রয়েছে। ‘জলবায়ু ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য নিরূপণ: কোনটি অধিক দক্ষ, কার্যকর ও স্বচ্ছ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে বুধবার (১০ জুলাই) টিআইবির ধানমণ্ডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। 

এসব তথ্য দিয়ে সংস্থাটি জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে প্রকল্প অধিকতর কার্যকর ও ফলপ্রসূ করতে এডিপির কর্মপদ্ধতি অনুসরণের সুপারিশ করেছে। এজন্য এডিপিতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গৃহীত কার্যক্রমসমূহ সুনির্দিষ্ট করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের এবং জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন ইউনিটের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার এম জাকির হোসাইন খান। টিআইবির ফেলোশিপের আওতায় গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রণয়ন ও উপস্থাপন করেন এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) পরিচালক ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. একে এনামুল হক এবং এসিডির এশীয় ফেলো ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইশতিয়াক বারি।

সংস্থাটি জানিয়েছে তাদের গবেষণার আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ও জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে গৃহীত বা বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর প্রভাব পর্যালোচনা করতে গিয়ে প্রধানত অর্থনৈতিক, দারিদ্র্য বিমোচন, সামাজিক উন্নয়ন, জলবায়ু সহিষ্ণুতায় সক্ষমতা তৈরি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা এই কয়েকটি ক্ষেত্রে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।  

এতে বলা হয়, গবেষণায় অংশগ্রহণকারী তথ্যদাতারা মনে করেন, উপকারভোগী জনগোষ্ঠীর প্রাপ্ত সুবিধা বিবেচনায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে গৃহীত ও বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বাস্তবায়িত বা বাস্তবায়নরত প্রকল্পগুলোর তুলনায় অধিকতর কার্যকর এবং অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে ব্যবস্থাপনা করা হয়। এছাড়া অন্যান্য ডিএসি মানদণ্ড যেমন, উপকারভোগী জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনের সঙ্গে প্রকল্পের কর্মকাণ্ডের সংগতি, নিদিষ্ট সময়ে প্রকল্প কাজ শেষ হওয়া ও টেকসই ইত্যাদি বিবেচনায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বাস্তবায়িত বা বাস্তবায়নরত প্রকল্পগুলোর মধ্যে তেমন কোনো ভিন্নতা পাওয়া যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদান করে বলা হয়, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বাস্তবায়নরত বা পরিকল্পনাধীন নতুন প্রকল্পগুলো যদি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন ও তদারকি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, তবে তা অধিকতর কার্যকর হতে পারে। অন্যদিকে এডিপির মধ্যেও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সংশ্লিষ্ট অনেক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এক্ষেত্রে যদি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গৃহীত কার্যক্রমসমূহ সুনির্দিষ্ট এবং পৃথক করা সম্ভব হয় তাহলে আন্তর্জাতিক জলবায়ু তহবিলসমূহে বাংলাদেশ আরও অধিকতর অভিগম্যতা অর্জনে সক্ষম হবে।

এ ব্যাপারে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশসমূহের অঙ্গীকারের তুলনায় বাংলাদেশসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত দেশে জলবায়ু অর্থ প্রবাহ এখনও পর্যন্ত খুবই নগন্য। সরকারের প্রাক্কলন অনুযায়ী জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি বছর যেখানে ২.২ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন, তার বিপরীতে এখনও পর্যন্ত গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড থেকে মাত্র ১১৩ মিলিয়ন ডলারের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার বাস্তবায়নকারী প্রধান কর্তৃত্বও বিদেশি সংস্থার হাতে। 

তিনি আরও বলেন, এ গবেষণায় যে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উত্থাপিত হল, তা হচ্ছে- উভয় ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিশেষায়িত উপাদানগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা এবং তার ওপর ভিত্তি করে সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, দেশি বিদেশী উভয় সূত্রে বাজেট বরাদ্দ, পরিমাপযোগ্য বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও নিরীক্ষা নিশ্চিতের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ও কার্যকরতা বৃদ্ধি করা।

টিএস/ এফসি

আরও পড়ুন